টলিউডের তুমুল জনপ্রিয় জুটি দেব-শুভশ্রী। মাত্র ছয়টি সিনেমায় একসঙ্গে অভিনয় করা এই জুটির জনপ্রিয়তার মূল কারণ কী?
‘‘এই প্রশ্নটা দর্শককে করা উচিৎ। দর্শক জুটি তৈরি করেন। তারাই ভালো বলতে পারবেন। আজকে শুভশ্রীর আলাদা একটা সংসার আছে। তার জায়গায় সে খুশি। আমিও আমার জায়গায় খুশি। তা সত্ত্বেও যে আজও দেব-শুভশ্রী জুটি সেলিব্রেশন হচ্ছে, কেন হচ্ছে- আমরা নিজেরাই জানিনা।’’—সম্প্রতি সঙ্গীত বাংলাকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে দেব এসব কথা বলেছেন। তাকে প্রশ্ন করা হয়েছিলো, কেন দেব-শুভশ্রী জুটি এতো জনপ্রিয়। উত্তরটা দেব দর্শকের কাছে জানতে চেয়েছেন।
দেব মনে করেন উত্তরটা হয়তো শুভশ্রীর কাছেও আছে।
আরো পড়ুন:
ধূমকেতুর জন্য রাজের প্রতীক্ষা শেষ
এক মঞ্চে দুই প্রাক্তন: রুক্মিণী-রাজকে নিয়ে নোংরা মন্তব্য, মুখ খুললেন দেব
দেব ওই সাক্ষাৎকারে আরও বলেন, ‘‘ আমার মনে হয় আমরা পঞ্চাশ বছর পরেও দর্শকের সামনে এলে এই সেলিব্রেশনটাই হতো। আমার মনে হয় শুভশ্রী ভালো করে এই উত্তরটা দিতে পারবে।’’
দেবের বিশ্বাস দর্শক এই জুটিকে শুধু ভালোবাসে না, সেলিব্রেটও করে।
তিনি বলেন, ‘‘এ শুধু ভালোবাসে তা নয়। তারা সেলিব্রেট করে। এটা সেলিব্রেশন।’’
উল্লেখ্য, টালিউডের এই জনপ্রিয় জুটির দীর্ঘ এক দশক পর আবারও এক ফ্রেমে পেয়ে আনন্দ প্রকাশ করেছেন দর্শক। বহু প্রতীক্ষিত ছবি ‘ধূমকেতু’ দিয়ে পর্দায় ফিরছেন তারা। দীর্ঘ ৯ বছর ধরে মুক্তি আটকে থাকা এই সিনেমাটি মুক্তির পর থেকেই প্রশংসা পাচ্ছে।
ঢাকা/লিপি
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
এন্নিও মোররিকোনে, শোনাতেন ছুটন্ত ঘোড়ার খুরের সুর
বাংলা সিনেমার এক টিপিক্যাল দৃশ্য দিয়ে শুরু করা যাক। ধরলাম, সিনেমার নায়ক জসিম। পাহাড়ের পাদতলে ঘোড়া ছুটিয়ে তিনি ছুটে যাচ্ছেন ভিলেন জাম্বুকে পাকড়াও করতে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক বাজছে। এক ভুতুড়ে-রহস্যময় সুর। ড্রামের মৃদু তালে তালে ঠোঁটের শিস। ট্রাম্পেটের ঢেউ। কখনো সেই সুর মিলিয়ে যাচ্ছে হ্রেষায়, কখনো খুরের টগবগে (সুরকে যদি ভাষায় প্রকাশ করা যেত!)। ক্ষণে ক্ষণে গা শিউরে উঠছে দৃশ্য ও সুরের পরম্পরায়, ঘটনার উত্তেজনায়। কিন্তু তখন কি জানতাম, বাংলা সিনেমায় এমন জাদুকরি সুর নেওয়া হয়েছে ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’ থেকে!
কিংবদন্তি ইতালিয়ান কম্পোজার প্রয়াত এন্নিও মোররিকোনের এই ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর বিশ্ব সিনেমার জগতে অনন্য হয়ে থাকবে সব সময়। তেমনি ‘স্পেগেত্তি ওয়েস্টার্নের’ স্রষ্টা সার্জিও লিওনের ‘ডলার্স ট্রিলজি’। ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’র শেষ দৃশ্যে কবরস্থানে যখন ত্রিমুখী হয়ে বন্দুক হাতে ‘ম্যান উইথ নো নেম’ (ক্লিন্ট ইস্টউড), ‘টুকো’ (এলি ওয়ালাচ) ও ‘অ্যাঞ্জেল আইস’ (লি ফন ক্লিফ) দাঁড়ায়, তখন ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজতে থাকে সেই বিখ্যাত সাসপেন্স-থ্রিলারমাখা সুর। সেই সুরের কথাই বলেছি মূলত শুরুতে। মোররিকোনের মিউজিক কেবল ঢালিউডে নয়; বলিউডের বহু চলচ্চিত্রেও হুবহু ব্যবহার করা হয়েছে। ‘ডলার্স’ সিরিজসহ লিওনের আরও দুই মাস্টারপিস ছবি ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন ওয়েস্ট’ ও ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন আমেরিকা’র মিউজিকও কম্পোজ করেন মোররিকোনে।
চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না!চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না! এখন দর্শক কেবল পর্দার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বসে থাকেন না; কানকেও কাজে লাগান সিনেমাবোধের জন্য। কাহিনিকে যদি আমার শরীর ধরি, তবে অভিনয় হচ্ছে সিনেমার প্রাণ। আর সংগীত যেন এই দুইয়ের সংযোগস্থল। কাহিনি ও অভিনয়কে আরও বেগবান করে তোলে সংগীত।
এন্নিও মোররিকোনে (১০ নভেম্বর ১৯২৮—৬ জুলাই ২০২০)