রাশিয়া ৫ বছরের মধ্যে হামলা চালাতে পারে, ন্যাটোপ্রধানের সতর্কবার্তা
Published: 12th, December 2025 GMT
পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর মহাসচিব মার্ক রুত্তে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, রাশিয়া আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে ন্যাটোভুক্ত কোনো একটি দেশে হামলা চালাতে পারে।
জার্মানিতে গতকাল বৃহস্পতিবার একটি আয়োজনে বক্তব্য দিতে গিয়ে ন্যাটোপ্রধান বলেন, ‘আমাদের (ন্যাটো) বিরুদ্ধে রাশিয়া এরইমধ্যে গোপন অভিযান বাড়িয়ে দিয়েছে। আমাদের দাদা-দাদি কিংবা প্রপিতামহ যেই মাত্রার যুদ্ধ মোকাবিলা করেছেন, তেমনটার জন্য আমাদেরও প্রস্তুত থাকতে হবে।’
আরও পড়ুনরাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে ট্রাম্পের মন্তব্যে খুশি মস্কো১০ ডিসেম্বর ২০২৫ন্যাটোপ্রধানের পক্ষ থেকে এমন এক সময় এই সতর্কবার্তা দেওয়া হলো যখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যকার যুদ্ধের অবসান ঘটানোর চেষ্টা করছেন। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে এই যুদ্ধ শুরু হয়েছিল।
এদিকে চলতি মাসের শুরুর দিকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছিলেন, ইউরোপের সঙ্গে যুদ্ধে জড়ানোর কোনো পরিকল্পনা তাঁর দেশের নেই। তবে যদি ইউরোপ যুদ্ধ শুরু করতেই চায়, তাহলে রাশিয়া ‘এখণই’ প্রস্তুত রয়েছে।
২০২২ সালে যখন রাশিয়ার প্রায় ২ লাখ সেনা সীমান্ত পেরিয়ে ইউক্রেনের ভেতরে ঢুকে পড়ে; তার আগে আগেও পুতিন একই সুরে কথা বলেছিলেন। তাই পুতিনের এমন কথা ইউরোপীয় নেতাদের আশ্বস্ত করতে পারছে না।
আরও পড়ুনযুক্তরাষ্ট্র নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিলে নির্বাচন আয়োজনে প্রস্তত ইউক্রেন, বললেন জেলেনস্কি১০ ডিসেম্বর ২০২৫পুতিনের অভিযোগ, ইউক্রেনে শান্তি প্রতিষ্ঠায় মার্কিন প্রচেষ্টা বাস্তবায়নে ইউরোপের দেশগুলো বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যুদ্ধের অবসান ঘটাতে মার্কিন শান্তি পরিকল্পনা পরিবর্তনের চেষ্টায় সম্প্রতি ইউক্রেনের ইউরোপীয় মিত্ররা যেই ভূমিকা নিয়েছে, সেটার প্রতি ইঙ্গিত করে পুতিন এ অভিযোগ তুলেছেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প মধ্যস্ততা করলেও শান্তি পরিকল্পনার খসড়া প্রস্তাবগুলো আখেরে রাশিয়ার পক্ষে যাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তাই ইউরোপের নেতারাও খসড়া বদলানোর পক্ষে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির পাশে দাঁড়িয়েছেন।
আরও পড়ুনযুক্তরাষ্ট্র বলছে যুদ্ধ বন্ধের চুক্তির কাছাকাছি পৌঁছানো গেছে, প্রস্তাবে বড় পরিবর্তন আনতে বলছে রাশিয়া ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইউক র ন র প রস ত ইউর প
এছাড়াও পড়ুন:
আদালত চত্বর থেকে দুই জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেওয়ার মামলায় তিন আসামি কারাগারে
ঢাকার আদালত চত্বর থেকে পুলিশের চোখে স্প্রে করে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেওয়ার মামলায় তিন আসামিকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আলবিরুনী মীর এ আদেশ দেন।
এর আগে এই তিনজন এ মামলায় জামিনে ছিলেন। কিন্তু নির্ধারিত তারিখে আদালতে হাজির না হওয়ায় আদালত তাঁদের জামিনাদেশ বাতিল করে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেন।
