ইউটিউবারদের অপকর্মের দায় এখন সাংবাদিকদের নিতে হচ্ছে: বিজেসি সভাপতি রেজওয়ানুল
Published: 29th, October 2025 GMT
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্রসারের এই সময়ে সাংবাদিক ও ইউটিউবারদের মধ্যে ভেদ টানা সবার জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মনে করেন ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টারের (বিজেসি) সভাপতি ও মাছরাঙা টিভির বার্তা সম্পাদক রেজওয়ানুল হক রাজা।
রেজওয়ানুল হক বলেছেন, এখন ইউটিউবার এবং সাংবাদিক দুটি একাকার হয়ে গেছে। যে কারণে ইউটিউবারদের দায়দায়িত্ব ও তাঁদের অপকর্মের দায় সাংবাদিকদের নিতে হচ্ছে।
আজ বুধবার ‘বাংলাদেশের গণমাধ্যমে সংস্কার: সুপারিশ, বাস্তবতা ও ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে এ কথা বলেন রেজওয়ানুল হক। রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলোর কার্যালয়ে এ বৈঠকের আয়োজন করে প্রথম আলো।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপসাংবাদিকতা ঠেকাতে সাংবাদিকদের নিবন্ধন এবং ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা ঠিক করে দেওয়ার পক্ষে মত জানান রেজওয়ানুল হক, যে সুপারিশ গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে রয়েছে।
সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে উদাসীনতার দিকটি দেখিয়ে রেজওয়ানুল হক বলেন, ‘আপনারা যদি গণমাধ্যমকে “ফোর্থ স্টেট” মনে করেন, তাহলে ফোর্থ স্টেটের ব্যাপারে যে কমিশনের রিপোর্ট, সেটা কেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশন বিবেচনা করল না?’
গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সব সুপারিশে একমত নন জানিয়ে রেজওয়ানুল হক বলেন, ‘কমিশনের পুরো রিপোর্টকে আমি ভালো বলব না। কিন্তু এর ভালোগুলো তো বাস্তবায়ন করা যেত। গত সরকারেরকে ফ্যাসিস্টে রূপান্তরিত করার জন্য সাংবাদিকদের যে দায় ছিল, সেই দায়ের শাস্তি হিসেবে ২৫০–এর বেশি সাংবাদিকের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দেওয়া হয়েছে এবং তাঁদের মধ্যে অনেকে বিনা বিচারে জেলে আছেন। ১৬০ বা ১৬৫ জনের অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড বাতিল হলো। সাংবাদিকদের একটি দলের যে অপরাধ ছিল, তা এই শাস্তি দিয়ে দূর হবে না; বরং সিস্টেমটায় পরিবর্তন আনার প্রয়োজন ছিল।’
সাংবাদিকদের রাজনৈতিক বিভাজন নিয়ে রেজওয়ানুল হক বলেন, ‘বিএনপির আমলের আগপর্যন্ত ইউনিয়ন ছিল অভিন্ন। তারপর আমরা সাংবাদিকেরা বিভক্ত হয়ে গেলাম। শুরু হলো একটি বিএনপি-জামায়াতপন্থী ধারা, একটি আওয়ামীপন্থী ধারা, আরেকটি বামপন্থী ধারা। সেই যে বিভক্তির শুরু হলো, সেই বিভক্তি বাড়তে বাড়তে এখনকার অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে। তারপরও কিছুদিন আগপর্যন্ত প্রেসক্লাবে ইউনিয়নের দুটি অফিসই ছিল। ৫ আগস্টের পর একদল বিতাড়িত হয়েছে। সেই ইউনিয়ন অফিসে তালা দেওয়া। আরেক দল ভালোভাবে রয়েছে। ৫ আগস্টের পর আমাদের পরিবর্তনটা তাহলে কী হলো?’
