লতা হারবালের চেয়ারম্যান কারাগারে
Published: 4th, February 2025 GMT
সৎ মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় লতা হারবালের চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী ফাহিমকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৬ এর বিচারক মোছা. কামরুন্নারের আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
মঙ্গলবার মামলায় চার্জশিট গ্রহণের তারিখ ধার্য ছিল। আইয়ুব আলী ফাহিম চার্জশিট দাখিল পর্যন্ত জামিনে ছিলেন। চার্জশিট আসায় আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন তিনি। তার পক্ষে মাসুদ আহমেদ তালুকদার জামিন চেয়ে শুনানি করেন। বাদীপক্ষে আনোয়ারুল ইসলাম জামিনের বিরোধিতা করেন।
উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী আনোয়ারুল ইসলাম জানিয়েছেন, আদালত মামলার চার্জশিট গ্রহণ করেছেন। আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি চার্জ শুনানির তারিখ ধার্য করা হয়েছে।
সৎ মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে ২০২৩ সালের ৫ ডিসেম্বর আইয়ুব আলী ফাহিমের বিরুদ্ধে রাজধানীর ধানমন্ডি থানায় মামলা করা হয়।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মামলার বাদী অর্থাৎ ভুক্তভোগী নারী আইয়ুব আলী ফাহিমের সৎ মেয়ে। বাদীর বয়স যখন আট বছর, তখন তার মায়ের বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে। পরে বাদীর মায়ের সঙ্গে ফাহিমের বিয়ে হয়। ২০১৪ সালে তাদের বিচ্ছেদ হয়। এরপর বাদীর মা যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান। বাদীর বাংলাদেশে বিয়ে হয়। তবে, তারও বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে। বাদীর এক ছেলে সন্তান আছে। ২০২২ সালের ৩০ মার্চ রাতে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে এবং শিশু সন্তানকে হত্যার হুমকি দিয়ে সৎ মেয়েকে ধর্ষণ করেন আইয়ুব আলী ফাহিম। এরপর প্রায় পাঁচ মাস ধরে নানা সময় একইভাবে সৎ মেয়েকে ধর্ষণ করেন তিনি।
মামলাটি তদন্ত করে ধানমন্ডি মডেল থানার সাব-ইন্সপেক্টর খোকন মিয়া গত বছরের ৩০ আগস্ট আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
ঢাকা/মামুন/রফিক
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে নবান্নের আয়োজনে বাংলার ঐতিহ্যের পরিচয়
অগ্রহায়ণ মাস বাঙালির গ্রামীণ জীবনে নিয়ে আসে উৎসব ও আনন্দের বিশেষ আবেশ। নতুন ধান ঘরে তোলার পর সেই চালের প্রথম ভাত, পিঠাপুলির ঘ্রাণ আর মিলেমিশে খাওয়ার সংস্কৃতি—সব মিলিয়ে নবান্ন উৎসব বাঙালির কৃষিভিত্তিক সমাজ ও সংস্কৃতির এক অনিবার্য অনুষঙ্গ। তবে আধুনিক জীবনের ব্যস্ততা ও যান্ত্রিকতায় এ উৎসব অনেকটাই হারিয়ে যাচ্ছে। তবু শিকড়ের টান ধরে রাখতে ও তরুণ প্রজন্মকে বাংলার ঐতিহ্যের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়েক বছর ধরে আয়োজন করা হচ্ছে নবান্ন উৎসব। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘পদাতিক’ এ আয়োজন করে আসছে।
এবারও বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চ প্রাঙ্গণে শুরু হয়েছে দুই দিনব্যাপী নবান্ন উৎসব ‘নব ছন্দে নবান্ন’। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শুরু হওয়া এ উৎসবকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসজুড়ে রঙিন পোশাকে সজ্জিত শিক্ষার্থীরা, গানবাজনার সুর, পিঠার সৌরভ আর গ্রামীণ মোটিফে সাজানো স্টল মিলিয়ে তৈরি হয় চিরায়ত গ্রামীণ উৎসবের উষ্ণ আবহ।
সন্ধ্যায় পদাতিক সদস্যদের পরিবেশনায় পঞ্চকবির গান দিয়ে উৎসবের উদ্বোধনী হয়। এরপর একে একে পরিবেশিত হতে থাকে কোরাস গান, একক সংগীত, নাচ, কবিতা আবৃত্তি ও নাট্যাংশ। গভীর রাত পর্যন্ত চলে আয়োজনের বিভিন্ন পরিবেশনা। আজ শুক্রবারও চলবে এ উৎসব।
সংগঠনটির উদ্যোগে মুক্তমঞ্চের সামনে সাজানো হয় পিঠা, ঐতিহ্যবাহী খাবার, হাতে তৈরি সামগ্রী ও গ্রামীণ জীবনধারাকে উপস্থাপন করা ১৪টি স্টল। চিতই, ভাপা, পাটিসাপটা, দুধ–চিড়াসহ নানা ধরনের শীতের পিঠায় দর্শনার্থীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। বিশেষ আকর্ষণ ছিল শিক্ষার্থীদের হাতে তৈরি চুড়ি ও বাহারি রঙের গয়না।
উৎসবের প্রথম দিনে সন্ধ্যায় পদাতিক সদস্যদের পঞ্চকবির গানের মধ্য দিয়ে সূচনা হয় অনুষ্ঠানমালার। এরপর একে একে পরিবেশিত হয় কোরাস সংগীত, একক সংগীত, নৃত্য, কবিতা আবৃত্তি ও নাট্যাংশ। শিক্ষার্থীদের শৈশবের স্মৃতিতে ফিরিয়ে নিতে মেলায় যুক্ত করা হয় নাগরদোলা ও শিশুদের ট্রেন। এসব আয়োজন শিশুদের পাশাপাশি প্রাপ্তবয়স্ক দর্শনার্থীদের মধ্যেও বাড়তি উৎসাহ তৈরি করে।
মেলায় আসা শিক্ষার্থী সুমাইয়া ইসলাম বলেন, ‘সারা বছর ক্লাস, পরীক্ষার চাপের মধ্যে এমন গ্রামীণ উৎসব আমাদের মানসিক স্বস্তি ও ভিন্ন রকম আনন্দের উপলক্ষ। তাই সারা বছর আমরা এ উৎসবের জন্য অপেক্ষায় থাকি।’
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পঞ্চকবির গানের মধ্যদিয়ে উৎসবের উদ্বোধন হয়