জুলাই সনদ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত তরুণদের পলিসি ডায়ালগ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়ার পর অনুষ্ঠানটি বর্জন করেছেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা। এই ডায়ালগের আয়োজক অধ্যাপক মুহাম্মদ আইনুল ইসলামকে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসর অভিযোগ তুলে তাঁরা এ অনুষ্ঠান বর্জন করেন।

আজ বুধবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ভবনের গণতন্ত্র চর্চা কেন্দ্র মিলনায়তনে ‘ইয়ুথ পলিসি ডায়ালগ অন দ্য জুলাই চার্টার’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে এ ঘটনা ঘটে। তবে অধ্যাপক মুহাম্মদ আইনুল তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি মনে করেন, ছাত্র প্রতিনিধিরা কারও দ্বারা বিভ্রান্ত হয়েছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘গণতন্ত্র চর্চা কেন্দ্র’ নামের গবেষণাকেন্দ্র এই পলিসি ডায়ালগের আয়োজন করে। অধ্যাপক মুহাম্মদ আইনুল ইসলাম এই কেন্দ্রের পরিচালক এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক। তিনি অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করছিলেন।

এ অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (চলতি দায়িত্ব) অধ্যাপক সায়মা হক বিদিশা, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক তৈয়েবুর রহমান, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস ও দর্শন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন। নেদারল্যান্ডসের আইডিয়া ইন্টারন্যাশনালের প্রতিনিধি সুমিত বিসারিয়া মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

এ ছাড়া ছাত্র সংসদের প্রতিনিধি হিসেবে ডাকসুর জিএস এস এম ফরহাদ, জাকসুর জিএস মাজহারুল ইসলাম, রাকসুর জিএস সালাউদ্দিন আম্মার ও এজিএস এস এম সালমান সাব্বির, চাকসুর জিএস সাঈদ বিন হাবিব এবং আইন ও মানবাধিকার সম্পাদক ফজলে রাব্বী তাওহীদও বক্তব্য দেন। এতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতাধিক শিক্ষার্থীও উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে ডাকসুর জিএস এস এম ফরহাদ সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে মাইক চান। পরে তাঁকে মাইক দেওয়া হলে তিনি অধ্যাপক মুহাম্মদ আইনুল ইসলাম অতীতে বিভিন্ন সময় ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন উল্লেখ করে বক্তব্য দেন। বক্তব্য শেষ করে তিনি উপস্থিত সব ছাত্র সংসদ প্রতিনিধিকে নিয়ে অনুষ্ঠান বর্জন করে বেরিয়ে যান।

বক্তব্যে সবার উদ্দেশে ডাকসুর জিএস এস এম ফরহাদ বলেন, ‘আজকের অনুষ্ঠানটি জুলাই সনদকে উৎসাহিত করতে আয়োজন করা হয়েছে। আশা করি, এই আয়োজনে যারা অংশ নেবে তারা সবাই জুলাইয়ের অংশ হবে। কিন্তু জুলাইয়ের বিপক্ষে থাকা কোনো শিক্ষক যদি এই আয়োজনে থাকেন, তাহলে সেটি প্রত্যাশিত নয়। এখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক আইনুল ইসলাম উপস্থিত আছেন, যিনি অতীতে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। আমাদের কাছে এ-সংক্রান্ত তথ্যপ্রমাণ আছে। যেটি আমাদের জন্য লজ্জার। এ জন্য সব ছাত্র সংসদের প্রতিনিধিরা একযোগে আজকের এ আয়োজন বয়কট করছি।’

বর্জনের ঘোষণা দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত নওশীন আনজুম নামের এক শিক্ষার্থী এস এম ফরহাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা জুলাইয়ে অংশ নিয়েছি। ওই সময়ে আইনুল স্যার আমাদের নানাভাবে সহযোগিতা করেছেন।’

ওই শিক্ষার্থীর জবাবে এস এম ফরহাদ বলেন, এর আগে আওয়ামী লীগ যখন শিক্ষার্থীদের বিপক্ষে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে, সেখানে ওনার স্বাক্ষর ছিল। এই কথা বলে তিনি সব বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ প্রতিনিধিসহ মিলনায়তন থেকে বেরিয়ে যান।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক মুহাম্মদ আইনুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি কখনোই ফ্যাসিবাদের পক্ষে অবস্থান নিইনি। এমনকি দলে আমার কোনো পদও ছিল না। এটা কেউ প্রমাণ করতে পারবে না। আমার ধারণা, তাঁরা কারও দ্বারা বিভ্রান্ত হয়েছেন। নির্বাচিত ছাত্র প্রতিনিধিদের থেকে এ ধরনের আচরণ প্রত্যাশিত নয়।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: জ এস এস এম অন ষ ঠ ন উপস থ ত আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

