সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেছেন, “গণমাধ্যমে একটা সংবাদ ভুল–বোঝাবুঝি সৃষ্টি করছে। পুলিশের এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বলা হচ্ছে, বই ছাপানোর আগে বাংলা একাডেমি বা পুলিশকে পড়তে দেওয়া উচিত। এটা অবিশ্বাস্য, এটা হাস্যকর। আমাদের সরকারের নীতিমালার আশপাশেই নেই।”

শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার চত্বরে জাতীয় কবিতা উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, “সরকার মত প্রকাশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে। সেটা যদি আমাকে গালাগালি করেও হয়, এতে কিছু যায় আসে না। আর বই প্রকাশ সেন্সর করব, এটা হাস্যকর। এই ভুল–বোঝাবুঝি এখানেই দূর করতে চাই। অন্তর্বর্তী সরকারের বই সেন্সরের পরিকল্পনা নেই। ওই পুলিশ কর্মকর্তা যদি বলে থাকেন, সেটা তিনি তার ব্যক্তিগত ভাবনার কথা বলেছেন। এটার সঙ্গে আমরা একমত নই।”

আরো পড়ুন:

বইমেলা শুরু, এখনো চলছে সাজসজ্জা

অমর একুশে বইমেলা উদ্বোধন করলেন প্রধান উপদেষ্টা

বাংলা একাডেমি পুরস্কার নিয়ে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, “বাংলা একাডেমির পুরস্কারের সঙ্গে মন্ত্রণালয়ের যোগাযোগ থাকে না। তারা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান। কিন্তু স্বায়ত্তশাসনের সুযোগের অপব্যবহার করে ফ্যাসিবাদের দোসর ঢুকে গেছে। এটা নিয়ে অনেক অভিযোগ উঠেছে যে কিছু কিছু মানুষ নিজেদের পছন্দের প্রতিফলন ঘটিয়েছেন। তখন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব হয় বাংলা একাডেমিকে জিজ্ঞেস করা, কী হয়েছে। মানে খতিয়ে দেখা।”

উপদেষ্টা বলেন, “একাডেমির পুরস্কার কমিটির সভাতেই সিদ্ধান্ত হয় স্থগিত করার এবং কেন ঝামেলা হয়েছে, তা দেখা। সেই সিদ্ধান্ত একাডেমির মহাপরিচালক আমাকে জানালে আমি জনগুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় তা ফেসবুকে প্রকাশ করি। তার মানে, আমি সিদ্ধান্ত দিইনি।”

পুরস্কার প্রক্রিয়ার মধ্যেই ঝামেলা আছে জানিয়ে সংস্কৃতি উপদেষ্টা বলেন, “এখানে ৩০ জন ফেলো নমিনেশন দেন। এই ফেলোরা আগে যারা পুরস্কার পেয়েছেন, তারা। গত ১৬ বছরে যারা পেয়েছেন তারা এবং সদস্য তারা বিশেষ মতাদর্শের মানুষের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। পুরস্কার কমিটি নমিনেশন খাম সভায় খুলে এক ঘণ্টার মধ্যে নাম ঘোষণা করবে। নমিনেশনে দুর্নীতি হয়েছে বলে যে অভিযোগ, তা উড়িয়ে দেওয়া যায় না যে তারা প্রভাবিত করেছেন।”

মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, “কমিটির একজন সদস্য, যাদের নিয়ে বিতর্ক হয়েছে, ছড়ার নামে প্রোপাগান্ডা লিখেছেন, তাদের বই পড়তে চেয়েছেন। কিন্তু তাকে বলা হয়েছে, এটা নিয়ম নেই; অর্থাৎ কী লিখেছেন, তা পড়ার সুযোগ নেই। মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত হিসেবে বলেছি, বাংলা একাডেমির পরিচালনপদ্ধতি, নীতিমালা, জবাবদিহি, কারা ফেলো, সদস্য, স্বায়ত্তশাসনের আড়ালে দুর্নীতি হয় কি না, এ জন্য সংস্কার কমিটি করব। ইনক্লুসিভ কমিটি হবে। ঢেলে সাজানো হবে। এটা স্থবির প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে, নতুন চিন্তার সঙ্গে যোগাযোগ নেই। এটা দূর করতে হবে।”

ঢাকা/রায়হান/এসবি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব ল এক ড ম বইম ল বই এক ড ম র উপদ ষ ট

এছাড়াও পড়ুন:

এক ঘরে দুই পীর হইতে পারে না: বদিউল আলম মজুমদার

নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব অনুযায়ী, একই সংসদীয় আসনে পুরুষ ও নারী—দুজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি থাকলে সেটা কতটুকু কার্যকর হবে, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন নির্বাচন সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার। তিনি বলেন, ‘দ্বৈত প্রতিনিধিত্ব হলে এর সমস্যা হইল, ওই যে আমাদের গ্রামবাংলায় যে কথা আছে, এক ঘরে দুই পীর হইতে পারে না।’

আজ রোববার বিকেলে রাজধানীর ডেইলি স্টার ভবনে ‘নারীর ক্ষমতায়নে সংসদে সরাসরি ভোটে নারী প্রতিনিধিত্ব নির্বাচন: প্রয়োজনীয়তা, চ্যালেঞ্জ ও সমাধান’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

বদিউল আলম মজুমদার বলেন, বর্তমান যে নির্বাচনপদ্ধতি, সেখানে অনেক সংসদীয় আসনেই সংসদ সদস্যরা নারী সংসদ সদস্যদের যেতেই দেন না। তিনি বলেন, দৈত্ব প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতি কার্যকর হবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।

সংরক্ষিত নারী আসন ১০০টি করা হলে ভয়াবহ মনোনয়ন–বাণিজ্য হবে বলেও মন্তব্য করেন বদিউল আলম মজুমদার। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন সংস্কার কমিশনের পক্ষ থেকে যে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, তার মাধ্যমে সারা দেশে একঝাঁক নারী নেতৃত্ব বের হয়ে আসবে। একই সঙ্গে ভবিষ্যতে সংরক্ষণপদ্ধতির প্রয়োজনীয়তা থাকবে না।

শামা ওবায়েদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