জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি ও আদেশের ওপর নভেম্বরের মধ্যে গণভোট আয়োজনসহ ৫ দফা দাবিতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন, খেলাফত মজলিস, নেজামে ইসলাম পার্টি, খেলাফত আন্দোলনসহ ৮টি দল নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।

কর্মসূচিআর মধ্যে রয়েছে ৩০ অক্টোবর নির্বাচন কমিশনে স্মারকলিপি প্রদান। এর মধ্যে দাবি আদায় না হলে ৩ নভেম্বর দলগুলোর শীর্ষ নেতাদের সংবাদ সম্মেলনে বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে আন্দোলনরত রাজনৈতিক দলসমূহের যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা ইউনুস আহমদ।

সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনরত রাজনৈতিক দলের  নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব অধ্যক্ষ ইউনুছ আহমদ, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড.

আহমদ আবদুল কাদের, সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা সাখাওয়াত হোসাইন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা ইউসুফ আশরাফ, বাংলাদেশ নেজামে ইসলামী পার্টির মহাসচিব মাওলানা মুসা বিন ইজহার, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের নায়েবে আমির মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, জাগপা মুখপাত্র ইঞ্জিনিয়ার রাশেদ প্রধান, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির মহাসচিব নিজামুল হক নাঈম।

লিখিত বক্তব্যে সদ্য ঘোষিত জুলাই সনদ বাস্তবায়ন রুপরেখা নিয়ে বলা হয়, ইতোমধ্যে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন প্রধান উপদেষ্টার নিকট ‘জুলাই সনদ’ বাস্তবায়নের সুপারিশমালা জমা দিয়েছে। গণভোটের বিষয়ে সবাই একমত হয়েছেন। গণভোট ব্যতীত ‘জুলাই জাতীয় সনদ’ আইনগতভাবে টেকসই ভিত্তি পাবে না। আমরা মনে করি, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে, অর্থাৎ নভেম্বর মাসের মধ্যেই গণভোট সম্পন্ন করতে হবে।

লিখিত বক্তব্যে পিআরের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে বলা হয়, কালো টাকার ব্যবহার বন্ধ, ভোটকেন্দ্র দখল, পেশিশক্তির প্রদর্শন ও ভোটের অনিয়ম ও অপতৎপরতা প্রতিরোধ, গুণগতমানসম্পন্ন পার্লামেন্ট এবং দক্ষ আইনপ্রণেতা তৈরি ও প্রতিটি ভোটের সঠিক মূল্যায়নের জন্য পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন প্রয়োজন। বাংলাদেশের অধিকাংশ রাজনৈতিক দল, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, কলামিস্ট, লেখক, গবেষক, শিক্ষাবিদ এবং নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসল ম গণভ ট

এছাড়াও পড়ুন:

‘রেফারিকে আমরা কখনো গোল দিতে দেখিনি, কিন্তু এখন মনে হচ্ছে...’

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশে জুলাই সনদের পূর্ণ প্রতিফলন নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেছেন, জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় যে সনদ স্বাক্ষরিত হয়েছে, কমিশনের দেওয়া ৯৪ পৃষ্ঠার দলিলে (সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ) তার হুবহু প্রতিফলন নেই।

আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর বনানীর একটি হোটেলে বিএনপি আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে সালাহউদ্দিন আহমদ এসব কথা বলেন। বৈঠকের শিরোনাম—‘ফ্রম রুল বাই পাওয়ার টু রুল অব ল: ট্রানজিশন টু অ্যা ডেমোক্রেটিক বাংলাদেশ’।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, গতকাল জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে সরকারকে সুপারিশ দেওয়া করা হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে তাঁরা কিছু সত্য আবিষ্কার করতে পেরেছেন। এত দিন তাঁরা মনে করতেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন রেফারির ভূমিকা পালন করছে। কিন্তু তারা যে সুপারিশ দিয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, তার মধ্য বস্তুতে একজন দস্তখতকারী প্রধান উপদেষ্টাও আছেন, যিনি কমিশনের সভাপতি। ফলে এটি সরকারের পক্ষ থেকেও একধরনের অনুমোদন বা সমর্থন।

