Risingbd:
2025-05-01@00:04:45 GMT

নোয়াখালীতে গণপিটুনিতে নিহত

Published: 8th, February 2025 GMT

নোয়াখালীতে গণপিটুনিতে নিহত

নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলায় গণপিটুনিতে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৩টার দিকে উপজেলার সুন্দলপুর ইউনিয়নের ছবিরপাইক গ্রামের ধুমচর-ছবিরপাইক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। 

কবিরহাট থানার ওসি শাহিন মিয়া বলেন, “নিহত ব্যক্তি চুরির চেষ্টা করে। স্থানীয়রা টের পেয়ে ধাওয়া দিয়ে তাকে ধরে গণপিটুনি দেয়। গুরুত্বর আহত হয়ে তার মৃত্যু হয়। মরদহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে রয়েছে। তদন্ত চলছে। পরবর্তীতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

নিহত ব্যক্তির নাম জহির উদ্দিন বেচু (৪০)। তিনি সুন্দলপুর ইউনিয়নের উত্তর লামছি গ্রামের নাটাই মোস্তফার বাড়ির বাসিন্দা।

আরো পড়ুন:

১০ হাজারে চুক্তি, নদীতে নেমে প্রাণ গেল যুবকের

ঝিনাইদহে ভোট দিতে গিয়ে ভোটারের মৃত্যু

এলাকাবাসী জানান, জহির রাতে ছবিরপাইক গ্রামের মসজিদের তালা ভাঙার চেষ্টা করেন। এসময় মসজিদের ইমাম জেগে উঠলে তিনি পালিয়ে যান। কিছুক্ষণ পর জহির ফিরে এসে মসজিদের পাশের একটি চায়ের দোকানে ঢোকার চেষ্টা করে। বিষয়টি টের পেয়ে আশপাশের লোকজন জড়ো হয়ে জহিরকে ধাওয়া দিয়ে ধরে গণপিটুনি দেয়। এতে তিনি গুরুতর আহত হন।

সুন্দলপুর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মো.

হানিফ বলেন, “বেচু ছোটখাটো চুরি করত। তার কিছুটা মানসিক সমস্যাও ছিল।”

নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আবু নাছের মো. লুৎফুল হাসান বলেন, “গুরুতর আহত অবস্থায় এক ব্যক্তিকে কবিরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে তার মৃত্যু হয়। শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ আনা হয়েছে।”

ঢাকা/সুজন/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম রধর গণপ ট ন

এছাড়াও পড়ুন:

আজও আছে পরতে পরতে সৌন্দর্য

কারুকার্যখচিত বিশাল ভবন। দেয়ালের পরতে পরতে মনোহর সৌন্দর্য। মনোরম পরিবেশে ভবনের চারপাশে দাঁড়িয়ে সুন্দরী পরীর আবক্ষ মূর্তি। ছবির মতো সাজানো ‘পাকুটিয়া জমিদারবাড়ি’ এখন কালের সাক্ষী।

মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া থেকে ১২ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে টাঙ্গাইলের নাগরপুরের কলমাই নদীতীরে ১৫ একর জমিতে জমিদারবাড়িটি। ঢুকতেই চোখে পড়ে পুরোনো মন্দির। লোকমুখে প্রচলিত, শরতের দিনে দেবী দুর্গার প্রতিমা তৈরিতে এখানে ব্যস্ত থাকতেন ভারতবর্ষের নামকরা কারিগররা। কালের বিবর্তনে স্থানটি এখন নির্জন। নেই আগের গৌরব-আভিজাত্যের ছাপ, এমনকি প্রতিমা তৈরির ব্যস্ততাও।

মন্দির ঘুরে দেখা যায়, এর কোথাও কোথাও ইট খসে পড়েছে। পুরোনো দিনের নকশা হারাচ্ছে তার সৌন্দর্য। মন্দিরের পেছনে বিশাল তিনটি মহল, যা সেকালে তিন তরফ নামে পরিচিত ছিল। মহলগুলোর আলাদা কোনো নাম পাওয়া যায়নি। সবচেয়ে বড় মহলে বর্তমান পাকুটিয়া বিসিআরজি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ পরিচালিত হচ্ছে।

