চ্যাম্পিয়নস ট্রফির জন্য ১৫ জন ম্যাচ অফিশিয়ালের নাম ঘোষণা করেছে আইসিসি। ৮ দলের এই টুর্নামেন্টে আম্পায়ারিংয়ের দায়িত্বে থাকবেন ১২ জন। তাঁদের মধ্যে আছেন বাংলাদেশের আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ। ম্যাচ রেফারির দায়িত্বে থাকবেন তিনজন।

পাকিস্তান ও আরব আমিরাতে ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হবে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি। শেষ হবে ৯ মার্চ। পাকিস্তানের করাচি, লাহোর, রাওয়ালপিন্ডি এবং আরব আমিরাতের দুবাইয়ে ম্যাচগুলো হবে।

আরও পড়ুনভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবতে রোহিত শর্মাকে সময় বেঁধে দিয়েছে বিসিসিআই৩১ মিনিট আগে

১২ জন আম্পায়ারের মধ্যে ৬ জন ২০১৭ সালে সর্বশেষ চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে দায়িত্ব পালন করেছেন। সেই টুর্নামেন্টের ফাইনালে আম্পায়ারিংয়ের দায়িত্ব পালন করা রিচার্ড কেটেলবরো এবারও আছেন। ২০১৭ সংস্করণ থেকে বাকি পাঁচ আম্পায়ার হলেন—ক্রিস গ্যাফানে, কুমার ধর্মসেনা, রিচার্ড ইলিংওয়ার্থ, পল রাইফেল ও রড টাকার।

বাকি ছয় আম্পায়ার হলেন, মাইকেল গফ, আদ্রিয়ান হোল্ডস্টক,এহসান রাজা, শরফুদ্দৌলা, অ্যালেক্স হোয়ার্ফ ও জোয়েল উইলসন। ২০২৩ সালে ভারতে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ ওয়ানডে বিশ্বকাপে তাঁরা সবাই ম্যাচ পরিচালনা করেছেন। সে বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচটি পরিচালনা করেন কেটেলবরো ও ইলিংওয়ার্থ। শরফুদ্দৌলা সেই বিশ্বকাপে ৫ ম্যাচ পরিচালনা করেন।

বোর্ডার–গাভাস্কার ট্রফিতে সিডনি টেস্টে আম্পায়ার ছিলেন শরফুদ্দৌলা.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শরফ দ দ ল

এছাড়াও পড়ুন:

শালবনে ছেচরা কই ও পাটখই

বিভতিভূষণের আরণ্যক উপন্যাসে একজন যুগলপ্রসাদ ছিলেন, যিনি লবটুলিয়ার জঙ্গলে সরস্বতী কুন্ডের পাড়ে নানা জায়গা থেকে নানা প্রজাতির গাছপালা এনে লাগাতেন। সেসব গাছে ফুল ফুটলে আনন্দে তিনি আত্মহারা হয়ে যেতেন। আমারও একজন যুগলপ্রসাদ ছিলেন, নাম আজাহার। প্রায় আমারই সমবয়সী।

টাঙ্গাইলের সখীপুরে বিভিন্ন শালবনে ঘুরতে গেলে মাঝেমধ্যে তিনি আমার সাথি হতেন। শালবনে কত গাছ! তেমন কিছুই চিনি না। কিন্তু সেই শালবনের কোলে জন্ম নেওয়া ও বেড়ে ওঠা আজাহার ঠিকই সেসব গাছ চিনতেন, আর জিজ্ঞেস করলে টপাটপ নাম বলে দিতেন। কিন্তু গোলমাল বাধত সেসব নাম শুনে। কেননা সেসব নাম বলতেন, তাঁদের স্থানীয় ভাষায়। বইয়ে সেসব নাম খুঁজে পাওয়া যেত না।

