‘‘আই অ্যাম ব্যাক’’ - রংপুর রাইডার্সের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক ভিডিওতে নিজের আগমণী বার্তা এভাবে দিয়ে রেখেছিলেন সৌম্য সরকার। ইনজুরির থাবায় রংপুরের জার্সিতে আট ম্যাচ মিস করেছেন বাঁহাতি টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান।

চট্টগ্রাম পর্বে দলের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন। নেটে ঘাম ঝরিয়েছেন। প্রাণবন্ত অনুশীলনও করেছেন। কিন্তু মাঠে ফেরার মতো অবস্থায় নেই। কবে ফিরতে পারবেন সেটাও অজানা। তবে কোনো জোরাজুরি, তাড়াহুড়ো নেই। সামনে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির মতো বড় প্রতিযোগিতা রয়েছে। এজন্য নিজেকে নিয়ে বাড়তি সচেতন সৌম্য।

চোট কাটিয়ে মাঠে ফিরতে পেরে খুশি সৌম্য সরকার। ব্রডকাস্টটারকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সৌম্য বলেছেন,“সবচেয়ে ভালো লেগেছে যে মাঠে আসতে পেরেছি। মাঠে এসে অনুশীলন করেছি, এটা খুবই ভালো। আজকে দ্বিতীয়-তৃতীয় দিন ব্যাটিং করলাম। আস্তে আস্তে উন্নতির দিকে যাচ্ছে। যেহেতু আমরা ক্রিকেটার, সবসময়ই ভালো লাগে মাঠে আসতে, কাজ করতে।”

আরো পড়ুন:

‘বাংলাদেশ ওয়ানডেতে যে ব্র্যান্ড তৈরি করেছে, সেটার জন্যেও শোকেসে একটি ট্রফি দরকার’

‘বিদেশীরা সাপোর্ট না করলে ১৫০ রানও চেজ করতে পারব না’ 

মাঠে ফেরার বিষয়ে সৌম্য বলেছেন, ‘‘চেষ্টা করছি (দ্রুত মাঠে ফিরতে)। তবে এখানে জোরাজুরি করতে গেলে হিতে বিপরীত হতে পারে। ব্যাটিং করছি এখন, কিন্তু ফিল্ডিংয়ের কোনো কিছু এখনও ওইভাবে করা হয়নি। আস্তে আস্তে যেতে হবে, যেগুলো প্রক্রিয়া আছে, সেসবের মধ্য দিয়ে যেতে হবে। ফিজিও, চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলতে হবে। উনারা ভালো বলতে পারবেন। আমি (ব্যাটিং) শেষ করে আমার ফিডব্যাক ফিজিওকে বলেছি। উনি আবার বাড়তি কিছু কাজ দিয়েছেন। এরকমভাবেই চলছে, চেষ্টা যত দ্রুত সম্ভব ফিরতে।”

“পুরোপুরি না সারলে বরং বেশি ঝুঁকি। যদি তাড়াহুড়ো করে নেমে যাই এবং আবার সেখানে লাগে, তাহলে এক মাসের জায়গায় দুই মাস লেগে যেতে পারে (ফিরতে)। আমি, চিকিৎসক, রংপুর রাইডার্স, সব পক্ষ মিলে কথা বলেই ঠিক করতে হবে।” - যোগ করেন তিনি।

সৌম্যকে টুর্নামেন্টের শুরু থেকে পাবে সেই আশায় ছিল রংপুর। বিপিএলের আগে গ্লোবল টি-টোয়েন্টিতে রংপুর শিরোপা জেতে। সৌম্য টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় হয়েছিলেন। ছিলেন ফাইনালের সেরা খেলোয়াড়। নিজের পারফরম্যান্সের ওই ধারাবাহিকতায় জাতীয় দলের হয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরেও পারফর্ম করেন। কিন্তু ফিল্ডিং করতে গিয়ে আঙুলে চোট পান। পরে তার পাঁচ সেলাই লাগে।

ধারনা করা হচ্ছিল, বিপিএলে কোনো ম্যাচ খেলা হবে না তার। কিন্তু মাঠে ফেরায় ভালো কিছুর আশায় রয়েছেন টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান। সঙ্গে পুরো ফর্মও ধরে রাখার প্রত্যয় তার, “চেষ্টা করব যেখানে শেষ করেছি, সেখান থেকেই শুরু করার। যদিও কাজটা কঠিন, যেহেতু চোটে ছিলাম, আবার কাজ করে ফিরতে হবে। তবে চেষ্টা করব যে ফর্মে ছিলাম, ওখান থেকে আবার শুরু করতে।”

রংপুর সৌম্যর অভাব এখনো টের পায়নি। টপ ও মিডল অর্ডারে যারা সুযোগ পেয়েছেন কম-বেশি পারফর্ম করেছে। আট ম্যাচ জিতে এরই মধ্যে তারা নিশ্চিত করেছে প্লে অফ। তবে শিরোপার লড়াইয়ে থাকা এই দলটি শেষ লড়াইয়ে তার অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে পারলে সম্ভাবনাও আরো বেড়ে যাবে নিশ্চিতভাবেই। রংপুর, সৌম্য দুই পক্ষই সেই অপেক্ষায়।

 

চট্টগ্রাম/ইয়াসিন/নাভিদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব প এল

এছাড়াও পড়ুন:

পুলিশের জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েছে: সলিমুল্লাহ খান

