শেরপুরে বিনামূল্যে বিতরণের ৯ হাজার পাঠ্যবই জব্দ
Published: 23rd, January 2025 GMT
নতুন বছরের জানুয়ারি মাস শেষ হতে চলেছে। মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা যখন বই না পেয়ে পড়াশোনা করতে পারছে না। ঠিক সেই সময় শিক্ষা বিভাগের কিছু অসৎ কর্মকর্তা ও কর্মচারী অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণির পাঠ্যবই চড়া দামে বিক্রি করে দিচ্ছেন। বিক্রি হওয়া সেই বই ধরা পড়েছে শেরপুরে।
বৃহস্পতিবার ভোরে ৯ হাজার বই জব্দ করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার মাইদুল হোসেন (৩৫) কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার কেরুয়ারচরের জনৈক হারেজ আলীর ছেলে। অনেক রাঘব-বোয়াল এ ঘটনায় জড়িত বলে সন্দেহ করছে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এনএসআই (জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা) জানতে পারে কুড়িগ্রাম থেকে নতুন পাঠ্যবই ভর্তি একটি ট্রাক শেরপুর হয়ে রাজধানী ঢাকা যাচ্ছে। বিষয়টি তারা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করেন।
বুধবার গভীর রাতে সদর থানার পুলিশ সদর উপজেলার লছমনপুর ইউনিয়নের শেরপুর-জামালপুর আঞ্চলিক সড়কের কুসুমহাটি এলাকায় অবস্থান নেয়। বৃহস্পতিবার ফজরের দিকে ধাতিয়াপাড়া এলাকায় ট্রাকটি আটক করে পুলিশ (ট্রাক নং- ঢাকা মেট্রো ড-১১-৮৩৯২)। ওই ট্রাকে তল্লাশি করে বিপুল পরিমাণ নতুন পাঠ্যবই উদ্ধার করা হয়। এ সময় চালকসহ দুইজনকে আটক করা হয়। পরে ট্রাকসহ বই শেরপুর সদর থানায় নিয়ে আসা হয়। ট্রাক থেকে বইগুলো নামিয়ে দেখা যায় সেখানে অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণির গণিত, বাংলা ও ইংরেজি বিষয়ের ৯ হাজার বই রয়েছে। এ সময় আটককৃতরা স্থানীয়দের জানায়, ঢাকায় একটি বেসরকারি বিদ্যালয় বইগুলো ক্রয় করেছিল। সেখানেই তারা বই নিয়ে যাচ্ছিল।
এদিকে বই বহন করা ট্রাকের চালক সজল মিয়া দাবি করেন, রৌমারী উপজেলার বাজার এলাকায় পাঠ্যবই পাচারকারী দলের সদস্যরা তার ট্রাকে বই তুলে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার জন্য চুক্তি করেন। এ সময় চালানপত্র চাইলে তারা দিতে অস্বীকার করেন। এতে তার সন্দেহ হয়। বিষয়টি তিনি স্থানীয় গোয়েন্দা সংস্থার এক কর্মকর্তাকে জানান। পরে তারা সদর থানার পুলিশ নিয়ে ট্রাকসহ বই জব্দ করেন।
সকালে পুলিশ সুপার আমিনুল ইসলাম থানায় আসেন। এ সময় তিনি বলেন, বিষয়টি গুরুত্বের সাথে তদন্ত করছে পুলিশ। সরকারের ভাবমূর্তি যারা নষ্ট করতে চায় তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাচারের সঙ্গে জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে বলে তিনি সবাইকে আশ্বস্ত করেন।
তিনি আরও বলেন, ঢাকায় এক ব্যক্তির কাছে বইগুলো নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। তদন্তের স্বার্থে তার নাম বলা যাচ্ছে না। এ ঘটনায় আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: প ঠ যবই আটক প ঠ যবই এ সময়
এছাড়াও পড়ুন:
ইসরায়েলের অংশগ্রহণের প্রতিবাদে ইউরোভিশনের ট্রফি ফেরত দিচ্ছেন সুইস সংগীতশিল্পী নেমো
আন্তর্জাতিক গানের প্রতিযোগিতা ইউরোভিশনে ইসরায়েলের অংশগ্রহণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে সুইজারল্যান্ডের সংগীতশিল্পী নেমো নিজের পুরস্কার ফেরত দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। গাজা উপত্যকায় ইসরায়েল অনবরত যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার পরও দেশটিকে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে দেওয়ায় ক্ষোভ জানিয়েছেন তিনি। গত বৃহস্পতিবার নেমো পুরস্কার ফিরিয়ে দেওয়ার ঘোষণা দেন।
নেমো তাঁর গাওয়া ‘দ্য কোড’ গানটির জন্য ২০২৪ সালে ইউরোভিশন পুরস্কার জিতেছেন। তাঁর মতে, ইউরোভিশন প্রতিযোগিতায় ইসরায়েলের অংশগ্রহণের বিষয়টি প্রতিযোগিতার আদর্শিক জায়গার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। আর সে আদর্শিক জায়গাটি হলো সব মানুষের অন্তর্ভুক্তি ও সবার মর্যাদা বজায় রাখা।
ইউরোভিশনের আয়োজক সংস্থা ইউরোপিয়ান ব্রডকাস্টিং ইউনিয়ন (ইবিইউ)–এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদী পদক্ষেপের সর্বশেষ সংযোজন এটি। গত সপ্তাহে ইবিইউ ইসরায়েলকে আগামী বছর অস্ট্রিয়ায় অনুষ্ঠেয় প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার অনুমতি দেওয়ার পর পাঁচটি দেশ প্রতিযোগিতা থেকে সরে গেছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনস্টাগ্রামে দেওয়া এক পোস্টে নেমো বলেন, ‘ইউরোভিশন বলে যে তারা ঐক্য, অন্তর্ভুক্তি ও সব মানুষের মর্যাদার পক্ষে দাঁড়ায়। এই মূল্যবোধগুলোর কারণেই এ প্রতিযোগিতাটি আমার কাছে এত অর্থবহ। কিন্তু যখন কিনা জাতিসংঘের স্বাধীন আন্তর্জাতিক তদন্ত কমিশন ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডকে (অধিকৃত ফিলিস্তিন অঞ্চল, পূর্ব জেরুজালেম ও ইসরায়েল বিষয়ক তদন্ত) গণহত্যা হিসেবে চিহ্নিত করেছে, তখন বোঝা যায়, ওই আদর্শগুলোর সঙ্গে ইবিইউর নেওয়া সিদ্ধান্তগুলো স্পষ্টত সাংঘর্ষিক।’
আরও পড়ুনগাজায় ইসরায়েলের জাতিহত্যামূলক যুদ্ধের প্রতিবাদে ইউরোপজুড়ে লাখো মানুষের বিক্ষোভ৩০ নভেম্বর ২০২৫ইসরায়েল বারবার গণহত্যার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। ইসরায়েলের দাবি, তারা আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজা থেকে সীমান্ত পেরিয়ে হামাসের নেতৃত্বে হামলার পর নিজেদের আত্মরক্ষার অধিকার তাদের রয়েছে। ওই হামলার কারণেই এই যুদ্ধের সূচনা হয়েছে।
গত বুধবার আইসল্যান্ডের সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম আরইউভির খবরে বলা হয়েছে, দেশটি ২০২৬ সালে অনুষ্ঠেয় ইউরোভিশন গানের প্রতিযোগিতায় অংশ নেবে না। গাজায় অব্যাহত ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে এমন পদক্ষেপ নিয়েছে দেশটি। এর আগে স্পেন, নেদারল্যান্ডস, আয়ারল্যান্ড ও স্লোভেনিয়াও একই ধরনের ঘোষণা দেয়।
আরও পড়ুনইসরায়েলিদের বাধায় নিজেদের জমিতে যেতে পারেন না ফিলিস্তিনিরা, বিপর্যয়ে জলপাইশিল্প০৪ ডিসেম্বর ২০২৫