ব্যাংকে টাকা রাখলে কীভাবে সুদ হিসাব করা হয়
Published: 29th, October 2025 GMT
ব্যাংকে টাকা জমা রাখলে সুদ বা মুনাফা পাওয়া যায়। আবার ব্যাংকিং ব্যবস্থায় নানা ধরনের সুদ আছে। যেমন সরল সুদ, চক্রবৃদ্ধি সুদ, নমিনাল সুদ, কার্যকর সুদ। এসব সুদ সম্পর্কে জানা না থাকায় গ্রাহকেরা ভোগান্তিতে পড়েন।
জানা যাক, কোনটি কী ধরনের সুদ; কীভাবে সুদের হিসাব হয়। কিংবা সুদ না বলে মুনাফা কেন বলা হয়।
সুদহারের সংজ্ঞা
ব্যাংকে টাকা রাখলে নির্দিষ্ট সময় পর আপনি মূল টাকার সঙ্গে অতিরিক্ত কিছু টাকা পান। এই অতিরিক্ত টাকাটাই সুদ। একে টাকার ব্যবহারের মূল্যও বলা যায়। তবে সুদ গণনার পদ্ধতি সব সময় একই হয় না। সাধারণত দুইভাবে সুদ হিসাব করা হয়—সরল সুদ ও চক্রবৃদ্ধি সুদ। কোনো কোনো ব্যাংক সুদের পরিবর্তে মুনাফা বলে।
সরল সুদ কী
এখানে সুদ শুধু মূল টাকার ওপর হিসাব করা হয়। সময় যত বাড়ে, সুদও তত বাড়ে, কিন্তু হিসাবের ধরন অপরিবর্তিত থাকে।
একটি উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে। ধরুন আপনি ১০ হাজার টাকা ব্যাংকে রাখলেন এবং বছরে সুদের হার ১০ শতাংশ। এক বছরে সুদ হবে ১ হাজার টাকা। দুই বছরে তা হবে ২ হাজার টাকা। কারণ, প্রতিবছর একই মূল টাকা (১০ হাজার টাকা) ভিত্তি ধরে সুদ গণনা হয়।
চক্রবৃদ্ধি সুদ কী
এ ক্ষেত্রে প্রথমে বা প্রথম বছরে মূল টাকার ওপর সুদ হয়। তারপর সেই সুদ মূল টাকার সঙ্গে যোগ হয়ে নতুন মূল টাকা তৈরি করে। পরবর্তী সময়ে সুদ হিসাব করা হয় সেই নতুন মূলের ওপর। এ কারণে সময় যত বাড়ে, সুদও দ্রুত বাড়ে।
এ ক্ষেত্রে একটি উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে। প্রথম বছর শেষে ১০ হাজার টাকার ওপর সুদ হলো ১ হাজার টাকা।
দ্বিতীয় বছরে সুদ হিসাব হবে ১১ হাজার টাকার ওপর। তাই দ্বিতীয় বছরের সুদ হবে আগের বছরের তুলনায় একটু বেশি।
ব্যাংকে চক্রবৃদ্ধি সুদ কেন
গ্রাহকদের লাভবান হয় চক্রবৃদ্ধি সুদে। আবার ব্যাংকও দীর্ঘ সময় ধরে আমানত ধরে রাখতে পারে। ব্যাংকে চক্রবৃদ্ধি সুদ কেন বেশি ব্যবহার করা হয়, কিছু কারণ আছে।
১.
