বাংলাদেশে ডিজিটাল ইকোসিস্টেম তৈরি করতে চায় আকিজ রিসোর্স। এরই মধ্যে নিজস্ব ডেটা সেন্টার এবং সফটওয়্যার তৈরির মাধ্যমে তারা গ্রাহক এবং সরবরাহকারীদের নিরবচ্ছিন্নভাবে সংযুক্ত করেছে এবং পয়েন্ট অব সেল সিস্টেম গড়ে তুলেছে। আজ বুধবার রাজধানীর গুলশানের বীর উত্তম মীর শওকত সড়কে অবস্থিত আকিজ হাউসে আয়োজিত ‘প্রচলিত থেকে স্মার্ট: আকিজ রিসোর্স ডিজিটাল রূপান্তরের নেতৃত্ব দিচ্ছে’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

অনুষ্ঠানে আকিজ গ্রুপের সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠান আইবস লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) এস কে মো.

জায়েদ বিন রশিদ বলেন, অটোমেশন শুধু কাজের গতিই বাড়ায় না, এটি মানবসম্পদের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে ভুল হওয়ার সম্ভাবনাও কমায়। বিশেষ করে আর্থিক এবং উৎপাদন খাতে অটোমেশনের বহুমাত্রিক প্রয়োগ উৎপাদনশীলতা কয়েক গুণ বাড়াতে সাহায্য করেছে, যা সরাসরি জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখছে। এমন সব সফটওয়্যার ব্যবহারের সুযোগ তৈরি হয়েছে, যা ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগকে সহজে ডিজিটাল লেনদেন এবং অ্যাকাউন্টিং ব্যবস্থাপনা করতে সাহায্য করছে।

আকিজ ইনফোটেকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জি এম কামরুল হাসান বলেন, ‘দেশের বেসরকারি প্রযুক্তি খাত নিয়ে আমরা কাজ করছি। আমরা এখন আর কেবল সফটওয়্যার বা যন্ত্রাংশ সরবরাহকারী নয়, এখন দেশের সামগ্রিক ডিজিটাল ইকোসিস্টেমের স্থপতি। বিভিন্ন উদ্ভাবনী সমাধান, ডেটা নিরাপত্তা ও অটোমেশনের ওপর গুরুত্বারোপ বাংলাদেশকে একটি প্রকৃত ডিজিটাল অর্থনীতি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছি।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন আকিজ রিসোর্সের চিফ ডিজিটাল ও ইনোভেশন অফিসার মো. ফিরোজ কবির ও আইবস লিমিটেডের চিফ সেলস অফিসার শাহেদ ইকবাল। আকিজ গ্রুপের ডিজিটাল ও স্মার্ট অফিস ম্যানেজমেন্ট ও এন্টারপ্রাইজ টেকনোলজির উল্লেখযোগ্য দিক তুলে ধরেন তাঁরা।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

এক মাস বন্ধ থাকার পর তেল সরবরাহ আজ শুরু

চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় পাইপলাইন প্রকল্প উদ্বোধনের এক মাসের মধ্যেই ধরা পড়েছে তেলের হিসাবে গরমিল, মজুতের জালিয়াতি ও প্রযুক্তিগত ত্রুটি। এ কারণে এক মাসের বেশি সময় ধরে তেল সরবরাহ বন্ধ ছিল। অবশেষে আজ বুধবার ৫০ লাখ লিটার তেল সরবরাহের কথা রয়েছে।

বিপিসির একাধিক সূত্র জানায়, সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি থেকে পাইপলাইনে তেল পাঠানো বন্ধ। সর্বশেষ ১৯ সেপ্টেম্বর পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেড পাঠায় ৩৯ লাখ ৯০ হাজার ৯০৭ লিটার তেল। এর আগে ৪ থেকে ৬ সেপ্টেম্বর মেঘনা পেট্রোলিয়াম পাঠায় ৭০ লাখ লিটার এবং ১২ থেকে ১৪ সেপ্টেম্বর আরও ৭৫ লাখ লিটার। যমুনা অয়েল কোম্পানি ১৫ থেকে ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পাঠায় ১ কোটি ৮ লাখ লিটার ডিজেল।

এক মাসের বেশি সময় তেল সরবরাহ বন্ধের পেছনে মূল কারণ হিসাবে তেল ঘাটতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। নারায়ণগঞ্জের গোদনাইল ও ফতুল্লা ডিপোয় পৌঁছানোর পর পদ্মা ও মেঘনা পেট্রোলিয়ামের অন্তত ৫০ হাজার লিটার তেল কম পাওয়া গেছে। তবে সবচেয়ে বড় ঘাটতি ধরা পড়ে যমুনা অয়েল কোম্পানির ক্ষেত্রে। ফতুল্লা ডিপোয় দুই দফায় মোট ৩ লাখ ৭৫ হাজার লিটার ডিজেল কম পাওয়া গেছে। এসব ঘটনার পর পাইপলাইনে সরবরাহ বন্ধ করা হয়।