আসামিরা হলেন আবদুস সবুর ওরফে রাজু, খাইরুল ইসলাম ওরফে জামিল ও আরাফাত রহমান।
আসামিপক্ষের আইনজীবী মো. জায়েদুর রহমানের ভাষ্য, জঙ্গি ছিতাইয়ের ঘটনার সময় এই তিন আসামি অন্য একটি মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে ছিলেন। এরপর ২০২২ সালের ২০ নভেম্বর জঙ্গি ছিতাইয়ের ঘটনায় করা মামলায় সেদিনই এই তিনজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। চলতি বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি মহানগর দায়রা জজ আদালত থেকে আরাফাত, ৬ এপ্রিল খায়রুল এবং গত বছরের ৫ ডিসেম্বর সবুর এ মামলা থেকে জামিন পান। গত ৩০ সেপ্টেম্বর তাঁদের আদালতে হাজিরা দেওয়ার তারিখ ধার্য ছিল। কিন্তু ভুলবশত তাঁদের হাজিরা দেওয়া হয়নি। এ কারণে আদালত তাঁদের জামিন বাতিল করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
আইনজীবী বলেন, ‘৩ ডিসেম্বর তাঁদের এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করি। আদালত আসামিদের উপস্থিতিতে শুনানির জন্য আজকের দিন ধার্য করেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘আজ আসামিদের আদালতে হাজির করা হয়। শুনানি শেষে আদালত তাঁদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। আমরা পুনরায় এই মামলায় তাঁদের জামিনের জন্য আবেদন করব।’
যেভাবে জঙ্গি ছিনতাই হয়েছিল২০২২ সালের ২০ নভেম্বর ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল থেকে আট জঙ্গিকে চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের হাজতখানায় নিয়ে যাচ্ছিল পুলিশ। আসামিরা যখন চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সিজেএম) আদালতের প্রধান ফটকের সামনে আসেন, তখন হাতকড়া পরা দুই জঙ্গি এক পুলিশ সদস্যকে মারধর শুরু করেন।
এ সময় আশপাশে থাকা জঙ্গিদের সহযোগীরাও হামলায় যোগ দেন। অন্য পুলিশ সদস্যরা আক্রান্ত সদস্যকে উদ্ধার করতে এগিয়ে এলে তাঁদের ওপর মরিচের স্প্রে ছোড়া হয়। এরপর সিজেএম আদালতের প্রধান ফটকের বিপরীত দিকের গলি দিয়ে মোটরসাইকেলে করে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই জঙ্গি মইনুল হাসান শামীম ওরফে সিফাত সামির ও মো. আবু ছিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিবকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়।
ঘটনার দিন রাতেই পুলিশ ২০ জনকে আসামি করে কোতোয়ালি থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করে। মামলার এজাহারে বলা হয়, আনসার আল–ইসলামের সামরিক শাখার নেতা সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল হক ওরফে সাগর ওরফে বড় ভাই ওরফে মেজর জিয়ার (চাকরিচ্যুত মেজর) পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়। এতে জড়িত আনসার আল–ইসলামের ১৫ থেকে ১৮ সদস্য।
পুলিশ ও আদালত সূত্র জানায়, পালিয়ে যাওয়া দুজন নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার আল–ইসলামের (সাবেক আনসারুল্লাহ বাংলা টিম) সদস্য। তাঁরা জাগৃতি প্রকাশনীর প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপন এবং লেখক ও ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। এই জঙ্গি সংগঠনের নেতা হিসেবে পরিচিত মেজর (বরখাস্ত) সৈয়দ জিয়াউল হক, যাঁর পরিকল্পনায় ২০১৩ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত একাধিক লেখক, প্রকাশক, ব্লগার ও অধিকারকর্মীকে হত্যা করা হয়।
আরও পড়ুনআদালত চত্বর থেকে যেভাবে জঙ্গি ছিনতাই২০ নভেম্বর ২০২২