২. ব্যাংকের হিসাবব্যবস্থা নিয়মমাফিক হয়।
৩. মাসিক, ত্রৈমাসিক বা বার্ষিক ভিত্তিতে সুদ যোগ করা যায়।
অনেক সঞ্চয় স্কিম, ডিপিএস বা মেয়াদি আমানতে সুদ সাধারণত চক্রবৃদ্ধি ধরেই হিসাব করা হয়।
নমিনাল ও কার্যকর সুদ কী
ব্যাংক যখন সুদের হার ঘোষণা করে, সেটাকে বলা হয় নমিনাল সুদ। এর মধ্যে চক্রবৃদ্ধির প্রভাব ধরা থাকে না।
অন্যদিকে কার্যকর সুদ হলো শেষ পর্যন্ত আপনি আসলে কত পাচ্ছেন। এতে চক্রবৃদ্ধির প্রভাব যুক্ত থাকে।
চক্রবৃদ্ধি যত ঘন ঘন হবে, কার্যকর সুদের হার তত বেশি হবে।
সুদের পরিবর্তে মুনাফা কেন
ইসলামি ধারার ব্যাংকগুলো সুদ শব্দটি ব্যবহার করে না। ইসলামি ধারার ব্যাংকে টাকা রাখলে তাতে মুনাফা দেওয়া হয়। ধারণাটি এমন, সেখানে গ্রাহক ব্যাংকের ব্যবসায় অংশগ্রহণ করেন এবং ব্যবসার মুনাফা অনুসারে অংশ পান। তবে ফলাফলগত দিক থেকে, গ্রাহকের হাতে আসে মূল টাকার চেয়ে বেশি।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ক র যকর স দ ট ক র ওপর হ স ব কর ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
কনকনে শীতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হাফ ম্যারাথনে ৩৫০ জন
কনকনে শীত নিয়ে এসেছে হিমেল হাওয়া। ঘরের বাইরে বেরোলেই সেই হাওয়া শরীরে কাঁপন ধরায়। এমন আবহাওয়ার মধ্যে আজ শনিবার ভোরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের তিতাস নদীর প্রথম সেতু এলাকায় জড়ো হন বিভিন্ন জেলার ৩৫০ দৌড়বিদ। সেখানে তরুণ-তরুণীদের সঙ্গে ছিলেন বয়োজ্যেষ্ঠ ও শিশুরাও। তবে উচ্ছ্বাস প্রকাশে যেন কেউ কারও থেকে কম নয়। হাফ ম্যারাথনে অংশ নিতেই তাঁদের এই জমায়েত।
আজ সকালে এই হাফ ম্যারাথনের আয়োজন করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রানার্স কমিউনিটি (বিআরসি)। আয়োজকেরা জানান, চার পর্যায়ের দূরত্বে এই হাফ ম্যারাথন দৌড় হয়। এর মধ্যে ছিল ২ কিলোমিটার, ৫ কিলোমিটার, ১০ কিলোমিটার ও ২১ কিলোমিটার।
আয়োজক, অংশগ্রহণকারী ও স্থানীয় একাধিক বাসিন্দার সূত্রে জানা গেছে, সূর্য ওঠার আগেই ভোর পাঁচটা থেকে সাড়ে পাঁচটার মধ্যে দৌড়বিদেরা জেলা শহরের তিতাস নদীর প্রথম সেতুর ওপর জড়ো হতে শুরু করেন। সকাল ৬টায় প্রথমে ২১ কিলোমিটার ক্যাটাগরিতে অংশগ্রহণকারীরা সেখান থেকে গন্তব্যের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন। এরপর পর্যায়ক্রমে ৫ ও ১০ কিলোমিটারের দৌড়বিদেরা রওনা দেন। সর্বশেষ সকাল ৭টায় শিশুদের দুই কিলোমিটারের দৌড় শুরু হয়।
২১ কিলোমিটার দৌড়ে অংশ নেন ৬৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৬৪ জন ও নারী একজন। ১০ কিলোমিটারে অংশগ্রহণ করেন ১৬৮ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১৬৬ জন ও নারী দুজন। ৫ কিলোমিটারে অংশ নেন ৭৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৬৪ জন ও নারী ১০ জন। ২ কিলোমিটার দৌড়ে ৪৩ জন শিশু অংশ নেয়।
দৌড় প্রতিযোগিতায় বিভিন্ন বয়সী দৌড়বিদের পাশাপাশি ভারত, জাপান, নেপাল ও ডেনমার্কের চারজন অংশ নেন। জেলা শহরের তিতাস নদীর ওপর নির্মিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর ও বিজয়নগর উপজেলার সংযোগ সড়ক কালীবাড়ি মোড় থেকে বিজয়নগরের নূরপুর জিসি সড়ক (সিমনা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া) পথে দৌড়বিদেরা ছড়িয়ে পড়েন। নির্দেশিত পথ ধরে প্রত্যেকে নিজের নির্ধারিত দূরত্ব অনুযায়ী দৌড় সম্পন্ন করেন।
অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালের হৃদ্রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মুহাম্মদ আবদুল মতিন বলেন, ‘১০ কিলোমিটার দৌড়ে অংশ নিয়েছি। ভালো লাগছে। হৃদ্রোগ প্রতিরোধে নিয়মিত হাঁটা ও দৌড়ের বিকল্প নেই।’
দৌড় শেষের ফিনিশিং লাইনে পৌঁছান এক দৌড়বিদ