রাজধানীর শেওড়াপাড়া থেকে রাসেল খান নামের এক ব্যবসায়ীকে অপহরণ হওয়ার সাত ঘণ্টা পর গতকাল শুক্রবার রাতে উদ্ধার করা হয়েছে। একই সঙ্গে এ ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়েছে পাঁচজন।

মিরপুর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাজ্জাদ রুমন আজ শনিবার প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল রাত ৯টার পর শেওড়াপাড়ার একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে। পুলিশ ওই বাসা থেকে নগদ ৭৫ হাজার টাকা, ৫টি মুঠোফোন, ১টি চাকুসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন আলম হোসেন (৪০), মনির আহম্মেদ (৩৫), মো.

কবির (৩৪), মফিজুল হোসেন ওরফে জনি মোল্লা (৪৪) এবং মোছা. সুফিয়া (৩৫)।

অপহরণের ঘটনায় ব্যবসায়ী রাসেল খান মিরপুর মডেল থানায় একটি মামলা করেছেন। মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, তিনি একজন তৈরি পোশাক ব্যবসায়ী। বিভিন্ন তৈরি পোশাক কারখানা থেকে পোশাক কিনে তিনি তা বিক্রি করেন। ব্যবসায়িক সূত্রে এক নারীর (এজাহারভুক্ত) সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। গতকাল ওই নারী একটি পোশাক কারখানা থেকে পোশাক কিনে দেওয়ার ব্যবস্থা করে দেওয়ার কথা বলে তাঁকে পশ্চিম শেওড়াপাড়ায় আসতে বলেন। ওই নারীর কথামতো তিনি গতকাল বেলা ২টার দিকে পশ্চিম শেওড়াপাড়ায় ইকবাল রোডের একটি বাসার সামনে আসেন এবং ওই নারীর সঙ্গে দেখা করেন।

একপর্যায়ে ওই নারীসহ ১৪-১৫ ব্যক্তি রাসেলকে মারধর করতে করতে ওই বাসার ছয়তলায় সুফিয়া নামের আরেক নারীর বাসায় নিয়ে আটকে রাখেন। এই সময় হামলাকারীরা রাসেলের কাছে থাকা নগদ ৩৫ হাজার টাকা, একটি মুঠোফোন এবং তাঁর মুঠোফোনের অনলাইন ব্যাংকিং থেকে ৪০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন।

মামলার এজাহার অনুযায়ী, অপহরণকারীরা রাসেলের গলায় চাকু ঠেকিয়ে তাঁর কাছে ১০ লাখ চাঁদা দাবি করেন এবং ওই টাকা আনতে তাঁকে দিয়ে তাঁর মা-বাবা ও স্ত্রীকে ফোন করান। বিষয়টি রাসেল তাঁর এক বন্ধুকেও জানান। ওই বন্ধু ঘটনাটি মিরপুর মডেল থানায় জানালে পুলিশ গতকাল রাত ৯টার পর শেওড়াপাড়ার ওই বাসায় অভিযান চালিয়ে ব্যবসায়ী রাসেলকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে।

ব্যবসায়ী রাসেল খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘অপহরণকারীদের হামলায় আমি গুরুতর আহত হয়েছি। আমার কথা বলতেও কষ্ট হচ্ছে।’

পুলিশ কর্মকর্তা সাজ্জাদ রুমন প্রথম আলোকে বলেন, নগদ টাকা হাতিয়ে নেওয়া, মারধর করা এবং চাঁদা চাওয়ার ঘটনায় ব্যবসায়ী রাসেল খান গতকাল মধ্যরাতে মিরপুর মডেল থানায় একটি মামলা করেছেন। মামলায় তিনি আটজনের নাম উল্লেখ ছাড়াও অজ্ঞাতনামা আরও পাঁচ-ছয়জনকে আসামি করেছেন। মামলার অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

পটিয়ায় ব্যবসায়ীকে অপহরণ, দুই ঘণ্টা পর উদ্ধার

চট্টগ্রামের পটিয়া পৌর সদরের মুন্সেফ বাজার এলাকার একটি দোকান থেকে নুরুল আবছার (২৭) নামের এক ব্যবসায়ীকে অস্ত্রের মুখে তুলে নিয়ে যায় একদল মুখোশধারী ব্যক্তি। আজ বুধবার সকাল সাতটায় তাঁকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে পুলিশের তৎপরতায় সকাল সাড়ে ৯টায় তিনি ছাড়া পান।

উদ্ধারের পর পটিয়া থানা প্রাঙ্গণে অপহরণের শিকার নুরুল আবছার প্রথম আলোকে বলেন, তিনি ব্যাংকে চাকরি করতেন। সম্প্রতি তাঁর চাকরি চলে যায়। এরপর পটিয়া পৌর সদরের মুন্সেফ বাজার এলাকার সাহিত্য বিশারদ সড়কে মুরগির দোকান দেন। প্রতিদিনের মতো আজ সকালে দোকান খোলেন তিনি। এ সময় তিন থেকে চারজন মুখোশধারী লোক ধারালো অস্ত্রের মুখে তাঁকে ধরে অটোরিকশায় উঠিয়ে নিয়ে যায়। তারা তাঁর পকেটে থাকা ৪০ হাজার টাকা নিয়ে নেয়। পরে আরও ৪ লাখ টাকা দাবি করে, পরে ১৭ লাখ এনে দিতে বলেন। তাঁকে চন্দ্র কালারপোল নামের নির্জন এলাকায় নিয়ে অপহরণকারীরা তাঁকে মারধরের পাশাপাশি ছুরিকাঘাতও করেন।

পটিয়া থানার পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) প্রদীপ চন্দ্র দে প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত তাঁকে উদ্ধারের তৎপরতায় নামে। পরে চন্দ্র কালারপোল এলাকায় পুলিশ গেলে উপস্থিতি টের পেয়ে অপহরণকারীরা পালিয়ে যায়।

পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. নুরুজ্জামান জানান, ব্যবসায়ীকে অপহরণ করার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পরে তাঁকে উদ্ধার করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পটিয়ায় ব্যবসায়ীকে অপহরণ, দুই ঘণ্টা পর উদ্ধার