ঘন কুয়াশায় ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে দুর্ঘটনার কবলে ৬ গাড়ি, আহত ২৫
Published: 1st, February 2025 GMT
ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে ঘন কুয়াশার কারণে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ৬টি গাড়ি দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে। এতে প্রাণহানির কোনো ঘটনা না ঘটলেও অন্তত ২৫ যাত্রী আহত হয়েছেন।
শনিবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে রংপুরের মিঠাপুকুরে রংপুর-ঢাকা মহাসড়কে গড়ের মাথা মোড় এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।
দুর্ঘটনা কবলিত পরিবহনগুলোর মধ্যে দুটি যাত্রীবাহী বাসসহ ট্রাক, পিকআপ ও কাভার্ডভ্যান রয়েছে।
গাড়িগুলো ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে নেওয়ার কাজ চলছে বলে জানিয়েছে বড়দরগাহ হাইওয়ে পুলিশ।
হাইওয়ে পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা এসব পরিবহন রংপুর-ঢাকা মহাসড়কের মিঠাপুকুরের গড়ের মাথায় কুয়াশার কারণে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। এসময় দুটি বাস, একটি ট্রাক, পিকআপ এবং কাভার্ডভ্যান একে অপরকে ধাক্কা দেয়। এতে কয়েকটি পরিবহনের সামনের গ্লাস ভেঙে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ দুর্ঘটনায় অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে কয়েকজনকে গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
বড়দরগাহ হাইওয়ে পুলিশের ইনচার্জ মনিরুজ্জামান বলেন, দুর্ঘটনাকবলিত পরিবহনগুলো সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। আহত কয়েকজন যাত্রীকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
তিনি জানান, দুর্ঘটনাকবলিত মহাসড়কের উপর দিয়ে প্রতিদিন বালু ও মাটিবাহী পরিবহন চলাচল করে। ঘটনাস্থলে মাটি পড়ে সড়কটি ঘন কুয়াশায় পিচ্ছিল হয়ে পড়ে। একইসঙ্গে কুয়াশায় দৃষ্টিসীমা কমে আসায় হয়ত চালকরা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একে একে ধাক্কা দেয়।
অন্যদিকে, রংপুরে বইছে হিমেল হাওয়া। সেইসঙ্গে রয়েছে ঘন কুয়াশা। ফলে শীতের দাপট বেড়েছে। শীতের কারণে মানুষজন কাবু হয়ে পড়েছেন। মাঘে প্রকৃতির এমন বৈরী আচরণে বৃষ্টির মত শিশির পড়ছে। কুয়াশার কারণে সড়কে যানবাহন চলছে হেড লাইট জ্বালিয়ে, ঘটছে দুর্ঘটনা।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সড়ক দ র ঘটন ঘন ক য় শ দ র ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
ঘুমের ওষুধ খাইয়ে স্বামীকে হত্যা, ফাঁদ পেতে ধরা হলো প্রেমিককে
পাবনার চাটমোহর উপজেলার কাটেঙ্গা গ্রামে ক্যানসার আক্রান্ত স্বামীকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্ত্রীর বিরুদ্ধে।
দশদিন পর ঘটনা জানাজানি হলে অভিযুক্ত স্ত্রী শারমিন খাতুন ও তার প্রেমিককে আটক করে পুলিশ। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেলে পরিবারের সদস্যরা পুলিশকে ঘটনাটি জানায়।
এর আগে গত ৩০ নভেম্বর চাটমোহরের দক্ষিণপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। মৃত স্বামী শের আলী (৩৫) দক্ষিণপাড়া গ্রামের ভোলা প্রামানিকের ছেলে। শারমিন খাতুন (২৬) কাটেঙ্গা গ্রামের শাহ আলমের মেয়ে। এবং তার প্রেমিক অনিক (২২) একইগ্রামের মহাজন সরকারের ছেলে।
স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত ৩০ নভেম্বর শের আলীর মৃত্যু হয়। তিনি ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন। তার মৃত্যুর পর বিষয়টি স্বাভাবিক হিসেবে শুরুতে মেনে নিলেও সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে মৃত্যুকে ঘিরে পরিবারের সদস্য ও স্থানীয়দের মধ্যে নানা প্রশ্ন দেখা দেয়।
জানা যায়, শের আলীর চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও ইউটিউবারদের মাধ্যমে চিকিৎসা সহায়তার অর্থ সংগ্রহ করা হয়েছিল। অভিযোগ রয়েছে, সেই অর্থের একটি বড় অংশ শারমিন অনিককে দিয়েছেন।
মৃত শের আলীর ফুপাতো ভাই এনামুল হোমেনের দাবি, শারমিন ও অনিকের মধ্যে ফেসবুক মেসেঞ্জারে হওয়া কথোপকথন ঘেঁটে টাকা লেনদেনের একাধিক তথ্য পাওয়া গেছে। সেখান থেকেই প্রথম সন্দেহের সূত্রপাত।
এরপর ঘটনার সত্যতা যাচাই করতে পরিবারের সদস্যরা কৌশল অবলম্বন করেন। শারমিনের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন থেকে অনিককে টাকা দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে আসতে বলে মেসেজ পাঠানো হয়। অনিক এই ফাঁদে পা দেন।
শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে অনিকে টাকা নিতে এলে স্থানীয়রা তাকে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদে অসংলগ্ন বক্তব্য ও পরস্পরবিরোধী তথ্য দিলে সন্দেহ আরও ঘনীভূত হয়। পরে অনিক ও শারমিন স্বীকার করেন, প্রায় চার মাস ধরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে।
শারমিন এ সময় জানান, গত ৩০ নভেম্বর একসঙ্গে দশটি ঘুমের ওষুধ শের আলীকে তিনি খাইয়েছিলেন। এতে শের আলীর শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটে এবং কিছু সময়ের মধ্যেই তার মৃত্যু হয়।
শের আলীর মা শিরীনা খাতুন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘‘আমার অসুস্থ ছেলেকে ওর বউ ঘুমের ওষুধ খাইয়েছে। সে সহ্য করতে না পেরে অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে এসে দেখি আমার ছেলে আর বেঁচে নেই। আমি এর দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।’’
চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাম সরোয়ার হোসেন বলেন, ‘‘মৃত ব্যক্তির পরিবারে পক্ষ থেকে কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি বা মামলা করেনি। যেহেতু ঘটনাস্থল থেকে দুজনকে আটক করা হয়েছে, সেই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ আইনগত প্রক্রিয়া শেষে তাদের পাবনা আদালতে সোপর্দ করেছে।’’
ঢাকা/শাহীন//