স্বাধীন সাংবাদিকতার জন্য আর্থিক নিরাপত্তা দরকার: কামাল আহমেদ
Published: 14th, January 2025 GMT
গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান কামাল আহমেদ বলেছেন, “গণমাধ্যমগুলো যাতে যথাযথভাবে তার ভূমিকা পালনে সক্ষম হয় তার উপযোগী নীতিমালা প্রণয়নে কমিশন সুপারিশ করবে। আইন-কানুন ও নিয়ম-নীতি সঠিকভাবে অনুসরণ করে সাংবাদিকতার প্রতিযোগিতায় যারা টিকে থাকবে তারাই গ্রহণযোগ্য হবে। সুস্থ প্রতিযোগিতা না থাকলে গণমাধ্যমের স্বাভাবিক বিকাশ হবে না।”
তিনি বলেন, “দেশে ব্যক্তি-ব্যবসায়িক স্বার্থে বা রাজনৈতিক প্রভাব খাটানোর জন্য সংবাদমাধ্যমকে ব্যবহারের প্রবণতা প্রবল। দেশের গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য ন্যূনতম একটি বেতনের নিশ্চয়তা থাকা দরকার। সাংবাদিকদের আর্থিক নিরাপত্তা যদি না থাকে, তাহলে তাদের স্বাধীনভাবে কাজ করার মানসিকতা থাকবে না। ওয়েজবোর্ডের যে সুযোগ-সুবিধা তা ঢাকার বাইরের সাংবাদিকরা কার্যত প্রায় পান না। যারা পান তারা সৌভাগ্যবান।”
মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) দুপুরে খুলনা জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আরো পড়ুন:
জাতীয় উন্নয়নে অন্তর্ভুক্তিমূলক সাংবাদিকতার প্রত্যয়ে ‘ডেভেলপমেন্ট মিডিয়া ফোরাম’ এর যাত্রা
টিউলিপের বিরুদ্ধে অন্তঃসত্ত্বা সাংবাদিককে হুমকির অভিযোগ
কামাল আহমেদ বলেন, “সংবাদপত্র প্রকাশের ক্ষেত্রে আইন ও নীতিমালায় সম্পাদকের যোগ্যতা, অভিজ্ঞতার বিষয়গুলোসহ অনেক ইতিবাচক বিষয়বস্তু রয়েছে। তবে, যারা অতীতে সরকার পরিচালনা করেছেন তারা নিজেরাই নীতিমালা অনুসরণ করেননি। যে কারণে এই সমস্যাগুলো হয়েছে। তারা তোষণকারীদের খুশি করার জন্য অনেক ক্ষেত্রে আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়েছেন। রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে পত্রিকার সার্কুলেশনের সংখ্যা বিষয়ক ডিএফপির মিডিয়া তালিকা তৈরিতে প্রভাব বিস্তার করা হয়েছে। গণমাধ্যমের মালিক, সম্পাদক, গণমাধ্যমকর্মী আমরা সবাই দুর্নীতি ও নিয়মভাঙ্গার অন্যায়ের অংশীদার। সেই কারণেই আজকে এরকম একটি নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। টেলিভিশন-সংবাদপত্র মিডিয়ায় যাকে মফস্বলে রিপোর্টার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়, তাকেই আবার বিজ্ঞাপন সংগ্রহের দায়িত্ব দেওয়া হয়।”
তিনি আরো বলেন, “বিগত ১৫ বছরে অনেক গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানকে অন্যায়ভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এর ফলে যারা চাকরিচ্যুত হয়ে বেকারত্বের শিকার হয়েছিলেন তারা ক্ষতিপূরণের দাবিদার হওয়ার যোগ্য। একইসঙ্গে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে হওয়া মামলাগুলো দ্রুত প্রত্যাহার করা প্রয়োজন।”
অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীরা জানান, গণমাধ্যমগুলোয় কর্মরত রাজধানীকেন্দ্রিক সাংবাদিক ও মফস্বল এলাকার সাংবাদিকদের সুযোগ-সুবিধার ক্ষেত্রে বিস্তর ব্যবধান রয়েছে। সবার জন্য সুযোগের সমতা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়নে কার্যকর উদ্যোগ দরকার। দলীয় প্রভাব বা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে গণমাধ্যম অথবা এর কর্মীদের ব্যবহারের সুযোগ বন্ধ করতে হবে।
মতবিনিময় সভায় গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সদস্য আখতার হোসেন খান, জিমি আমির, টিটু দত্ত গুপ্ত, আব্দুল্লাহ আল মামুন, বেগম কামরুন্নেসা হাসান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। মতবিনিময়সভায় খুলনা বিভাগের ১০ জেলার প্রায় ১৫০ জন গণমাধ্যমকর্মী অংশ নেন।
ঢাকা/নূরুজ্জামান/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
১২ ঘণ্টায়ও নিয়ন্ত্রণে আসেনি কেরানীগঞ্জে বহুতল ভবনের আগুন
ঢাকার কেরানীগঞ্জের আগানগরে জমেলা টাওয়ারে লাগা আগুন ১২ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ২০টি ইউনিট। আগুন লাগা ভবনে আটকেপড়া ৪৫ জনকে উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস৷
শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে এসব তথ্য জানান ফায়ার সার্ভিসের ডাইরেক্টর (অপারেশন) তাইজুল ইসলাম। এর আগে, ভোর সাড়ে ৫টার দিকে ১২ তলা ওই ভবনের নিচতলায় আগুন লাগে।
আরো পড়ুন:
কৃষিজমি ক্ষতির শঙ্কায় ভেকুসহ মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ
সুনামগঞ্জে আগুনে পুড়ল ৭ ঘর
তাইজুল ইসলাম বলেন, ‘‘আগুন লাগার খবর পেয়ে প্রথমে ফায়ার সার্ভিসের ১০টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে কাজ শুরু করে। পরে আরো ১০টি ইউনিট যুক্ত হয়। বর্তমানে ২০টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। ভবনের বিভিন্ন ফ্লোরে আটকে পড়া ৪৫ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে।’’
তিনি বলেন, ‘‘ভবনের ভেতরে বিপুল পরিমাণ দাহ্য বস্তু থাকায় আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনতে রবিবার পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রয়োজনে অতিরিক্ত ইউনিট মোতায়েন করা হবে এবং আগুন সম্পূর্ণ নির্বাপণ না হওয়া পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত থাকবে।’’
আগুনের সূত্রপাত সম্পর্কে জানতে চাইলে ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘‘এখনই সূত্রপাত বলা যাবে না, আগে আগুন নিয়ন্ত্রণ করব, তারপর সূত্রপাত ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বলা যাবে।’’
ঢাকা/শিপন/রাজীব