ওসমান হাদীর উপর গুলির ঘটনায় মাসুদুজ্জামানের তীব্র নিন্দা 

ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী শরীফ ওসমান হাদি এবং চট্টগ্রাম-৮ আসনে বিএনপির প্রার্থী এরশাদ উল্লাকে গণসংযোগকালে হিংস্র সন্ত্রাসীদের কর্তৃক গুলিবিদ্ধ করার নৃশংস ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের বিএনপি মনোনিত প্রার্থী, বিশিষ্ট সমাজসেবী, ও ক্রীড়ানুরাগী মাসুদুজ্জামান। 

শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) বিএনপি নারায়ণগঞ্জ মহানগর আয়োজিত এক প্রতিবাদ সভা ও মিছিলের মাধ্যমে নেতৃবৃন্দ এ ঘটনার নিরপেক্ষ ও দ্রুত তদন্তের দাবি জানান এবং প্রকৃত দুষ্কৃতিকারীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার আহ্বান জানান। 

সভায় বক্তারা বলেন, নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা এবং বিরোধী মতকে দমন করতেই পরিকল্পিতভাবে এ ধরনের সহিংসতা চালানো হচ্ছে, যা গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের পরিপন্থী।

প্রতিবাদ সভায় মাসুদুজ্জামান মাসুদ বলেন, “প্রত্যেক দলের রাজনীতি আলাদা, মত ও পথ ভিন্ন হতে পারে। কিন্তু দিন শেষে আমরা সবাই একই দেশের নাগরিক। ভিন্নতা মেনে নিয়েই দেশ ও মানুষের স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ থাকা গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। 

অথচ একটি দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রকারী চক্র নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশকে অস্থিতিশীল করার লক্ষ্যে একের পর এক হামলা ও অন্তর্ঘাতমূলক তৎপরতায় লিপ্ত হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী ইনকিলাব মঞ্চের শরীফ ওসমান হাদি এবং চট্টগ্রাম-৮ আসনের বিএনপির প্রার্থী এরশাদ উল্লাহ’র ওপর সংঘটিত ন্যাক্কারজনক হামলা সেই গভীর ষড়যন্ত্রেরই বহিঃপ্রকাশ। আমরা এই বর্বর হামলার তীব্র নিন্দা জানাই এবং অবিলম্বে হামলার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবি জানাচ্ছি।” 

একইসাথে তিনি এসব ষড়যন্ত্রকারীর বিরুদ্ধে সর্বস্তরে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান এবং বলেন, “নির্বাচন বানচাল করে দেশকে অস্থিতিশীল করার সকল ষড়যন্ত্র বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করবে।”

প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এড.জাকির হোসেন, মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এটিএম কামাল, মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম সজল, সদস্য সচিব শাহেদ আহমেদ, মহানগর কৃষক দলের সভাপতি এনামুল খন্দকার স্বপন, সাবেক কাউন্সিলর শওকত হাসেম শকু। এছাড়াও ওয়ার্ড বিএনপি, বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীসহ সর্বস্তরের স্থানীয় জনগণ এই সময় উপস্থিত ছিলেন।

সভা শেষে নেতৃবৃন্দ শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল বের করেন এবং দেশের গণতন্ত্র, নির্বাচন ও জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সকল ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন জোরদার করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ওসমান হাদীর উপর গুলির ঘটনায় মাসুদুজ্জামানের তীব্র নিন্দা 
  • বিজয় ও বিপর্যয়
  • তারেক রহমান দেশে এলে রাজনীতিতে নতুন জোয়ার সৃষ্টি হবে: আমীর খসরু
  • ২৫ তারিখে দেশের রাজনীতিতে নতুন জোয়ার সৃষ্টি হবে: আমীর খসরু
  • ষড়যন্ত্র রুখতে পারে গণতন্ত্রের প্র্যাকটিস: তারেক
  • মওলানা ভাসানী মজলুমদের পক্ষে ছিলেন, কখনো আপোষ করেননি: টুকু 
  • একটি দল ভোটের প্রয়োজনে আ.লীগের নাম মুখে নেয় না: সালাউদ্দিন আহমেদ
  • খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় কুতুবপুর ইউনিয়ন বিএনপির দোয়া
  • তফসিল ঘোষণার মধ্য দিয়ে নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করলো বাংলাদেশ: ফখরুল
  • নির্বাচন যত সহজ ভাবা হচ্ছে, তত সহজ হবে না: তারেক রহমান