সীমান্তে উত্তেজনার প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ
Published: 19th, January 2025 GMT
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে উত্তেজনার প্রতিবাদ ও দিল্লির আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছে একদল শিক্ষার্থী।
শনিবার (১৮ জানুয়ারি) রাত পৌনে ১১টার দিকে ‘আগ্রাসন বিরোধী শিক্ষার্থী’ ব্যানারে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি চত্বর থেকে শুরু হয়ে হল পাড়া ঘুরে পুনরায় ভিসি চত্বরে এসে শেষ হয়। পরে সেখানে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন তারা।
এ সময় তারা ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’, ‘তুমি কে আমি কে, বাংলাদেশ বাংলাদেশ’ ‘বিএসএফের আগ্রাসন, রুখে দাও জনগণ’, ‘ভারতের গদিতে, আগুন জ্বালো একসাথে’, ‘সীমান্তে হামলা কেন, দিল্লি জবাব চাই’, ‘আমার ভাই আহত কেন, দিল্লি জবাব চাই’, ‘বড়াইবাড়ির হাতিয়ার, গর্জে ওঠো আরেকবার’, ‘সীমান্তে হামলা হলে, রুখে দেবে জনগণ’, ‘আবরারের রক্ত, বৃথা যেতে দেব না’সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।
সমাবেশে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী হাসিব আল ইসলাম বলেন, “আবরারের রক্ত এখনো আমাদের শরীরে বহমান আছে। আমরা আমাদের রক্ত দিয়ে শেখ হাসিনাকে উৎখাত করেছি যে ছিল দিল্লির তাবেদার। এখন কিন্তু ছাত্রজনতার সরকার রয়েছে বাংলাদেশে। এখন বাংলাদেশ যেকোনো আগ্রাসনের জবাব দিতে প্রস্তুত।”
হাসিব আরো বলেন, “দিল্লি যখন পানির ন্যায্য হিস্যা দেয় না, বার বার আমার দেশের মানুষকে সীমান্তে হত্যা করছেন, তখন বোঝা যায় দিল্লি বাংলাদেশের বন্ধু হতে পারে না। ভারত বাংলাদেশের মানুষের বন্ধু হলে পতিত স্বৈরাচারকে জায়গা দেওয়ার দুঃসাহস দেখাত না।”
আইন বিভাগের শিক্ষার্থী রিফাত আহমেদ রেজোয়ান বলেন, “কৃষক আজ ভারতের বিপক্ষে দাঁড়াচ্ছে তাদের জমি রক্ষা করতে। নাগরিক হিসেবে এটি আমাদেরও দায়িত্ব। দেশের মাটির রক্ষা করতে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকব। সীমান্তে ইচ্ছাকৃত অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরির অপচেষ্টা করছে ভারত।”
এ সময় গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত হাসিনাকে ফেরত দেওয়ার দাবি করেন তিনি।
আরেক শিক্ষার্থী এম এ সাইদ বলেন, “ভারতীয় বিএসএফ বাংলাদেশের নিরস্ত্র মানুষের উপর যে নির্যাতন চালায় তা নিন্দনীয়। দিল্লির প্রেয়সীকে এদেশ থেকে তাড়ানোর ক্ষোভ মানুষের উপর ঝাড়ছে তারা। আমাদের সার্বভৌম রাষ্ট্রের উপর ভারত আঙুল তুললে সে আঙুল আমরা ভেঙে দিব।”
শনিবার চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার বিনোদপুর ইউনিয়নের চৌকা ও কিরণগঞ্জ বিজিবি সীমান্ত ফাঁড়ির মাঝামাঝি এলাকায় উত্তেজনা দেখা দেয়। দুপুর থেকে বাংলাদেশ ও ভারতীয় সীমান্তে দুই দেশের নাগরিকেরা জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন। এ সময় ভারতীয় নাগরিকদের হামলায় তিন বাংলাদেশি আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ঢাকা/সৌরভ/ইমন
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বাবুগঞ্জে এবি পার্টির ফুয়াদের বিরুদ্ধে ঝাড়ুমিছিল
বরিশালের বাবুগঞ্জে জনগণকে চাঁদাবাজ আখ্যায়িত করে গণমাধ্যমে বক্তব্য দেওয়ার প্রতিবাদে আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান ফুয়াদের বিরুদ্ধে ঝাড়ু হাতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন স্থানীয় লোকজন। ‘বাবুগঞ্জ-মীরগঞ্জের সর্বস্তরের জনগণের’ ব্যানারে গতকাল বুধবার বিকেলে এ কর্মসূচি পালিত হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল বিকেল সাড়ে চারটার দিকে বাবুগঞ্জ উপজেলার লোহালিয়া গ্রাম থেকে শুরু হওয়া মিছিলটি মীরগঞ্জ ফেরিঘাটে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়। পরে রাতে ওই কর্মসূচির একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
