ভূমি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আলী ইমাম মজুমদার
Published: 20th, January 2025 GMT
খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদারকে ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্ব দিয়েছে সরকার। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সোমবার এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
ভূমি উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ গত ২০ ডিসেম্বর হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। এরপর থেকে এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব কাউকে দেওয়া হয়নি। তবে রুলস অব বিজনেস অনুযায়ী, উপদেষ্টার পদ শূন্য হওয়ার পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে তা প্রধান উপদেষ্টার অধীনে চলে যায়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের গত ১৬ আগস্ট, ২৭ আগস্ট এবং ১০ নভেম্বরের প্রজ্ঞাপনের অনুবৃত্তিক্রমে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদারকে অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার দায়িত্ব অর্পণ করেছেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: উপদ ষ ট উপদ ষ ট মন ত র
এছাড়াও পড়ুন:
সংঘাতে কতটা ভয় আর আতঙ্কে দিন কাটছে আরব ইসরায়েলিদের
‘আমার প্রচণ্ড রাগ হচ্ছিল’—বলছিলেন ৬৭ বছর বয়সী আরব ইসরায়েল কাসেম আবু আল-হিজা।
ইরানের ছোড়া একটা ক্ষেপণাস্ত্র গত শনিবার উত্তর ইসরায়েলের তামরা শহরে কাসেমের বাড়িতে আঘাত হেনেছিল। সিমেন্টের ছাদটা ভেঙে পড়েছিল ঘরের ভেতরেই।
ওই এক হামলাতেই কাসেমের পরিবারের চারজন নিহত হয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, বাড়ির ভেতর থেকে বই, জামাকাপড়, বাচ্চাদের খেলনা, আর দেহের টুকরা অংশগুলো উড়ে এসে রাস্তায় পড়েছিল।
নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ছিলেন কাসেমের মেয়ে ৪৫ বছর বয়সী মানার খাতিব, দুই নাতনি ২০ বছরের শাদা আর ১৩ বছরের হালা আর তাদের ৪১ বছর বয়সী খালা মানাল খাতিব।
তাঁরা সবাই একই সঙ্গে বাড়ির ভেতরেই কংক্রিটের ঢালাই করা একটা ঘরে আশ্রয় নিয়েছিলেন। কিন্তু ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রটা সরাসরি এসে পড়েছিল ওই ঘরেই।
উত্তর ইসরায়েলের যে তামরা শহরে কাসেম ও তাঁর পরিবার থাকতেন, সেখানকার বেশির ভাগ বাসিন্দাই আরব।
ওই চারজনের মৃত্যুর কয়েক মিনিটের মধ্যেই অনলাইনে একটা ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। তাতে দেখা যাচ্ছিল, ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রটা মাথার ওপর দিয়ে উড়ে আসছে।
তামরা শহরের ওপরে যখন মিসাইলটা পড়ল, তখনই ভিডিওতে একটা গলা শোনা গেল, হিব্রুতে কেউ চিৎকার করে বলছে, ‘গ্রামে পড়েছে, গ্রামে পড়েছে।’
এরপর বেশ কয়েকজনকে একসঙ্গে হাততালি দিয়ে গান গাইতে শোনা যাচ্ছিল, ‘তোমাদের গ্রামটা পুড়ে যাক।’
ধরা গলায় কাসেম বলছিলেন, ‘আমার পরিবারে যা ঘটল, সেটা নিয়ে ওরা গান গাইছিল।’ তাঁকে তখন ঘিরে রেখেছিলেন আত্মীয়স্বজন।
ওই ভিডিওতে যে গানটা শোনা যাচ্ছিল, সেই ‘আরববিরোধী’ স্লোগান মাঝেমধ্যেই উগ্র জাতীয়তাবাদী ইহুদিরা গেয়ে থাকে। ওই ভিডিও ইসরায়েলে ভাইরাল হয়ে গেছে, তবে দেশের ভেতরেই ভিডিওটার প্রবল নিন্দাও হচ্ছে।
প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজোগ মন্তব্য করেছেন, ‘ভয়াবহ ও লজ্জাজনক।’
আরব ইসরায়েলিদের নেই সরকারি বাংকারওই ঘটনায় কাসেম ও তামরার বৃহত্তর আরব সমাজের ক্ষুব্ধ হওয়ার পেছনে আরও কারণ আছে।
শুধু ওই এলাকায় নয়, ইসরায়েলের অন্যান্য আরব–অধ্যুষিত এলাকায় প্রায় ৩৮ হাজার মানুষের জন্য কোনো সরকারি বাংকার নেই।
কাছাকাছি ইহুদি–অধ্যুষিত শহর কারমিয়েলের জনসংখ্যা প্রায় ৫৫ হাজার। সেখানে ১২৬টি সরকারি বাংকার রয়েছে।
বিষয়টি দেখলেই দুই এলাকার ফারাকটা চোখে পড়ার মতো। তামরার বাসিন্দারা দীর্ঘদিন ধরেই এই বৈষম্য নিয়ে সতর্ক করে যাচ্ছেন।
ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় দেশটির তৃতীয় বৃহত্তম শহর হাইফা থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার পূর্ব দিকে তামরা শহরের অবস্থান। আবার লেবাননের সীমান্ত থেকে শহরটির দূরত্ব মাত্র ২৫ কিলোমিটার। তাই ইরান–সমর্থিত হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীর ছোড়া রকেট এ শহরে আঘাত হানতেই পারে।
হিজবুল্লাহর ছোড়া একটি রকেটের আঘাতে গত বছরের অক্টোবরে এক নারী গুরুতর আহত হয়েছিলেন।
পুরো ইসরায়েলেই মোট জনসংখ্যার এক–চতুর্থাংশ উপযুক্ত বাংকারে আশ্রয় নেওয়ার সুযোগ পান না। তবে অ-ইহুদি এলাকায় সংখ্যাটা বেড়ে হয়ে যায় মোট বাসিন্দার প্রায় অর্ধেক। এ তথ্য ২০১৮ সালে দিয়েছিল ইসরায়েলের রাষ্ট্রীয় প্রধান হিসাবরক্ষকের দপ্তর।
চিন্তক প্রতিষ্ঠান ইসরায়েল ডেমোক্রেসি ইনস্টিটিউটের লিতাল পিলার বলছিলেন, অনেক দশক ধরে আরব–অধ্যুষিত এলাকার স্থানীয় কর্মকর্তারা নানা খাতেই কম সরকারি অনুদান পান। এসব খাতের মধ্যে রয়েছে বোমা বা রকেট হামলার মতো জরুরি প্রয়োজনের জন্য প্রস্তুতির খাত।
পিলার বলেন, আবার যেসব জায়গায় বাংকার আছে, সেগুলোর রক্ষণাবেক্ষণও খুব খারাপ, দীর্ঘদিন থাকার উপযুক্ত নয়।
বিবিসি বিষয়টি নিয়ে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মন্তব্য জানতে চেয়েছিল। তবে কোনো জবাব পাওয়া যায়নি।
ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় বিধ্বস্ত তিনতলা ভবন। ১৫ জুন, তামরা