সুপারিশে কিছু দলের প্রস্তাব ও ঐকমত্য কমিশনের চিন্তা-ভাবনা জাতির ওপর জোরপূর্বক চাপিয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টা লক্ষ্য করেছেন বলে মন্তব্য করেন সালাহউদ্দিন আহমদ। বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘রেফারিকে আমরা কখনো গোল দিতে দেখিনি। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে, ঐকমত্য কমিশন, সরকার এবং আরও দু-তিনটি রাজনৈতিক দল একই পক্ষ। আমি বিপক্ষেই খেলছিলাম মনে হয়। সেই হিসেবে জাতির পক্ষের দায়িত্ব পালন করার চেষ্টা করেছি।’

‘জুলাই সনদের হুবহু প্রতিফলন নেই’

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, যে দলিলটি প্রকাশিত হয়েছে, সেটি ৯৪ পৃষ্ঠার। সেখানে ঐকমত্য কমিশনে যেভাবে ঐকমত্যে পৌঁছানো হয়েছিল, কিংবা যে দলিলটি ১৭ অক্টোবর সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে স্বাক্ষরিত হয়েছে, সেই দলিলটি এখানে হুবহু নেই। শুধু আছে ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাব, রাজনৈতিক দলগুলোর সুপারিশ। কিন্তু কীভাবে ঐকমত্যে পৌঁছানো হলো, নোট অব ডিসেন্ট কোথায় আছে, তার কোনো উল্লেখ নেই।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, সংবিধান সংশোধনের ৪৮টি দফা প্রস্তাব তফসিল আকারে সংযুক্ত করে বলা হয়েছে, এই দফাগুলোর ওপর গণভোট হবে। অথচ এই বিষয়টি নিয়ে তাঁদের সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়নি।

‘অনৈক্য সৃষ্টি করবে’

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের উদ্দেশ্য ছিল ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করা। কিন্তু তারা এখন এমন কিছু প্রস্তাব দিয়েছে, যা জাতিকে বিভক্ত করবে, অনৈক্য সৃষ্টি করবে। এর ভিত্তিতে কোনো ঐকমত্য হবে না। তারা কী অর্জন করতে চায়, আমরা জানি না।’

নির্বাচনসংক্রান্ত আইন গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে বা আরপিওতে উদ্দেশ্যমূলকভাবে কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে বলে মন্তব্য করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য। তিনি বলেন, আরপিওতে উদ্দেশ্যমূলকভাবে কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। আগে জোটভুক্ত কোনো রাজনৈতিক দল চাইলে নিজস্ব প্রতীক বা জোটের প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিতে পারত। এখন অগণতান্ত্রিকভাবে বলা হয়েছে, জোটভুক্ত হলেও নিজস্ব প্রতীকে নির্বাচন করতে হবে। আরেকটি রাজনৈতিক দল তাতে সমর্থন জানিয়েছে।

‘অন্তর্বর্তী সরকারকে নিরপেক্ষ থাকতে হবে’

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমরা চাই, অন্তর্বর্তী সরকার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূমিকায় নিরপেক্ষভাবে আচরণ করুক। যাতে জাতি আশ্বস্ত হতে পারে এবং ঐক্য বজায় থাকে। কিন্তু ঐকমত্য কমিশন ও সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ আমাদের হতাশ করেছে।’

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এবং সরকারের কিছু পদক্ষেপে আমরা আজ গভীর হতাশা প্রকাশ করছি। এগুলোর মাধ্যমে জাতিতে ঐক্যের বদলে বিভাজন তৈরি হচ্ছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৫ দাবিতে ৮ দলের নতুন কর্মসূচি
  • অনিবন্ধিত মুঠোফোনের ব্যবহার বন্ধে ১৬ ডিসেম্বর চালু হচ্ছে এনইআইআর
  • ‘রেফারিকে আমরা কখনো গোল দিতে দেখিনি, কিন্তু এখন মনে হচ্ছে...’
  • ইতিবাচক মনে করছে এনসিপি
  • প্রতীক নিয়ে নির্বাচনের বিধান আগের মতোই থাকা উচিত: সালাহউদ্দিন আহমদ
  • সিরাজগঞ্জে কারাগারে আ.লীগ নেতা বাচ্চুর মৃত্যু 
  • জুলাই সনদ বাস্তবায়নে অবিলম্বে গণভোট দিতে হবে- খেলাফত মজলিস
  • একাধিক প্রার্থী বাছাই করে রাখলেও ঐক্যে জোর দিচ্ছে বিএনপি: সালাহউদ্দিন
  • এক আসনে একাধিক প্রার্থী বাছাই করে রাখছে বিএনপি