দুই মাস আগে দেশে আসেন ওমানপ্রবাসী। সপ্তাহখানেক পর ফিরে যাবেন। তাই দুই ছেলেকে মোটরসাইকেলে নিয়ে বেড়াতে বের হয়েছিলেন। তবে বাড়িতে ফেরার সময় মোটরসাইকেলটিকে ধাক্কা দেয় একটি ট্রাক। এতে মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পড়ে মৃত্যু হয় ১২ বছর বয়সী এক ছেলের।

আজ শুক্রবার বিকেল পাঁচটার দিকে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার বড়উঠান ইউনিয়নের শাহমীরপুর চেয়ারম্যান ঘাটা এলাকায় পিএবি সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতের নাম নাফিজ উদ্দিন (১২)। সে পটিয়া উপজেলার জিরি ইউনিয়নের কৈয়গ্রামের হাজীপাড়া এলাকার ওমানপ্রবাসী নেজাম উদ্দিনের ছেলে।

একই দুর্ঘটনায় নাফিজের আরেক ভাই নাহিদুল ইসলাম (৭) ও বাবা নেজাম উদ্দিন আহত হয়েছেন। তাঁদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আজ সন্ধ্যা সাতটার দিকে নিহত নাফিজের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, পাকা ঘরের সামনে চেয়ার পেতে রাখা হয়েছে। আত্মীয়স্বজনেরা দলে দলে বাড়িতে আসছেন। তবে তখনো চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে বাড়িতে লাশ আনা হয়নি। স্বজনেরা লাশ কখন আনা হবে, সেই অপেক্ষায় রয়েছেন।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ওমানে ফিরে যাওয়ার সময় ঘনিয়ে এসেছে, তাই তড়িঘড়ি করে গত শনিবার দু‌ই ছেলের খতনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন নেজাম উদ্দিন। ওই দুই ছেলেকে নিয়ে গতকাল আনোয়ারা উপজেলার পারকি সমুদ্রসৈকত ও টানেল রোড দেখতে বের হয়েছিলেন। ফেরার পথে দুর্ঘটনায় এক ছেলের মৃত্যু হয়েছে। আট বছর আগে পানিতে ডুবে নেজাম উদ্দিনের এক মেয়ের মৃত্যু হয় বলেও জানান বাসিন্দারা।

নিহত নাফিজের চাচাতো ভাই তানভীর ইসলাম বলেন, শনিবার পুরো পাড়ার লোকজন নিয়ে নাফিজ ও নাহিদের খতনা অনুষ্ঠান করা হয়েছে। এক সপ্তাহ না যেতেই একজনের মৃত্যু হলো। এ ঘটনায় পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

দুর্ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মো.

মনির বলেন, নেজাম উদ্দিন মোটরসাইকেলে করে দক্ষিণ দিক থেকে চেয়ারম্যান ঘাটা এলাকার মোড়ে এসে ডান দিকে বাঁক নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। এ সময় পেছন থেকে আসা দ্রুতগতির একটি ট্রাক মোটরসাইকেলটিকে ধাক্কা দেয়। এতে মোটরসাইকেলের পেছনে বসা নাফিজ সড়কে ছিটকে পড়ে। তার মাথা ফেটে যায়। স্থানীয় বাসিন্দারা তিনজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়েছেন।

কর্ণফুলী থানার শাহমীরপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আবদুল গফুর বলেন, দুই ছেলে ও তাদের বাবা মোটরসাইকেলে ছিলেন। ইউটার্ন নেওয়ার সময় ট্রাকের চাপায় মোটরসাইকেলের পেছনে বসা এক ছেলের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে ট্রাকটি জব্দ করা হয়েছে। দুর্ঘটনাকবলিত মোটরসাইকেলটিও উদ্ধার করেছে পুলিশ।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকায় ভূমিকম্পে নিহত বাবা-ছেলের দাফন লক্ষ্মীপুরে

ঢাকার পুরান শহরের বংশালের কসাইটুলীতে ভূমিকম্পে ইটের রেলিং পড়ে নিহত লক্ষ্মীপুরের আব্দুর রহিম (৪৮) ও তার ছেলে আব্দুল আজিজ রিমনের (১২) দাফন সম্পন্ন হয়েছে।

শনিবার (২২ নভেম্বর) সকালে লক্ষ্মীপুরের সদর উপজেলার বশিকপুর ইউনিয়নের আস-সুন্নাহ মাদ্রাসা ও মসজিদ কমপ্লেক্স মাঠে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাদের দাফন করা হয়।

আরো পড়ুন:

ভেঙে ফেলা হচ্ছে ভূমিকম্পে ধামরাইয়ে হেলে পড়া সেই ভবন

এক সেকেন্ডের ব্যবধানে ২ বার ভূমিকম্প: আবহাওয়া অধিদপ্তর

ভোরে গ্রামে মরদেহ আসার পর স্বজনদের কান্নায় ভারী হয়ে ওঠে পরিবেশ। পুরো এলাকায় নেমে আসে শোকের ছায়া।

পরিবার জানায়, আব্দুর রহিম রাজধানীর সদরঘাট এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে কাপড়ের ব্যবসা করছিলেন। পুরান ঢাকার সুরিটোলা স্কুলের পেছনে তিনি স্ত্রী, তিন ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে থাকতেন।

শুক্রবার সকালে মেজো ছেলে রিমনকে (পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র) সঙ্গে নিয়ে বাজারে বের হন। এ সময় হঠাৎ ভূমিকম্পে একটি ভবনের ওপরের রেলিং ভেঙে পড়ে তাদের মাথায়। এতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান বাবা-ছেলে।

ঢাকা/জাহাঙ্গীর/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