প্রথম আলোর নির্বাহী সম্পাদক সাজ্জাদ শরিফের সঞ্চালনায় এই গোলটেবিল বৈঠকে অংশ নেন গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান কামাল আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ও গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সদস্য গীতি আরা নাসরীন, নিউজপেপার্স ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (নোয়াব) সদস্য এ কে আজাদ, সম্পাদক পরিষদের সভাপতি ও দ্য ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহ্ফুজ আনাম, সম্পাদক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও বণিক বার্তার সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিএনপির মিডিয়া সেলের প্রধান মওদুদ হোসেন আলমগীর (পাভেল), জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের প্রধান মতিউর রহমান আকন্দ, এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব ও মিডিয়া সেলের সম্পাদক মুশফিক উস সালেহীন, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এস এম রেজওয়ান উল আলম, এমআরডিআইয়ের নির্বাহী পরিচালক হাসিবুর রহমান ও গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন সদস্য কামরুন্নেসা হাসান।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
ইউটিউবারদের অপকর্মের দায় এখন সাংবাদিকদের নিতে হচ্ছে: বিজেসি সভাপতি রেজওয়ানুল
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্রসারের এই সময়ে সাংবাদিক ও ইউটিউবারদের মধ্যে ভেদ টানা সবার জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মনে করেন ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টারের (বিজেসি) সভাপতি ও মাছরাঙা টিভির বার্তা সম্পাদক রেজওয়ানুল হক রাজা।
রেজওয়ানুল হক বলেছেন, এখন ইউটিউবার এবং সাংবাদিক দুটি একাকার হয়ে গেছে। যে কারণে ইউটিউবারদের দায়দায়িত্ব ও তাঁদের অপকর্মের দায় সাংবাদিকদের নিতে হচ্ছে।
আজ বুধবার ‘বাংলাদেশের গণমাধ্যমে সংস্কার: সুপারিশ, বাস্তবতা ও ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে এ কথা বলেন রেজওয়ানুল হক। রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলোর কার্যালয়ে এ বৈঠকের আয়োজন করে প্রথম আলো।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপসাংবাদিকতা ঠেকাতে সাংবাদিকদের নিবন্ধন এবং ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা ঠিক করে দেওয়ার পক্ষে মত জানান রেজওয়ানুল হক, যে সুপারিশ গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে রয়েছে।
সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে উদাসীনতার দিকটি দেখিয়ে রেজওয়ানুল হক বলেন, ‘আপনারা যদি গণমাধ্যমকে “ফোর্থ স্টেট” মনে করেন, তাহলে ফোর্থ স্টেটের ব্যাপারে যে কমিশনের রিপোর্ট, সেটা কেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশন বিবেচনা করল না?’
গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সব সুপারিশে একমত নন জানিয়ে রেজওয়ানুল হক বলেন, ‘কমিশনের পুরো রিপোর্টকে আমি ভালো বলব না। কিন্তু এর ভালোগুলো তো বাস্তবায়ন করা যেত। গত সরকারেরকে ফ্যাসিস্টে রূপান্তরিত করার জন্য সাংবাদিকদের যে দায় ছিল, সেই দায়ের শাস্তি হিসেবে ২৫০–এর বেশি সাংবাদিকের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দেওয়া হয়েছে এবং তাঁদের মধ্যে অনেকে বিনা বিচারে জেলে আছেন। ১৬০ বা ১৬৫ জনের অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড বাতিল হলো। সাংবাদিকদের একটি দলের যে অপরাধ ছিল, তা এই শাস্তি দিয়ে দূর হবে না; বরং সিস্টেমটায় পরিবর্তন আনার প্রয়োজন ছিল।’
সাংবাদিকদের রাজনৈতিক বিভাজন নিয়ে রেজওয়ানুল হক বলেন, ‘বিএনপির আমলের আগপর্যন্ত ইউনিয়ন ছিল অভিন্ন। তারপর আমরা সাংবাদিকেরা বিভক্ত হয়ে গেলাম। শুরু হলো একটি বিএনপি-জামায়াতপন্থী ধারা, একটি আওয়ামীপন্থী ধারা, আরেকটি বামপন্থী ধারা। সেই যে বিভক্তির শুরু হলো, সেই বিভক্তি বাড়তে বাড়তে এখনকার অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে। তারপরও কিছুদিন আগপর্যন্ত প্রেসক্লাবে ইউনিয়নের দুটি অফিসই ছিল। ৫ আগস্টের পর একদল বিতাড়িত হয়েছে। সেই ইউনিয়ন অফিসে তালা দেওয়া। আরেক দল ভালোভাবে রয়েছে। ৫ আগস্টের পর আমাদের পরিবর্তনটা তাহলে কী হলো?’
প্রথম আলোর নির্বাহী সম্পাদক সাজ্জাদ শরিফের সঞ্চালনায় এই গোলটেবিল বৈঠকে অংশ নেন গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান কামাল আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ও গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সদস্য গীতি আরা নাসরীন, নিউজপেপার্স ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (নোয়াব) সদস্য এ কে আজাদ, সম্পাদক পরিষদের সভাপতি ও দ্য ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহ্ফুজ আনাম, সম্পাদক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও বণিক বার্তার সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিএনপির মিডিয়া সেলের প্রধান মওদুদ হোসেন আলমগীর (পাভেল), জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের প্রধান মতিউর রহমান আকন্দ, এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব ও মিডিয়া সেলের সম্পাদক মুশফিক উস সালেহীন, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এস এম রেজওয়ান উল আলম, এমআরডিআইয়ের নির্বাহী পরিচালক হাসিবুর রহমান ও গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন সদস্য কামরুন্নেসা হাসান।