বাকৃবির খামার থেকে উন্নত জাতের ১৪ ভেড়া চুরি
Published: 18th, September 2025 GMT
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) গবেষণা প্রকল্পের কাজে ব্যবহৃত ১৪টি ভেড়া চুরি হয়েছে। চুরি হওয়া ভেড়াগুলো ‘দরপার’ ও ‘গাড়ল’ নামে উন্নত দুটি জাতের।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত থেকে বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৬টার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ফটক সংলগ্ন খামার থেকে এ চুরির ঘটনা ঘটে। তবে সেখানে রাতে কোনো প্রহরী দায়িত্বে না থাকায় সুনির্দিষ্টভাবে কোন সময়ে চুরি হয়েছে তা জানা যায়নি।
আরো পড়ুন:
গবাদিপশু থেকে মানুষের শরীরে ‘তড়কা’ রোগ, প্রতিরোধে যা করবেন
১৬ দিন ধরে অচলাবস্থায় উদ্বেগ প্রকাশ বাকৃবি ছাত্রশিবিরের
বাকৃবির ভারপ্রাপ্ত প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা মো.
গবেষণায় যুক্ত সার্জারি ও অবস্টেট্রিক্স বিভাগের অধ্যাপক ড. ফরিদা ইয়াসমিন বারি বলেন, “খুবই দুঃখজনক ঘটনা, আমি ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না। অনেক সাধনা করে এই ‘নিউক্লিয়ার স্লট’ তৈরি করেছি। এর জন্যই আমি গোল্ড মেডেল পেয়েছি। চর ও হাওর অঞ্চলে এই জাতের ভেড়ার পরিচিতি রয়েছে।”
তিনি বলেন, “বর্তমানে তিনটি প্রজনন প্রকল্প ও দুটি গবেষণা প্রকল্প চলমান ছিল। দরপার ও গাড়ল প্রজাতির উন্নত ভেড়া—একেকটির ওজন ৩০-৪০ কেজি। তালা ভেঙে ১৪টি ভেড়া নিয়ে গেছে, এখন মাত্র ২-৩টি অবশিষ্ট আছে। এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য যেমন বড় ক্ষতি, ব্যক্তিগতভাবে আমার জন্যও অত্যন্ত কষ্টের।”
তিনি আরও বলেন, “২০১১ সাল থেকে এসব ভেড়া নিয়ে গবেষণা চলছে। এ ভেড়াগুলো থেকে সিমেন কালেকশন করে শিক্ষার্থীরা ব্যবহারিক প্রশিক্ষণ নিতেন। চুরির কারণে শুধু আমার ব্যক্তিগত গবেষণা নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বর্ষ থেকে শুরু করে স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের গবেষণারও মারাত্মক ক্ষতি হলো।”
এর আগে এক ট্রেন দুর্ঘটনায় প্রায় ২২টি ভেড়া মারা গিয়েছিল বলেও জানান তিনি।
নিরাপত্তা কাউন্সিলের পরিচালক অধ্যাপক ড মো আরিফুল ইসলাম বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটলে অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা তদন্ত করি এবং দায়ীদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিই। ইতোমধ্যে ঘটনাস্থল ও আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করা হচ্ছে। অধ্যাপক ফরিদা বারিকে থানায় জিডি করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে এবং পুলিশি সহায়তায় দ্রুত ভেড়াগুলো উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।”
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) সার্জারি ও অবস্টেট্রিক্স বিভাগের অধ্যাপক ড. ফরিদা ইয়াসমিন বারি ভেড়ার উপর গবেষণার জন্য বাংলাদেশ একাডেমি অব সায়েন্সেস (বিএএস) স্বর্ণ পদক অর্জন করেছিলেন। মাল্টিপল ওভুলেশন অ্যান্ড এমব্রায়ো ট্রান্সফার বিষয়ে তার এ গবেষণাকর্ম বিশেষভাবে স্বীকৃতি পায়।