দোতলা ভবনের নির্মাণশৈলী মুগ্ধ করবে সবাইকে। যদিও সংস্কারের অভাবে ভবনটিতে ফাটল দেখা দিয়েছে। পাশেই অপূর্ব লতাপাতার কারুকার্যখচিত বিশাল আরেকটি ভবন, যার মাথায় ময়ূরের মূর্তি। এ ছাড়া কিছু নারী মূর্তিরও দেখা মেলে। জমিদার আমলের টিনের চৌচালা ঘরে অস্থায়ীভাবে সরকারি তহশিল অফিস স্থানান্তর হলেও, সেটি এখন স্থায়িত্ব পেয়েছে।

লতাপতায় আচ্ছন্ন ভবনের একাংশ বর্তমানে উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং আরেকাংশে একটি বেসরকারি দাতব্য সেবা সংস্থা কার্যক্রম চালাচ্ছে। ভবনটির পিলারের মাথায় এবং দেয়ালেও অসাধারণ নকশা মুগ্ধ করে।

দোতল আরেকটি মহল, যার সামনে বিশাল শান বাঁধানো সিঁড়ি। অন্য সব ভবনের সঙ্গে এটির নকশার যথেষ্ট মিল খুঁজে পাওয়া যায়। ভবনটির বারান্দা ও পুরোনো কাঠের দরজা সৌন্দর্য বাড়িয়ে তুলেছে কয়েক গুণ। ভবনটির মাথায় ময়ূরের সঙ্গে দুই পাশে দুই নারী মূর্তির দেখা মেলে। সিঁড়ি বেয়ে ছাদে গেলে গাছগাছালির সবুজে ঘেরা পুরো জমিদারবাড়ির সৌন্দর্য বিমোহিত করতে বাধ্য। যদিও ভবনের ভিন্ন অংশ খসে পড়ছে, হারাচ্ছে রূপ-লাবণ্য।

জমিদারবাড়ির পেছনে রয়েছে দীঘি ও দুটি পরিত্যক্ত কূপ। এ ছাড়া জমিদারবাড়ির বিশাল মাঠের এক কোণে নাটমন্দির। জানা যায়, নাগরপুরের সঙ্গে কলকাতার একটি বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা থেকে আসেন ধনাঢ্য ব্যক্তি রামকৃষ্ণ সাহা মণ্ডল। তিনিই ঊনবিংশ শতাব্দীর শুরুতে ব্রিটিশদের কাছ থেকে বিপুল অর্থের বিনিময়ে জমি কিনে জমিদারি শুরু করেন।

রামকৃষ্ণ সাহার দুই ছেলে বৃন্দাবন ও রাধাগোবিন্দ। রাধা নিঃসন্তান। তবে বৃন্দাবনের তিন ছেলে– ব্রজেন্দ্র মোহন, উপেন্দ্র মোহন ও যোগেন্দ্র মোহন দীর্ঘকাল রাজত্ব করেন। এভাবে পাকুটিয়া জমিদারবাড়ি তিন ভাইয়ের তরফে বিভক্ত থাকলেও, জমিদাররা সবাই ছিলেন প্রজানন্দিত। বৃন্দাবনের মেজ ছেলে উপেন্দ্রকে কাকা রাধাগোবিন্দ দত্তক নেন। ফলে উপেন্দ্র কাকার জমিদারির পুরো সম্পত্তি লাভ করেন।

দৃষ্টিনন্দন পাকুটিয়া জমিদারবাড়িতে প্রতিনিয়ত পর্যটকের ভিড় বাড়ছে। ইতিহাসের সাক্ষী বাড়িটি সংস্কার না হওয়ায় একদিকে যেমন সৌন্দর্য হারাচ্ছে, অন্যদিকে তরুণ প্রজন্মের কাছে অজানা থেকে যাচ্ছে ইতিহাস। জমিদারবাড়িটি পুরাকীর্তি হিসেবে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের অধীনে নিয়ে সংস্কার ও সংরক্ষণের দাবি জোরালো হচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