চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে উত্তেজনার প্রতিবাদ ও দিল্লির আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছে একদল শিক্ষার্থী। 

শনিবার (১৮ জানুয়ারি) রাত পৌনে ১১টার দিকে ‘আগ্রাসন বিরোধী শিক্ষার্থী’ ব্যানারে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিলটি  বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি চত্বর থেকে শুরু হয়ে হল পাড়া ঘুরে পুনরায় ভিসি চত্বরে এসে শেষ হয়। পরে সেখানে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন তারা। 

এ সময় তারা ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’, ‘তুমি কে আমি কে, বাংলাদেশ বাংলাদেশ’ ‘বিএসএফের আগ্রাসন, রুখে দাও জনগণ’, ‘ভারতের গদিতে, আগুন জ্বালো একসাথে’, ‘সীমান্তে হামলা কেন, দিল্লি জবাব চাই’, ‘আমার ভাই আহত কেন, দিল্লি জবাব চাই’, ‘বড়াইবাড়ির হাতিয়ার, গর্জে ওঠো আরেকবার’, ‘সীমান্তে হামলা হলে, রুখে দেবে জনগণ’, ‘আবরারের রক্ত, বৃথা যেতে দেব না’সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। 

সমাবেশে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী হাসিব আল ইসলাম বলেন, “আবরারের রক্ত এখনো আমাদের শরীরে বহমান আছে। আমরা আমাদের রক্ত দিয়ে শেখ হাসিনাকে উৎখাত করেছি যে ছিল দিল্লির তাবেদার। এখন কিন্তু ছাত্রজনতার সরকার রয়েছে বাংলাদেশে। এখন বাংলাদেশ যেকোনো আগ্রাসনের জবাব দিতে প্রস্তুত।” 

হাসিব আরো বলেন, “দিল্লি যখন পানির ন্যায্য হিস্যা দেয় না, বার বার আমার দেশের মানুষকে সীমান্তে হত্যা করছেন, তখন বোঝা যায় দিল্লি বাংলাদেশের বন্ধু হতে পারে না। ভারত বাংলাদেশের মানুষের বন্ধু হলে পতিত স্বৈরাচারকে জায়গা দেওয়ার দুঃসাহস দেখাত না।” 

আইন বিভাগের শিক্ষার্থী রিফাত আহমেদ রেজোয়ান বলেন, “কৃষক আজ ভারতের বিপক্ষে দাঁড়াচ্ছে তাদের জমি রক্ষা করতে। নাগরিক হিসেবে এটি আমাদেরও দায়িত্ব। দেশের মাটির রক্ষা করতে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকব। সীমান্তে ইচ্ছাকৃত অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরির অপচেষ্টা করছে ভারত।” 

এ সময় গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত হাসিনাকে ফেরত দেওয়ার দাবি করেন তিনি। 

আরেক শিক্ষার্থী এম এ সাইদ বলেন, “ভারতীয় বিএসএফ বাংলাদেশের নিরস্ত্র মানুষের উপর যে নির্যাতন চালায় তা নিন্দনীয়। দিল্লির প্রেয়সীকে এদেশ থেকে তাড়ানোর ক্ষোভ মানুষের উপর ঝাড়ছে তারা। আমাদের সার্বভৌম রাষ্ট্রের উপর ভারত আঙুল তুললে সে আঙুল আমরা ভেঙে দিব।”

শনিবার চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার বিনোদপুর ইউনিয়নের চৌকা ও কিরণগঞ্জ বিজিবি সীমান্ত ফাঁড়ির মাঝামাঝি এলাকায় উত্তেজনা দেখা দেয়। দুপুর থেকে বাংলাদেশ ও ভারতীয় সীমান্তে দুই দেশের নাগরিকেরা জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন। এ সময় ভারতীয় নাগরিকদের হামলায় তিন বাংলাদেশি আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ঢাকা/সৌরভ/ইমন

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

অন্তর্বর্তী সরকার জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছে: ফখরুল

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। আমরা যে বিশ্বাসযোগ্যতা আশা করেছিলাম, তারা তা রাখেনি। তাই, বর্তমান রাজনৈতিক সংকটের দায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের।”

শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) ৫৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

আরো পড়ুন:

ঐক্যের মাধ্যমে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাই: ফখরুল

জনগণ আর সেই পুরোনো রাজনীতির ফাঁদে পা দেবে না: ফখরুল

বিএনপির মহাসচিব বলেন, “নির্বাচনের আগে গণভোটের কোনো সুযোগ এখন আর নেই। নির্বাচনের দিনই গণভোট হবে। দুটি ব্যালট থাকবে— একটি গণভোটের জন্য, আরেকটি জাতীয় সংসদের জন্য। এই বিষয়ে কারো দ্বিমত থাকার কথা নয়।”