একদিন শালবনের মধ্যে একটা ছোট গাছ দেখলাম, গাছের গুঁড়ির চারদিকে তীক্ষ্ণসরু ও সোজা প্রচুর কাঁটা বেরিয়েছে। পাতাগুলো দেখতে কিছুট পেয়ারাপাতার মতো। প্রচুর ডালপালায় গাছটার মাথা ঝাঁকড়া হয়ে আছে। ডালের আগায় শিষের মতো মঞ্জরিতে প্রচুর ঘিয়া ও সাদাটে রঙের খুদে ফুল ফুটেছে। চিনি না। তাই আজাহারকে জিজ্ঞেস করলাম, নাম কী? চট করেই বলে দিলেন, ছেচরা কই। মাছের নাম কই হয় জানি, কিন্তু কোনো গাছের নাম কই হতে পারে? অগত্যা ছবি তুলে ওই নামকেই মনে গেঁথে ফিরে এলাম ঢাকায়।

আজাহার বললেন, এখন ফুল দেখছেন। কদিন পরেই ওসব ফুল থেকে ছোট ছোট গুলির মতো প্রচুর ফল ধরবে। ছোটবেলায় আমরা সেসব কাঁচা ফল নিয়ে বাঁশের কঞ্চি দিয়ে ফটকা বানিয়ে তার চোঙে একটা একটা করে ফল দিয়ে বন্দুকের মতো গুলি গুলি খেলতাম। চোঙের ভেতরে একটা সরু কাঠি ঢুকিয়ে চাপ দিয়ে সেসব ফল গুলির মতো ফাটাতাম। ফটাস করে শব্দ হতো। এ সময় মাসখানেকের জন্য আমরা এ গাছের ফল, পরে জালি খেজুর নিয়ে যুদ্ধ যুদ্ধ খেলতাম। শালবনে সে সময় এ গাছের অভাব ছিল না। এখন তো দেখতে হলে খুঁজে বের করতে হয়।

ফিরে এসে সে ছবি পাঠালাম জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানের সাবেক বোটানিস্ট সামসুল হক ভাইয়ের কাছে। দুই দিন পরেই তিনি জানালেন, গাছটার স্থানীয় নাম ছেচরা কই, উদ্ভিদতাত্ত্বিক নাম Bridelia retusa, গোত্র ফাইলেনথেসি। বইপত্রে এ গাছের চারটি বাংলা নাম পেলাম—কাঁটাকই, কাঁটাকুশি, কামকই, আকদানা। বাংলাদেশ ছাড়াও এ গাছ আছে নেপাল, ভারত, শ্রীলঙ্কা, চীন, থাইল্যান্ড প্রভৃতি দেশে। সাধারণত উঁচু ও শুষ্ক বনাঞ্চলে এ গাছ দেখা যায়। ছোট বৃক্ষজাতীয় গাছ, প্রায় ১০ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়, দ্রুত বাড়ে। এ গাছের কাঁটা থাকায় বন্য প্রাণীরা এদের ধারে ঘেঁষে না, এমনকি এর বাকল দিয়েও বিষ তৈরি করা হয় বলে শুনেছি।

ফল গোলাকার, ছোট, কাঁচা ফল ময়লা সবুজ, পাকলে খোসায় লাল রং ধরে। ছেচরা কইগাছের কাঠ মাঝারি শক্ত থেকে শক্ত, কাঠের রং ময়লা লাল। রঙে ও গুণে কাঠ উৎকৃষ্ট। নির্মাণকাজ ও গরুর গাড়ির চাকা বানাতে ব্যবহার করা হয়। জ্বালানি কাঠ হিসেবে ব্যবহৃত হলেও শুষ্ক তৃণভূমিতে যদি কোনো গাছ থাকে, তবে সেসব ঘাসে আগুন দিলে এ গাছ পোড়ে না বলে কথিত রয়েছে। বীজ দ্বারা সহজে বংশবৃদ্ধি বা চারা হয়।

পূর্বাচল উপশহরের শালবনে দেখা পাটখই ফল

সম্পর্কিত নিবন্ধ