কিছু ত্রুটি চিহ্নিত হয়েছে। তেলের হিসাবে গরমিলও পাওয়া গেছে। কয়েকটি তদন্ত কমিটি কাজ করছে। ত্রুটি ঠিক হলে পুরোদমে সরবরাহ শুরু হবে।এ কে এম আজাদুর রহমান, পরিচালক (অপারেশনস), বিপিসি

জানতে চাইলে বিপিসির পরিচালক (অপারেশনস) এ কে এম আজাদুর রহমান বলেন, কিছু ত্রুটি চিহ্নিত হয়েছে। তেলের হিসাবে গরমিলও পাওয়া গেছে। কয়েকটি তদন্ত কমিটি কাজ করছে। ত্রুটি ঠিক হলে পুরোদমে সরবরাহ শুরু হবে।

প্রকল্প-সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, তেলের হিসাবে গরমিল, ট্যাংক মজুতের সক্ষমতা জালিয়াতি ও পরিমাপে ত্রুটি ধরা পড়েছে। এসব কারণে সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছিল। সরবরাহ বন্ধ থাকায় তেল পুরোনো পদ্ধতিতেই—নদী, রেল ও সড়কপথে ঢাকায় আনা হচ্ছে। এতে খরচ বাড়ছে, অপচয় ও চুরির ঝুঁকি ফিরেছে পুরোনো অবস্থায়।

২০১৬ সালে নেওয়া এই প্রকল্পে ব্যয় হয়েছে ৩ হাজার ৬৯৯ কোটি টাকা। ২২ জুন পরীক্ষামূলকভাবে সরবরাহ শুরু হয়। এরপর ১৬ আগস্ট আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে সেনাবাহিনী, কিন্তু এখনো বিপিসি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকল্প বুঝে নেয়নি। অর্থাৎ সম্পূর্ণ হস্তান্তরের আগেই বিপুল ব্যয়ে নির্মিত পাইপলাইন চালু করা হয়। ফলে সরবরাহ শুরু হলে ধরা পড়ে গলদ।

দেশে বছরে গড়ে ৬৫ লাখ টন তেলের চাহিদা। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে সরবরাহ ছিল ৬৮ লাখ টন, যার ৬৩ শতাংশ ডিজেল। পাইপলাইন চালু থাকলে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় বছরে ২৭ লাখ টন বা ৩১৭ কোটি লিটার ডিজেল সরবরাহ করা যাবে।

দেশে বছরে গড়ে ৬৫ লাখ টন তেলের চাহিদা। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে সরবরাহ ছিল ৬৮ লাখ টন, যার ৬৩ শতাংশ ডিজেল। পাইপলাইন চালু থাকলে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় বছরে ২৭ লাখ টন বা ৩১৭ কোটি লিটার ডিজেল সরবরাহ করা যাবে।

বিপিসি সূত্র জানায়, ঢাকা বিভাগেই ব্যবহৃত হয় দেশের ৪০ শতাংশ তেল। এখন পতেঙ্গা থেকে নদীপথে নারায়ণগঞ্জের ডিপো, সেখান থেকে সড়কপথে ঢাকায় পৌঁছায়। মাসে প্রায় ১৫০টি ছোট-বড় জাহাজ লাগে। বছরে পরিবহন বাবদ খরচ হয় ২০০ কোটি টাকার মতো। এই ব্যয় কমাতে, চুরি ও অপচয় ঠেকাতে, এবং পরিবেশবান্ধব জ্বালানি সরবরাহ গড়তে প্রকল্পটি নেওয়া হয়েছিল।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • যুক্তরাষ্ট্র থেকে তেল আমদানি বাড়িয়েছে ভারত, বাণিজ্যঘাটতি নিরসনের চেষ্টা
  • আশুগঞ্জ সার কারখানায় উৎপাদন চালুর দাবিতে শ্রমিক-কর্মচারীদের বিক্ষোভ
  • আশুগঞ্জ সার কারখানায় গ্যাস সংযোগের দাবিতে সমাবেশ
  • এক মাস বন্ধ থাকার পর তেল সরবরাহ আজ শুরু
  • বেসিসের নির্বাচনের খবর নেই, আবার সহায়ক কমিটি গঠন
  • চীনের আধিপত্য মোকাবিলায় এবার যুক্তরাষ্ট্র-জাপান বিরল খনিজ চুক্তি
  • মালির সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ, কারণ জ্বালানিসংকট
  • ‘চোখের দেখায়’ সিলিন্ডারের মান পরীক্ষা