দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় সিরাজগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জান্নাত আরা হেনরীকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত।

সোমবার (১৩ জানুয়ারি) ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. জাকির হোসেন গালিব দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন।

শুনানিকালে বিচারক হেনরীর কাছে জানতে চান, আপনি কি দুই হাজার দুই কোটি টাকার সম্পদের মালিক? হেনরী বলেন, “এসব সম্পদ আয়কর ফাইলের সঙ্গে মিল রয়েছে। এর বাইরে আমার কিছু জানা নেই।” 

এরপর দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর বলেন, “আয়কর দিলেও সম্পদ বৈধ না। এক্ষেত্রে সম্পদের উৎস থাকতে হবে। এ মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর প্রার্থনা করছি।”

পরে আদালত তাকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এরপর হেনরী আদালতকে বলেন, “আমার কিছু বলার আছে। তখন বিচারক বলেন, আজকে আপনার বলার কিছু নেই। বলার জন্য অনেক সময় পাবেন। তখন বলবেন। আজকে গ্রেপ্তার দেখানোর বিষয়৷ এজন্য আদালতে আপনাকে আনা হয়েছে।”

গত ১ জানুয়ারি হেনরীকে দুর্নীতির মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন কমিশনের তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক আসিফ আল মাহমুদ। আদালত আসামির উপস্থিতিতে গ্রেপ্তার দেখানোর বিষয়ে শুনানির জন্য ৬ জানুয়ারি তারিখ ধার্য করেন। তবে ওইদিন হেনরীকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়নি। এজন্য আদালত শুনানির জন্য ১৩ জানুয়ারি ঠিক করেন।

হেনরী একসময় স্কুলশিক্ষক ছিলেন। ওই চাকরি করা অবস্থায় ২০০৮ সালের সংসদ নির্বাচনে প্রথমবার অংশ নিয়ে তিনি পরাজিত হন। পরবর্তী সময়ে ২০০৯ সালে সোনালী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পান হেনরী। তাঁর এ দায়িত্ব পালনকালে আলোচিত হলমার্ক ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পরিচালনা পর্ষদের কয়েকজন সদস্যের বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ ওঠে।

তিনি ২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিরাজগঞ্জ-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য মনোনীত হন।

৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ৬ আগস্ট ভেঙে দেওয়া হয় সংসদ। অন্যান্যদের সঙ্গে সংসদ সদস্য হিসেবে তিনিও কার্যকারিতা ও বৈধতা হারান।

হেনরী ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে সিরাজগঞ্জ সদর থানায় তিনটি হত্যা ও একটি অস্ত্র মামলা রয়েছে। গত ১ অক্টোবর মৌলভীবাজার গ্রেপ্তার হয়ে হেনরী ও তাঁর স্বামী শামীম তালুকদার কারাগারে রয়েছেন।

ঢাকা/মামুন/ইভা 

.

উৎস: Risingbd

এছাড়াও পড়ুন:

রোজার আগেই নির্বাচন, এরপর আগের কাজে ফিরে যাবেন

অন্তর্বর্তী সরকার সময়মতো ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে পবিত্র রমজানের আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের পর তিনি তাঁর আগের কাজে ফিরে যাবেন।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভাকে এসব কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওয়াশিংটন থেকে ভিডিও ফোনকলে অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে কথা বলেন জর্জিয়েভা।

এ সময় তাঁরা বাংলাদেশের চলমান অর্থনৈতিক সংস্কার, আঞ্চলিক পরিস্থিতি এবং আগামী ফেব্রুয়ারিতে সাধারণ নির্বাচনের পূর্ববর্তী চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করেন।

আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা। তিনি বলেন, অধ্যাপক ইউনূস দায়িত্ব গ্রহণের পর বাংলাদেশের অর্থনীতি উল্লেখযোগ্যভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে এবং এই কৃতিত্ব তাঁর নিজের।

অর্থনীতির সংকটকালীন পরিস্থিতি স্মরণ করে আইএমএফ প্রধান বলেন, ‘আপনার অর্জন আমাকে মুগ্ধ করেছে। অল্প সময়ে আপনি অনেক কিছু করেছেন। যখন অবনতির ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি ছিল, তখন আপনি দেশের দায়িত্ব নিয়েছেন। আপনি সঠিক সময়ে সঠিক ব্যক্তি।’

ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা বিশেষভাবে বৈদেশিক মুদ্রা বাজারের স্থিতিশীলতা এবং রিজার্ভ পুনরুদ্ধারের জন্য সরকারের সাহসী পদক্ষেপ, বাজারভিত্তিক বিনিময় হার প্রবর্তনের প্রশংসা করেন।

অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশের এক সংকটময় সময়ে আইএমএফ প্রধানের অবিচল সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘চমৎকার সহায়তার জন্য ধন্যবাদ।’ তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, গত বছর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তাঁদের প্রথম সাক্ষাৎ বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পথ সুগম করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।

কথোপকথনে আইএমএফ প্রধান অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আয় বৃদ্ধি এবং ব্যাংকিং খাতে গভীর সংস্কার বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘শক্ত অবস্থানে থাকতে হলে সংস্কার অনিবার্য। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অমূল্য মুহূর্ত।’

অধ্যাপক ইউনূস জানান, তাঁর সরকার ইতিমধ্যে ব্যাংকিং খাত পুনর্গঠন এবং রাজস্ব সংগ্রহ জোরদারের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা এক বিধ্বস্ত ও সম্পূর্ণ ভেঙে পড়া অর্থনীতি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি। কিছু ব্যক্তি আক্ষরিক অর্থে ব্যাগভর্তি টাকা ব্যাংক থেকে নিয়ে পালিয়ে গেছে।’

এ ছাড়া আঞ্চলিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়। এর মধ্যে ছিল নেপালে চলমান যুব আন্দোলন এবং আসিয়ানভুক্তির জন্য বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা। অধ্যাপক ইউনূস আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি জোরদারের লক্ষ্যে ঢাকার বৃহৎ অবকাঠামো উদ্যোগ—যেমন নতুন বন্দর ও টার্মিনাল প্রকল্প—সম্পর্কেও অবহিত করেন।

আলোচনাকালে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং অর্থসচিব খায়রুজ্জামান মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ফের রিজার্ভ ৩১ বিলিয়ন ডলার 
  • আমার স্বামীর উপরে কু-নজর পড়েছে: অঙ্কিতা
  • সম্পদ বৃদ্ধি নিয়ে প্রশ্ন করায় সাংবাদিকের ওপর ক্ষেপলেন ট্রাম্প
  • ‘আমি থানার ওসি, আপনার মোবাইল হ্যাকড হয়েছে’
  • অস্ট্রেলীয় সাংবাদিকের প্রশ্নে কেন চটে গেলেন ট্রাম্প, আলবানিজের কাছে নালিশেরও হুমকি দিলেন
  • কালিয়াকৈরে এক মাসে ২০ ডাকাত গ্রেপ্তার 
  • বাঁশির সুরে বিরহের কষ্ট ভুলতে চান রিকশাচালক শফিকুল
  • রোজার আগেই নির্বাচন, এরপর আগের কাজে ফিরে যাবেন
  • ট্রেন থেকে পড়ে ৮ দিন ধরে হাসপাতালে ছেলে, ফেসবুকে ছবি দেখে ছুটে এলেন মা
  • ভাড়া বাসায় একা থাকতেন বৃদ্ধা, তার অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার