রংপুর রাইডার্স ছাড়া কোনো দলের কাছে ম্যাচ হারেনি ফরচুন বরিশাল। ১০ ম্যাচ খেলে ৮টিতে জিতে টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে দলটি। পয়েন্ট টেবিলে সেরা দুইয়ে থাকার চেয়েও বরিশালের জন্য স্বস্তির টিম কম্বিনেশন। অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর একটি ব্যাটিং লাইনআপ দাঁড় করাতে পেরেছে দলটি। 

বিদেশিদের মধ্যে ডেভিড মালান ও মোহাম্মদ নবি একাদশের নিয়মিত খেলোয়াড়। বিপিএলের পুরো সময়ের জন্য চুক্তিবদ্ধ হওয়ায় কন্ডিশন এবং দলের সঙ্গে ভালোভাবে মানিয়েও নিতে পেরেছেন তারা। গতকালের ম্যাচের সেরা ডেভিড মালান যেমন বলেন, ‘বাংলাদেশে ৭ বছর ধরে খেলছি। আমার ক্যারিয়ারের অর্ধেকটা কেটেছে এখানে। সরকারের উচিত পাসপোর্ট দেওয়া।’ 

এই যে গ্যালারিতে ‘লাভ ইউ মালান’ লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়ে সমর্থকরা হাজির হন, তা নিয়মিত খেলার কারণে। মিরপুরের কন্ডিশন জয় করে গতকাল খুলনার বিপক্ষে ৬৩ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন তিনি। মূলত তাঁর কারণেই ৫ বল হাতে রেখে ৫ উইকেটে ম্যাচ জিতেছে বরিশাল।

একাদশ বিপিএলে দলের সক্ষমতা বিবেচনা করা হলে খুলনা টাইগার্স সেরা চারে থাকে। লিগের শুরুটাও ভালো করেছিল তারা। কিন্তু মাঝে ছন্দ হারিয়ে সুপার ফোরে খেলা নিয়ে দুশ্চিন্তায়। ১০ ম্যাচে ৮ পয়েন্ট নিয়ে পঞ্চম স্থানে থাকা খুলনা শেষ দুটি ম্যাচ খেলবে রংপুর ও ঢাকা ক্যাপিটালের বিপক্ষে। সেদিক থেকে দেখলে সুপার ফোরে খেলার সম্ভাবনা শেষ হয়ে যায়নি দলটির।

গতকাল খুলনা লড়াই করেছে ভালোই। ১৮৭ রান করেছে ৫ উইকেটে। মেহেদী হাসান মিরাজ ১৮ বলে ২৯, মোহাম্মদ নাঈম ২৭ বলে ৫১, আফিফ হোসেন ৩২ রান করায় বড় সংগ্রহ পায় দল। বরিশালের চ্যালেঞ্জ ছিল রান তাড়া করায়। কারণ গত কয়েকটি ম্যাচে ছোট রান তাড়া করেছেন তামিম ইকবালরা। খুলনার বিপক্ষে ১৮৮ রান তাড়া করে জেতায় আত্মবিশ্বাসটা বাড়বে বলে মনে করেন মালান।

বরিশাল খুলনার বিপক্ষে ফিরতি ম্যাচে পেস বোলার এবাদত হোসেনকে খেলায়। বিপিএলে প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমে ভালোই বোলিং করেছেন এ ফাস্ট বোলার। ডেথ ওভারেও বল করেছেন তিনি। ৪ ওভারে ৪৫ রান দিয়ে ১ উইকেটও নিয়েছেন তিনি। ফাহিম আশরাফ ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছেন। ২ উইকেট পেয়েছেন তিনি। ব্যাট হাতেও ক্যামিও ইনিংস খেলেছেন তিনি। ৬ বলে ১৮ রান করেন তিনি। মাহমুদউল্লাহ, মুশফিকুর রহিমও খেলেছেন ঝোড়ো ইনিংস।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব প এল উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস

স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।

মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’

সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।

বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।

অনাহারে মৃত্যু ১৫৪

গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।

গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।

ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩

জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।

বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।

গাজায় স্টিভ উইটকফ

শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’

গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