রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে কথা বলতে প্রস্তুত। তবে এর জন্য প্রথমে ওয়াশিংটনের কাছ থেকে সংকেত আসতে হবে। শুক্রবার ক্রেমলিন এ তথ্য জানিয়েছে।

ইউক্রেন সংঘাত দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের সম্পর্ককে শীতল যুদ্ধের পর থেকে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নিয়ে গেছে। ট্রাম্প বারবার ‘চুক্তি’ করে এই লড়াই শেষ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার তিনি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ‘অবিলম্বে’ তিনি পুতিনের সাথে দেখা করবেন এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি আলোচনা করতে চান।

 ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ ট্রাম্পের প্রস্তাব সম্পর্কে বলেছেন, “পুতিন প্রস্তুত। আমরা সংকেতের জন্য অপেক্ষা করছি।”

পেসকভ অবশ্য জানিয়েছেন, দুই নেতার মধ্যে সম্ভাব্য বৈঠক সম্পর্কে তিনি আর কোনো মন্তব্য করতে পারবেন না। কারণ এ বিষয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করা ‘মুশকিল।’

ট্রাম্প রাশিয়াকে হুমকি দিয়েছেন যে, যদি তারা প্রায় তিন বছরের আক্রমণাত্মক কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে রাজি না হয়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র আরো কঠোর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে। এছাড়া বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমানোর মাধ্যমে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করা যাবে বলে মন্তব্য করেছেন ট্রাম্প।

বৃহস্পতিবার দাভোসে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামে বক্তৃতা দিতে গিয়ে ট্রাম্প বলেছেন, তিনি সৌদি আরব এবং ওপেককে তেলের দাম কমাতে বলবেন। ‘যদি দাম কমে যায়, তাহলে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ অবিলম্বে শেষ হয়ে যাবে।’

ট্রাম্পের এই দাবি প্রত্যাখ্যান করে ক্রেমলিন বলেছে, “এই সংঘাত তেলের দামের উপর নির্ভর করে না।”

পেসকভ বলেন, “এই সংঘাতের মূল কারণ ছিল রাশিয়ার জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি, ইউক্রেনে বসবাসকারী রাশিয়ানদের জন্য হুমকি এবং আমেরিকান ও ইউরোপীয়দের রাশিয়ার উদ্বেগ শোনার ইচ্ছার অভাব ও সম্পূর্ণ অস্বীকৃতি।”

ঢাকা/শাহেদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইউক র ন র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন

টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।

এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।

গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।

প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