১ মিনিট ৩৬ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, একদল ব্যক্তি ঝাড়ু হাতে আসাদুজ্জামান ফুয়াদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন। মিছিলের সামনে ছিলেন নারীরা। তাঁদের হাতে ছিল ছাড়ু। একজন হ্যান্ডমাইকে স্লোগান দিচ্ছেন, ‘ফুয়াদের দুই গালে, জুতা মারো তালে তালে’, ‘ফুয়াদের ঠিকানা, বাবুগঞ্জে হবে না’।
মুলাদী-বাবুগঞ্জ উপজেলা নিয়ে গঠিত বরিশাল-৩ আসনে এবি পার্টির প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঘোষণা দিয়েছেন আসাদুজ্জামান ফুয়াদ।
৭ ডিসেম্বর বরিশালের বাবুগঞ্জ ও মুলাদী উপজেলার মধ্যবর্তী মীরগঞ্জ সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠান শেষে গণমাধ্যমে বক্তব্য দেন এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান ফুয়াদ। এ সময় সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে নৌপরিবহন উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেনের একটি বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে আসাদুজ্জামান বলেন, ‘মীরগঞ্জ সেতুর ঠিকাদারদের কাছে স্থানীয়রা চাঁদা দাবি করেছে।’ তাঁর এ বক্তব্যে সেখানে উপস্থিত স্থানীয় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। একপর্যায়ে তাঁরা আসাদুজ্জামানের সঙ্গে বাদানুবাদে জড়ান এবং কয়েকজনকে তেড়ে আসতে দেখা যায়। পরে ‘ভুয়া ভুয়া’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন বিক্ষুব্ধ লোকজন।
আরও পড়ুন‘স্থানীয়রা চাঁদা দাবি করেছে’ বলার পর বরিশালে তোপের মুখে এবি পার্টির ফুয়াদ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে আসাদুজ্জামান তাঁর নেতা-কর্মীদের নিয়ে অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেন। বিএনপি নেতা-কর্মীরাও ‘ভুয়া ভুয়া’সহ বিভিন্ন উত্তেজনাকর স্লোগান দিতে দিতে তাঁকে অনুসরণ করেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
ঘটনার পর আসাদুজ্জামানের মন্তব্যের প্রতিবাদে স্থানীয় বিএনপি নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ-সমাবেশ করেন। ক্ষমা না চাইলে বাবুগঞ্জ ও মুলাদী উপজেলায় আসাদুজ্জামানকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হবে বলে তাঁরা ঘোষণা দেন।
এ বিষয়ে বাবুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক সুলতান আহমেদ খান গতকাল রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ‘মীরগঞ্জ এলাকায় এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান ফুয়াদের বিরুদ্ধে স্থানীয় জনগণ একটি মিছিল করেছে। এটা আমরা জেনেছি।’
আরও পড়ুনবাবুগঞ্জের ঘটনায় এক দিনেই বিএনপির ১০ লাখ ভোট কমে গেছে: এবি পার্টির নেতা ফুয়াদ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫এদিকে ওই ঘটনার পর গত সোমবার বরিশাল প্রেসক্লাব ও রিপোর্টার্স ইউনিটিতে পৃথক সংবাদ সম্মেলন করে ঘটনার ব্যাখ্যা তুলে ধরেন আসাদুজ্জামান ফুয়াদ। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনাদের দলের একাংশের আচরণের কারণে প্রতিদিন হাজার হাজার ভোট কমছে। বাবুগঞ্জের ঘটনায় এক দিনেই ১০ লাখ ভোট কমে গেছে। এদের নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে আগামী নির্বাচনে বিএনপিকে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে।’