অধ্যাপক ড. ফরিদা ইয়াসমিন বারি ২০১১ সাল থেকে ভেড়ার ভ্রূণ ও ভ্রূণ স্থানান্তর নিয়ে গবেষণা চালিয়ে আসছেন। দেশে প্রথমবারের মতো তিনি ভ্রূণ স্থানান্তরের মাধ্যমে ভেড়ার বাচ্চা উৎপাদন করেন। সুপার ওভুলেশনের মাধ্যমে বছরে ২৫-৩০টি উন্নত প্রজাতির কাঙ্ক্ষিত ভ্রূণ উৎপাদনে সক্ষম হন তিনি। এসব গবেষণা আমিষের চাহিদা পূরণ এবং অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখছে।
ঢাকা/লিখন/মেহেদী
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
স্টিভ জবসের পথেই রয়েছেন টিম কুক
অ্যাপল কম্পিউটারের সহপ্রতিষ্ঠাতা স্টিভ জবসের পর ২০১১ সাল থেকে অ্যাপলকে বেশ ভালোভাবে নেতৃত্ব দিচ্ছেন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) টিম কুক। তাঁর নেতৃত্বেই অ্যাপল বর্তমানে প্রায় চার লাখ কোটি মার্কিন ডলারের প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। প্রযুক্তি দুনিয়ার শীর্ষ তিন প্রতিষ্ঠানের একটি হিসেবে পরিচিত অ্যাপল নিত্যনতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবনেও পিছিয়ে নেই।
টিম কুকের জন্ম ১৯৬০ সালের ১ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের আলাবামা অঙ্গরাজ্যের মোবাইল শহরে। অবার্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক এবং ডিউক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ করার পর তিনি প্রযুক্তিশিল্পে কর্মজীবন শুরু করেন। অ্যাপলে যোগদানের আগে তিনি আইবিএমের পার্সোনাল কম্পিউটার ব্যবসায় ১২ বছর কাজ করেন। পরবর্তী সময়ে ইন্টেলিজেন্ট ইলেকট্রনিকস ও কম্প্যাকের মতো প্রতিষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৯৮ সালে স্টিভ জবসের আমন্ত্রণে অ্যাপলে সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট অব ওয়ার্ল্ডওয়াইড অপারেশনস পদে যোগ দেন টিম কুক। দ্রুতই অ্যাপলের সরবরাহ শৃঙ্খল ও উৎপাদনব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর পাশাপাশি অ্যাপলের কারখানা বন্ধ করে চুক্তিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রযুক্তিপণ্য তৈরি শুরু করেন তিনি। ফলে অ্যাপলের উৎপাদন খরচও কমে আসে। ২০০৫ সালে তিনি অ্যাপলের চিফ অপারেটিং অফিসার পদে পদোন্নতি পান। স্টিভ জবসের অসুস্থতার সময় তিনি একাধিকবার অ্যাপলের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন টিম কুক।
জবসের মৃত্যুর কয়েক মাস আগে ২০১১ সালের আগস্ট মাসে টিম কুক আনুষ্ঠানিকভাবে অ্যাপলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এর পর থেকেই স্টিভ জবসের উদ্ভাবনী জাদুকরের ভাবমূর্তি থেকে বেরিয়ে এসে টিম কুক অ্যাপলকে দক্ষভাবে পরিচালনা করছেন। তাঁর নেতৃত্বেই অ্যাপল বিশ্বের প্রথম ট্রিলিয়ন বা এক লাখ কোটি মার্কিন ডলারের প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়।
অ্যাপল ইকোসিস্টেমকে শক্তিশালী করার জন্যও আলোচিত টিম কুক। তাঁর নেতৃত্বেই অ্যাপল ওয়াচ ও এয়ারপডসের মতো সফল পণ্য বাজারে আসে এবং ইন্টেলের পরিবর্তে নিজস্ব চিপ এম১ প্রসেসর ব্যবহার শুরু করে অ্যাপল, যা অ্যাপলের অন্যতম সাহসী ও সফল কৌশলগত পদক্ষেপ হিসেবে ধরা হয়। বর্তমানে প্রযুক্তিশিল্পের অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তি হিসেবে পরিচিতি পেলেও স্টিভ জবসের গড়ে তোলা আইফোন আর ম্যাকের মতো প্রযুক্তিপণ্যের উদ্ভাবনের ধারাকে অব্যাহত রেখেছেন টিম কুক।
সূত্র: অ্যাপল