সাবেক এমপি কালামের বিরুদ্ধে মামলার অনুমোদন দুদকের
Published: 14th, January 2025 GMT
পৌরসভার মেয়র থাকাকালে দুর্নীতির অভিযোগে রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের সাবেক এমপি আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে মামলার অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
গত রবিবার (১২ জানুয়ারি) কমিশন মামলার অনুমোদন দেয়। দুদকের উপপরিচালক জেসমিন আক্তার এক চিঠিতে বিষয়টি দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালককে জানিয়েছেন।
আবুল কালাম আজাদ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের টিকিটে প্রথমবারের মতো এমপি নির্বাচিত হন। এর আগে তিনি বাগমারার তাহেরপুর পৌরসভার মেয়র ছিলেন। এমপি হওয়ার পর আবুল কালাম আজাদ উপনির্বাচনে তাঁর স্ত্রী খন্দকার সায়লা পারভীনকে মেয়র করেছিলেন। মেয়র থাকাকালে এই পৌরসভারই প্রায় ৩৩ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে।
জানা গেছে, পরিবেশ ও জলবায়ু তহবিলের ১৩ কোটি টাকার একটি বিশেষ প্রকল্প পেয়েছিল তাহেরপুর পৌরসভা। এই প্রকল্পে একটি বেড়িবাঁধ নির্মাণের কাজ ছিল। দুদক অভিযোগ পায়, টেন্ডারে থাকা পরিধির চেয়ে কম বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়। কিন্তু বিল পুরো কাজেরই তোলা হয়।
এর মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও ঠিকাদারের সঙ্গে যোগসাজশ করে প্রায় ৩৩ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন তৎকালীন মেয়র আবুল কালাম আজাদ। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালেই দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক বোরহান উদ্দিন এ ব্যাপারে অনুসন্ধান করেন।
এরপর গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর অনুসন্ধানের প্রতিবেদন দুদকের জেলা কার্যালয় থেকে পাঠানো হয় বিভাগীয় কার্যালয়ে। ২৭ অক্টোবর এই প্রতিবেদন বিভাগীয় কার্যালয় থেকে প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হয়। এরপর মামলা অনুমোদন করেছে কমিশন। এ ব্যাপারে দ্রুতই মামলা হবে।
মামলায় সাবেক মেয়র ও সাবেক এমপি আবুল কালাম আজাদ ছাড়াও আরও যারা আসামি হবেন, তারা হলেন- রাজশাহীর নিউমার্কেট এলাকার ঠিকাদার খালেদ মোহাম্মদ সেলিম, তাহেরপুর পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল কাদের এবং উপসহকারী প্রকৌশলী জাহিদুর হক।
দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক বোরহান উদ্দিন বলেন, “মামলার অনুমোদনের বিষয়টি জেনেছি। প্রস্তুতি নিচ্ছি, দুয়েকদিনের মধ্যে মামলা দায়ের করা হবে।”
আওয়ামী সরকারের পতনের পর আবুল কালাম আজাদ গ্রেপ্তার হয়ে এখন কারাগারে আছেন। তিনি মেয়র থাকাকালে জলবায়ু তহবিলের ওই প্রকল্পের ঠিকাদারদের কাছ থেকে আদায় করা ভ্যাট ও ট্যাক্সের ৫৫ লাখ ৬ হাজার ৭৮২ টাকা আদায় করে তা সরকারি কোষাগারে জমা না দিয়ে আত্মসাতেরও অভিযোগ আছে। কৃষি ও পরিবেশ অডিট অধিদপ্তরের নিরীক্ষায় ওই আর্থিক অনিয়ম ধরা পড়ে।
ঢাকা/কেয়া/এস
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোতে হঠাৎ দুদকের অভিযান
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) প্রধান কার্যালয়ে আজ রোববার হঠাৎ অভিযান পরিচালনা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ইপিবির আয়োজনে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন মেলায় অংশগ্রহণকারীদের কাছ থেকে ডলারে ঘুষ নিয়েছেন সংস্থাটির এক উপপরিচালক, এমন অভিযোগে ২০২৪ সালের ৮ সেপ্টেম্বর প্রথম আলোয় ‘ডলারে ঘুষ নেন ইপিবির এক কর্মকর্তা’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ঘটনা তদন্ত করতে এরপর তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে ইপিবি। কমিটির প্রতিবেদনে অভিযোগের সত্যতা ওঠে আসে।
তবে এক বছরের বেশি সময় পার হলেও এ ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি ইপিবি। দুদক সম্প্রতি এ বিষয়ে অনুসন্ধান করার জন্য একটি দল গঠন করে এবং ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ আমলে নিয়েই দুদক আজ অভিযান পরিচালনা করেছে বলে জানা গেছে।
জানতে চাইলে ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হাসান আরিফ মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের এক উপপরিচালকের বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ ছিল। এ অভিযোগ খতিয়ে দেখতেই দুদকের তিন সদস্যের একটি দল আমাদের কার্যালয়ে আসে। আমরা তথ্য-উপাত্ত দিয়ে সহায়তা করেছি। বিষয়টি অনুসন্ধান পর্যায়ে আছে।’
ইপিবি গঠিত কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘ইপিবির অনুমোদন ছাড়া ১৪টি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে জামানত বাবদ ১৫০ ডলার করে নেওয়া ঠিক হয়নি।’ আরও বলা হয়, চীনের কুনমিংয়ে ২০২৩ সালের আগস্টে অনুষ্ঠিত একটি মেলায় অংশগ্রহণকারীদের কাছ থেকে জামানত নেওয়া হয়েছে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া।
দুদকের সূত্রগুলো বলছে, ২০১৭ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন পরিমাণের পে–অর্ডার দিয়েছেন মেলায় অংশগ্রহণকারীরা, ইপিবির এক উপপরিচালক আত্মসাতের উদ্দেশ্যে এত দিন সেগুলো নিজের জিম্মায় রেখে দিয়েছিলেন। দুদক সরেজমিন ইপিবি কার্যালয়ে এসে পে-অর্ডারগুলো উদ্ধারের চেষ্টা করেছে, তবে কিছু উদ্ধার হয়েছে কি না, তা জানা যায়নি।