পিআরেরও দু–একটা সাইড এফেক্ট আছে, কিন্তু অধিকাংশই ভালো দিক: ইসলামী আন্দোলন
Published: 18th, September 2025 GMT
সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতিতে নির্বাচন আয়োজন প্রশ্নে গণভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। দলটির নায়েবে আমির সৈয়দ ফয়জুল করীম বলেছেন, জনগণ যদি পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন না চায়, তাহলে ইসলামী আন্দোলন এ পদ্ধতির দাবি আর করবে না।
সৈয়দ ফয়জুল করিম আরও বলেন, ‘পিআরের বিপক্ষে কিছু নাই, তাই বলব না। কেউ ওষুধ যখন সেবন করে, সেখানে লেখা থাকে—এর সাইড এফেক্ট (পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া) আছে। পিআরের ব্যাপারেও দু–একটা সাইড এফেক্ট আছে। কিন্তু এর অধিকাংশই ভালো দিক।’
আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে বিক্ষোভ মিছিলের আগে এক সমাবেশে এ কথাগুলো বলেন ইসলামী আন্দোলনের নায়েবে আমির। ইসলামী আন্দোলন ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ এ কর্মসূচির আয়োজন করে।
জুলাই সনদের ভিত্তিতে পিআর পদ্ধতিতে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সবার জন্য সমান সুযোগ) নিশ্চিত করা, গণহত্যার বিচার দৃশ্যমান করা ও বিশেষ ট্রাইব্যুনালে ভারতীয় তাঁবেদার ও ফ্যাসিবাদের দোসর জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের বিচার এবং বিচার চলাকালীন তাদের কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবিতে এ বিক্ষোভ মিছিল করে ইসলামী আন্দোলন।
মিছিলটি বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেট থেকে রাজধানীর পুরানা পল্টন মোড় ঘুরে আজাদ প্রোডাক্টসের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
দেশের ৮০ শতাংশ মানুষ পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চায় দাবি করে ইসলামী আন্দোলনের নায়েবে আমির সৈয়দ ফয়জুল করীম বলেন, জনগণ পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের উপকারটা কী, তা জেনে গেছে। জরিপে দেখা যায়, ৮০ শতাংশ জনগণ পিআরের পক্ষে।
পিআর সিস্টেম নির্বাচন নিয়ে বিএনপির আপত্তি থাকার কথা নয় মন্তব্য করে সৈয়দ ফয়জুল করীম বলেন, বিএনপির উচ্চপর্যায়ের একজন নেতা বক্তব্য দিয়েছেন, ৯০ শতাংশ ভোট নাকি তাদের। যদি ৯০ শতাংশ ভোট তাদের হয়, তাহলে তারা আসন পাবে ২৭০টির বেশি। তাতে তাদের সরকার গঠন করতে সমস্যা কোথায়? তারা ঝামেলামুক্ত সরকার গঠন করতে পারবে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বক্তব্য উল্লেখ করে ইসলামী আন্দোলনের নায়েবে আমির বলেন, তিনি (তারেক রহমান) বলেছেন, তাঁরা জাতীয় সরকার গঠন করবেন। সবার সম্মিলিত যে সরকার, সেটাই তো জাতীয় সরকার। পিআর পদ্ধতিতেই সব দলের, মতের ও আদর্শের মানুষজন সংসদে যাবে। সুতরাং বিএনপির বক্তব্য অনুযায়ী তো পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন প্রয়োজন।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গানের শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তির প্রতিবাদ জানিয়ে সৈয়দ ফয়জুল করিম বলেন, ৯২ শতাংশ মুসলমানের দেশে কোনোভাবেই গানের শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া যাবে না। এ দেশের মুসলমানদের ট্যাক্সের (কর) পয়সা দিয়ে গানের শিক্ষকের প্রয়োজন নেই। সেখানে ইংরেজি শিক্ষক দেন, কম্পিউটার শিক্ষক দেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব এনপ র প আর র সরক র ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই সনদের বাস্তবায়নে দেরি হলে জনগণ আবারও রাস্তায় নামবে: জামায়াত নেতা রফিকুল
জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি এখন দেশের ১৮ কোটি মানুষের দাবি বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, ‘এই সনদ নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে জারি করা হোক এবং প্রয়োজনে গণভোটের আয়োজন করা হোক। তবে এই গণভোট অবশ্যই জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই হতে হবে, নির্বাচনের পরে নয়।’
আজ বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে জুলাই সনদের বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে তৃতীয় ধাপে তৃতীয় দিনের আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন রফিকুল ইসলাম খান। এ সময় উপস্থিত ছিলে জামায়াতের আরেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ।
জুলাই সনদের বাস্তবায়নে দেরি হলে জনগণ স্বাভাবিকভাবেই আবারও রাস্তায় নেমে আসবে বলে মন্তব্য করেন রফিকুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, ১৯৯০ সালের গণ-অভ্যুত্থানের পর সে সময়কার দলগুলোর ঐকমত্য থাকা সত্ত্বেও ক্ষমতায় থাকা দলগুলো সেটি (তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা) যথাসময়ে বাস্তবায়ন করেনি। পরে আন্দোলনের মাধ্যমেই তা সংবিধানে যুক্ত হয়।
জামায়াতের এই নেতা আরও বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল হয়েছিল বিচারপতি খায়রুল হকের রায়ের মাধ্যমে। আদালতের ওপর প্রভাব বিস্তার করে এ রায় দেওয়ানো হয়েছিল। তাই বিচার বিভাগকে আবার বিতর্কের মুখে না ফেলে সংবিধানিক আদেশের মাধ্যমে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পক্ষে জামায়াত।
জামায়াতের আরেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, ঐকমত্য কমিশন একটি বিশেষজ্ঞ কমিটির মাধ্যমে চারটি বিকল্প নিয়ে কাজ করেছে, যার মধ্যে কমিশন সংবিধানিক আদেশের প্রস্তাবটি সমর্থন করেছে। এই আদেশের মাধ্যমে জুলাই সনদের ২২টি আর্টিকেল বাস্তবায়িত হতে পারে। এটি আইনিভাবে সবচেয়ে শক্তিশালী ভিত্তি।
এক প্রশ্নের জবাবে হামিদুর রহমান বলেন, সংবিধানের মৌলিক কাঠামো পরিবর্তন করার এখতিয়ার সংসদের নেই, এবং এ ধরনের পরিবর্তন করতে হলে অবশ্যই গণভোটের প্রয়োজন হয়।
জামায়াতে ইসলামী জনগণের অভিপ্রায়কে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয় উল্লেখ করে জামায়াতের এ সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, জনগণের ইচ্ছা ও আকাঙ্ক্ষাই হচ্ছে দেশের সর্বোচ্চ আইন।
জুলাই সনদের যে আদর্শ ও চেতনা, তা বাস্তবায়ন হওয়া উচিত এবং যারা এই আদর্শের পথে হাঁটবে না, জনগণ তাদের ব্যাপারে সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে বলে মনে করেন হামিদুর রহমান আযাদ। উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ডাকসু নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়লাভ এটি প্রমাণ করে যে এ দেশের তরুণসমাজ ও জনগণ নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থা চায় এবং জুলাই বিপ্লবের যোদ্ধাদের পক্ষেই রয়েছে।