সুইডেনের মধ্যাঞ্চলে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্দুকধারীর গুলিতে ১০ জন নিহত হয়েছেন। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানী স্টকহোমের ২০০ কিলোমিটার পশ্চিমে ওরেব্রো শহরে এ ঘটনা ঘটে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী উলফ ক্রিস্টারসন বলেছেন, সুইডেনের ইতিহাসে এটি সবচেয়ে বাজে ঘটনা। 

তিনি বলেন, সম্পূর্ণ নিরপরাধ মানুষের ওপর এমন হামলা নৃশংস ও মারাত্মক।

দেশটির পুলিশ জানিয়েছে, ওরেব্রোর রিসবার্গস্কা স্কুলে হামলা হয়েছে তাতে সন্ত্রাসবাদের কোনো সম্পর্ক পাওয়া যায়নি। 

ওরেব্রোরর পুলিশপ্রধান রবের্তো ইদ ফরেস্ট মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বলেন, হামলাকারী বন্দুকধারী ছিলেন একা এবং প্রাথমিক তদন্তে তার সঙ্গে সন্ত্রাসবাদের কোনো সম্পর্ক আমরা পাইনি। আমাদের তদন্ত এগিয়ে চলছে এবং হামলাকারী সম্পর্কে আরও তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করছি আমরা।

তিনি বলেন, এটা অনেক বড় একটি সহিংসতা। কী কারণে হামলাকারী এত বড় একটি সহিংসতা চালাল, তা এখনও অস্পষ্ট। তাই আপাতত আমরা তার ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করছি এবং তার পরিচিতজনদের সন্ধান করছি।

রাজধানী স্টকহোম থেকে ২০০ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত ওরেব্রো। যারা ছোটোবেলায় স্কুল-কলেজে যাননি বা ঝরে পড়েছিলেন, তাদের জন্য সুইডেনে বিশেষ ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। হামলার শিকার রিসবার্গস্কা স্কুল নামের সেই প্রতিষ্ঠানটিও তেমনই একটি শিক্ষাকেন্দ্র। 

স্কুলের শিক্ষক মারিয়া পেগাডো (৫৪) রয়টার্সকে জানিয়েছেন, মঙ্গলবার দুপুরে খাবার বিরতির পর যখন তিনি ক্লাস নিচ্ছিলেন, সে সময় আচমকা তার শ্রেণিকক্ষের দরজা খুলে একজন বন্দুকধারী প্রবেশ করে এবং সবাইকে ক্লাস থেকে বের হয়ে যেতে বলে।

তিনি বলেন, সে সময় শ্রেণিকক্ষে ১৫ জন শিক্ষার্থী ছিলেন। আমি তাৎক্ষণিকভাবে তাদের সবাইকে নিয়ে শ্রেণিকক্ষ থেকে বেরিয়ে ছুটতে লাগলাম। সে সময় আমাদের লক্ষ্য করে দু’টি গুলি ছোড়া হয়েছিল কিন্তু সেগুলো কারও গায়ে লাগেনি। আমি যখন স্কুলের প্রবেশ দরজার কাছাকাছি গেলাম, তখন বেশ কয়েকজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় দেখতে পেলাম এবং বুঝলাম, হামলার মাত্রা বেশ বড় ছিল। 

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

ঘুমের ওষুধ খাইয়ে স্বামীকে হত্যা, ফাঁদ পেতে ধরা হলো প্রেমিককে

পাবনার চাটমোহর উপজেলার কাটেঙ্গা গ্রামে ক্যানসার আক্রান্ত স্বামীকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্ত্রীর বিরুদ্ধে। 
দশদিন পর ঘটনা জানাজানি হলে  অভিযুক্ত স্ত্রী শারমিন খাতুন ও তার প্রেমিককে আটক করে পুলিশ। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেলে পরিবারের সদস্যরা পুলিশকে ঘটনাটি জানায়। 

এর আগে গত ৩০ নভেম্বর চাটমোহরের দক্ষিণপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। মৃত স্বামী শের আলী (৩৫) দক্ষিণপাড়া গ্রামের ভোলা প্রামানিকের ছেলে। শারমিন খাতুন (২৬) কাটেঙ্গা গ্রামের শাহ আলমের মেয়ে। এবং তার প্রেমিক অনিক (২২) একইগ্রামের মহাজন সরকারের ছেলে। 

স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত ৩০ নভেম্বর শের আলীর মৃত্যু হয়। তিনি ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন। তার মৃত্যুর পর বিষয়টি স্বাভাবিক হিসেবে শুরুতে মেনে নিলেও সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে মৃত্যুকে ঘিরে পরিবারের সদস্য ও স্থানীয়দের মধ্যে নানা প্রশ্ন দেখা দেয়।
জানা যায়, শের আলীর চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও ইউটিউবারদের মাধ্যমে চিকিৎসা সহায়তার অর্থ সংগ্রহ করা হয়েছিল। অভিযোগ রয়েছে, সেই অর্থের একটি বড় অংশ শারমিন অনিককে দিয়েছেন। 

মৃত শের আলীর ফুপাতো ভাই এনামুল হোমেনের দাবি, শারমিন ও অনিকের মধ্যে ফেসবুক মেসেঞ্জারে হওয়া কথোপকথন ঘেঁটে টাকা লেনদেনের একাধিক তথ্য পাওয়া গেছে। সেখান থেকেই প্রথম সন্দেহের সূত্রপাত। 

এরপর ঘটনার সত্যতা যাচাই করতে পরিবারের সদস্যরা কৌশল অবলম্বন করেন। শারমিনের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন থেকে অনিককে টাকা দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে আসতে বলে মেসেজ পাঠানো হয়। অনিক এই ফাঁদে পা দেন।  

শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে অনিকে টাকা নিতে এলে স্থানীয়রা তাকে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদে অসংলগ্ন বক্তব্য ও পরস্পরবিরোধী তথ্য দিলে সন্দেহ আরও ঘনীভূত হয়। পরে অনিক ও শারমিন স্বীকার করেন, প্রায় চার মাস ধরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। 

শারমিন এ সময় জানান, গত ৩০ নভেম্বর একসঙ্গে দশটি ঘুমের ওষুধ শের আলীকে তিনি খাইয়েছিলেন। এতে শের আলীর শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটে এবং কিছু সময়ের মধ্যেই তার মৃত্যু হয়। 

শের আলীর মা শিরীনা খাতুন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘‘আমার অসুস্থ ছেলেকে ওর বউ ঘুমের ওষুধ খাইয়েছে। সে সহ্য করতে না পেরে অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে এসে দেখি আমার ছেলে আর বেঁচে নেই। আমি এর দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।’’

চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাম সরোয়ার হোসেন বলেন, ‘‘মৃত ব্যক্তির পরিবারে পক্ষ থেকে কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি বা মামলা করেনি। যেহেতু ঘটনাস্থল থেকে দুজনকে আটক করা হয়েছে, সেই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ আইনগত প্রক্রিয়া শেষে তাদের পাবনা আদালতে সোপর্দ করেছে।’’ 

ঢাকা/শাহীন//

সম্পর্কিত নিবন্ধ