কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে আদালতে তোলার সময় ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান দিয়েছেন গ্রেপ্তার হওয়া আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা।

শনিবার (১৬ আগস্ট) বিকেলে পুলিশ ভ্যান থেকে নামিয়ে আদালতে নেওয়ার সময় তারা এ স্লোগান দেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গ্রেপ্তার কক্সবাজার-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ আলীর ছেলে ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা তারেক মাহমুদ রনি প্রথমে স্লোগান দেন। এ সময় সঙ্গে থাকা তার বড় ভাই টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব মোর্শেদ ও টেকনাফ পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি জাবেদ ইকবাল চৌধুরীও স্লোগান ধরেন।

আরো পড়ুন:

টেকনাফে উপজেলা আ.

লীগের সম্পাদকসহ ৩ নেতা গ্রেপ্তার

সরকার উৎখাতের যড়যন্ত্রের মামলায় আ.লীগ নেতা গ্রেপ্তার

এর আগে, শুক্রবার (১৫ আগস্ট) রাতে টেকনাফে বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, তারা দীর্ঘদিন ধরে গ্রেপ্তার এড়িয়ে পলাতক ছিলেন।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অলক বিশ্বাস জানান, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এ পর্যন্ত কক্সবাজার জেলায় মোট ৩৪ জন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।

ঢাকা/তারেকুর/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আওয় ম ল গ ত কর ম আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

শত বছর পেরিয়ে ‘শান্তির মিষ্টি’ 

বহু বছর আগে ইছামতী নদীর তীরে গড়ে ওঠে বান্দুরা বাজার। ব্রিটিশ আমলেই এটি ব্যবসাসমৃদ্ধ ‘গঞ্জ’ হিসেবে পরিচিতি পায়। সেখানেই নন্দ কুমার ঘোষ প্রতিষ্ঠা করেন ‘বিক্রমপুর অনন্তদেব মিষ্টান্ন ভান্ডার’। পরে নাম বদলে হয় ‘শান্তি মিষ্টান্ন ভান্ডার’। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে ঘোষ পরিবার ধরে রেখেছে এ ব্যবসা। এলাকার মানুষের কাছে একনামে পরিচিত ‘শান্তির মিষ্টি’ হিসেবে।

সম্প্রতি ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার বান্দুরা বাজারে গিয়ে দেখা যায়, ঐতিহ্যবাহী দোকানটির কর্মীরা বেশ কর্মব্যস্ত। লাকড়ির চুলায় তৈরি হচ্ছে রসগোল্লা। পাশে দুধ জ্বাল দিচ্ছেন কারিগরেরা। দোকানের ক্যাশে বসে আছেন প্রবীণ সহদেব ঘোষ, হাসিমুখে ক্রেতাদের সামলাচ্ছেন। তাঁর দোকান-বাসা একই ছাদের নিচে। 

প্রায় ৭০ বছর আগে সহদেব ঘোষ তাঁর বাবা মোহন লাল ঘোষের হাত ধরে এ ব্যবসায় নামেন। এখন বয়স ৯০ বছর। এ বয়সেও দোকানের দেখভাল করেন। সহদেব ঘোষ বললেন, এই ব্যবসাই তাঁর জীবনের অবলম্বন। তাঁর সন্তানেরা ইউরোপ-আমেরিকায় থাকলেও ছোট ছেলে সুধীর ঘোষ তাঁর সঙ্গেই থেকে দোকান চালান। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে এই ঐতিহ্য ধরে রাখতে চান তাঁরা।

কারিগর সিদ্দিকুর রহমান ১২ বছর ধরে কাজ করছেন এখানে। তিনি বলেন, ‘আমরা শুধু খাঁটি দুধের ছানা ব্যবহার করি। কোনো পানি বা ভেজালের সুযোগ নেই।’ দোকানের বিক্রয়কর্মী শ্যামল বলেন, ‘প্রতিদিন এত ক্রেতা আসে যে সামলানোই মুশকিল। তবে এই ভিড়েই আনন্দ লাগে!’

সহদেব ঘোষের ছোট ভাই মধু ঘোষ জানান, তাঁদের পরিবার প্রায় ১৩০ বছর ধরে এ ব্যবসা টিকিয়ে রেখেছে। নব্বইয়ের দশক পর্যন্ত পুরো বান্দুরা বাজারে একটাই মিষ্টির দোকান ছিল—এই শান্তি মিষ্টান্ন ভান্ডার। এখন প্রতিদিন ২০০-৩০০ কেজি মিষ্টি বিক্রি হয়, মৌসুমভেদে তা বাড়ে বা কমে। অনেকে ফোনে অর্ডারও দেন। তাঁদের দোকানে মিষ্টির দাম শুরু ২৮০ টাকা থেকে। সর্বোচ্চ ৬০০ টাকা দামের মিষ্টি পাওয়া যায়। দেড় টাকা কেজি দরে মিষ্টি বিক্রি করে দোকানটির যাত্রা শুরু হয়েছিল বলে জানান মধু ঘোষ।

স্থানীয়দের ভাষ্য, ব্রিটিশ আমলে বান্দুরা ছিল নদীবন্দর ও ধানের আড়তের জন্য খ্যাত। খ্রিষ্টানপল্লির কারণে ব্যবসাও জমজমাট ছিল। সেই সময় থেকে শান্তি মিষ্টান্ন ভান্ডার স্থানীয়দের আস্থা অর্জন করে।

রসগোল্লা, মালাইচপ, চমচম, দই, রসমালাইসহ নানা ধরনের মিষ্টি পাওয়া যায় এই দোকানে

সম্পর্কিত নিবন্ধ