লেখক ও অধ্যাপক ড. সলিমুল্লাহ খান বলেছেন, আমাদের বুকে হাত দিয়ে স্বীকার করতে হবে, পুলিশের জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েছে। পুলিশের যে পজিশনে থাকার কথা ছিল সে পজিশনে নেই। পুলিশ যেই আইনে চলে সেখানে পদে পদে সমস্যা আছে। এসব বিষের মাঝেমধ্যে আলোচনা করা উচিত এবং খোলাখুলি আলোচনা হওয়া উচিত।

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজারবাগে পুলিশ সপ্তাহের বিশেষ আয়োজন ‘নাগরিক ভাবনায় জনতার পুলিশ: নিরাপত্তা ও আস্থার বন্ধন’ আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ড. সলিমুল্লাহ খান বলেন, পুলিশ শুধু রাষ্ট্রযন্ত্রের অংশ নয়, সমাজেরও অংশ। পুলিশের সঙ্গে জনতার বিভক্তির মূলে যেতে হবে, এটা হলো জনতার সঙ্গে রাষ্ট্রের বিভক্তি। আর এই সমস্যার সমাধান হলো গণতন্ত্র।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সাবেক আইজিপি আব্দুল কায়ুম বলেন, এত বড় একটা পরিবর্তন হয়ে গেল, একটা গণঅভ্যুত্থান হয়ে গেল; ছাত্র-জনতা তাদের আশা-আকাঙ্ক্ষার কথা বলেছে, তারা নতুন একটি বাংলাদেশ গড়তে চায়। একটা সুযোগ সৃষ্টি হয়েছিল স্বাধীনতার পর। কিন্তু সঠিকভাবে আমরা এগোতে পারিনি, আমরা ব্যর্থ হয়েছি। এই যে একটা সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। অনেক আশা-আকাঙ্ক্ষা অনেক স্বপ্ন, এই স্বপ্ন যেন ব্যর্থ না হয়। সে জন্য সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, ২০০৯ থেকে ২৪ পর্যন্ত আমরা যা দেখলাম, তা কল্পনা করা যায় না। আগেও গণতন্ত্র ছিল না, কিন্তু আমরা সেবা দিতে পেরেছি। তবে গত ১৫ বছরের মতো আমরা দারোয়ানে পরিণত হইনি। গণতন্ত্র থাকলে যে সুবিধাটা হয়, সেটা হলো, পাঁচ বছর পর আপনাকে ভোটারদের কাছে যেতে হবে এবং মেন্ডেট নিতে হবে আপনি যা ইচ্ছা তাই করতে পারবেন না। ২০০৯ সালের নির্বাচন যে খুব নিখুঁত হয়েছে, তা বুকে হাত দিয়ে বলতে পারব না। তার পরবর্তী তিনটা নির্বাচনে যা হয়েছে তা আমরা সবাই জানি। যখন একচ্ছত্র ক্ষমতা এসে যায় তখন প্রশাসন ভেঙে পড়ে। এটা ভয়, খুন-গুম ও সন্ত্রাস দ্বারা সম্ভব হয়েছে। এ সময়টাতে শুধু এক শ্রেণির পুলিশ কর্মকর্তা না সব সেক্টরের এক শ্রেণির কর্মকর্তা অতি উৎসাহিত হয়ে কাজ করেছে।

তিনি বলেন, যা হওয়ার হয়েছে, আমাদের আবার নতুন করে মানুষের সেবা দিতে হবে। সমাজের সব শ্রেণির মানুষকে সঙ্গে নিয়ে কমিউনিটি পুলিশিং করতে হবে।

সাবেক আইজিপি মোহাম্মদ নুরুল হুদা পুলিশ সংস্কার কমিশনকে ব্যর্থ উল্লেখ করে বলেন, সংস্কার কমিশন পুলিশের বিষয়ে বলছে, অনেক বিষয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা দরকার। পরীক্ষা-নিরীক্ষা দরকার–যদি এই কথা বলা হয়, তাহলে এই সংস্কার কমিশনের কী দরকার। এই পুলিশ কমিশন ১৮৬১ সালের পুলিশ আইন নিয়ে কিছু বলে না গণ্ডগোল কিন্তু ওইখানেও আছে।

তিনি বলেন, রাজনৈতিক সদিচ্ছা যদি না থাকে তাহলে পুলিশ কীভাবে কাজ করবে। যাদের সুবাদে আমরা আজ কথা বলতে পারছি, সেটা কতদিন বলতে পারবো সেটার কোনও গ্যারান্টি নেই। রাজনৈতিক দলগুলোর যদি সদিচ্ছা না থাকে তাহলে সম্ভব না।

তিনি বলেন, পুলিশের সঙ্গে জনগণের সম্পর্ক কিন্তু ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ার। এটা বদলানো পুলিশের হাতে নাই। পুলিশের অনেক অফিসাররা দুর্নীতিতে জড়িয়েছে।

পুলিশের বিশেষ শাখার অতিরিক্ত আইজিপি গোলাম রসুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও ছিলেন– নিউ এইজের সম্পাদক নুরুল হুদা, এপেক্স কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাসির মঞ্জু, কর্ম কমিশনের সদস্য অধ্যাপক সায়মা চৌধুরী, নির্বাচন কমিশনের সদস্য ডা. জাহেদ করিম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সাহিত্যিক, খেলোয়াড়সহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ব্যক্তিরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