তিনি বলেন, “যেদিন ঐকমত্যের নথি জমা দেওয়া হলো, মনে আছে, সেদিন বৃষ্টি হচ্ছিল, ১৭ তারিখ। তার আগে আবার সবকিছু এলোমেলো হয়ে গিয়েছিল। আমরা আবার ঠিকঠাক করে সব রাজনৈতিক দল একমত হয়ে বৃষ্টির মধ্যে ছাতা ধরে সেখানে স্বাক্ষর করলাম। কিন্তু, যখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে সেটা উপস্থাপন করা হলো, তখন দেখা গেল অনেক পার্থক্য। বিশেষ করে, আমরা যে নোট অব ডিসেন্টগুলো দিয়েছিলাম, সেগুলো উল্লেখ করা হয়নি। আমরা বলছি, ইটস অ্যা ব্রিজ অব ট্রাস্ট। অথচ, তারা সেই আস্থার সেতু ভেঙে দিয়েছে। জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে।”

মির্জা ফখরুল বলেন, “আপনারা যে কমিশন তৈরি করেছেন, সেই কমিশন প্রায় এক বছর আট-নয় মাস ধরে ঐকমত্যের নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছে। সংস্কার ও বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আমরা অনেক ক্ষেত্রে একমত হয়েছিলাম। কয়েকটি বিষয়ে মতভেদ থাকায় আমরা ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দিয়েছিলাম। অর্থাৎ, আমাদের মধ্যে মতভেদ থাকলেও মূল বিষয়ে আমরা ঐকমত্যে পৌঁছেছিলাম, এটাই নিয়ম। যখন আমরা নির্বাচনে যাব, তখন ম্যানিফেস্টোতে এই বিষয়গুলো থাকবে। জনগণ যদি আমাদের ভোট দেয়, তাহলে আমরা সেসব বিষয় সামনে আনব, পার্লামেন্টে পাস করে দেশের পরিবর্তন ঘটাব। আর যদি ভোট না দেয়, তাহলে সেটি বাদ পড়বে।”

মির্জা ফখরুল বলেন, “আমরা একটা কথা খুব পরিষ্কার করে বলতে চাই, বিএনপি সংস্কারের দল। বিএনপির জন্মই হয়েছে সংস্কারের মধ্য দিয়ে। ১৯৭৯ সালে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন একদলীয় শাসনব্যবস্থা থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য। তখন সব পত্রিকা বন্ধ ছিল, তিনি সেগুলো খুলে দিয়েছিলেন। মানুষের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।”

নির্বাচন ও গণভোট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমরা নির্বাচন করব, নির্বাচন করতে চাই। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণার সঙ্গে আমরা একমত। কিন্তু, আজকে সেই নির্বাচন বানচাল করার জন্য একটি মহল উঠে-পড়ে লেগেছে, তারা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।”

জামায়াতে ইসলামীর উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “যারা এই নিয়ে রাস্তায় নেমে গোলমাল করছেন, তাদের অনুরোধ করব, জনগণকে আর বিভ্রান্ত করবেন না। একসময় আপনারা পাকিস্তানের পক্ষে দাঁড়িয়েছিলেন, মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিলেন। আজকে জনগণ যে নির্বাচন চায়, তার বিরোধিতা করবেন না। এই দেশের মানুষ দেশ বিক্রির রাজনীতি ক্ষমা করে না।”

তিনি আরো বলেন, “আমরা আমাদের মিত্রদের সঙ্গে নিয়ে সরকার গঠন করতে চাই। যাদের সঙ্গে আমরা দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে লড়েছি, একসঙ্গে কাজ করেছি, তাদের নিয়েই আমরা জাতীয় সরকার গঠন করতে চাই। এক্ষেত্রে আমাদের বক্তব্য খুবই স্পষ্ট—আসুন, সবাই মিলে নির্বাচনের সুযোগকে কাজে লাগাই। সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করে জনগণের পার্লামেন্ট, জনগণের সরকার গঠন করি।”

জেএসডি সিনিয়র সহ-সভাপতি তানিয়া রবের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন— সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম স্বপন, এবি পার্টির চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান মঞ্জু, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, গণফোরামের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সুব্রত চৌধুরী প্রমুখ।

ঢাকা/রায়হান/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে মারাত্মক সংকটে তিস্তা নদী
  • ভুল শুধরে জনগণের আস্থা ফেরানোর সুযোগ এই নির্বাচন: আইজিপি
  • ইরান পারমাণবিক স্থাপনাগুলো আরো শক্তিশালী করে পুনর্নির্মাণ করবে
  • সিলেট সীমান্তে বাংলাদেশে ঢুকে খুঁটি উপড়ে ফেলে বিএসএফ, স্থানীয়দের প্রতিবাদ
  • পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনে কর্মকর্তা নিয়োগ, বেতন ৫১,০০০ টাকা
  • জ্বালানি সুবিচার নিশ্চিতে সংগ্রাম, শপথ যুব সংসদের সদস্যদের
  • বন্দরে বিএনপি নেতা তাওলাদের উপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে আল্টিমেটাম
  • জঙ্গি সন্দেহে কলকাতায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশি যুবক
  • বিএনপি ও জামায়াত কে কোন ফ্যাক্টরে এগিয়ে
  • অন্তর্বর্তী সরকার জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছে: ফখরুল