ঢাবির জাপানিজ বিভাগের চেয়ারম্যানের পুনর্বহাল দাবি শিক্ষার্থীদের
Published: 9th, February 2025 GMT
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মো. জাহাঙ্গীর আলমকে স্বপদে বহালের দাবি জানিয়েছে বিভাগটির সব ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। চেয়ারম্যানকে স্বপদে পুনর্বহাল না করা হলে ক্লাস-পরীক্ষাসহ সব ধরনের একাডেমিক কার্যক্রম বর্জর ঘোষণা দেন তারা।
এর আগে, প্রফেশনাল মাস্টার্সে পরীক্ষা ছাড়াই ছাত্রলীগ নেতাকে ভর্তির অভিযোগে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে ড.
রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বিভাগের চেয়ারম্যানের পুনর্বহাল চেয়ে উপাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তারা লিখিতভাবে এ দাবি পেশ করেন। এ দাবির সঙ্গে তারা বিভাগের চলমান পাঁচটি ব্যাচ এবং প্রফেশনাল মাস্টার্স ব্যাচের ২ শতাধিক শিক্ষার্থীর স্বাক্ষর সংযুক্ত করেন।
উপাচার্য বরাবর দেওয়া আবেদনে শিক্ষার্থীরা বলেন, জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মো. জাহাঙ্গীর আলমকে অন্যায়ভাবে জোরপূর্বক তার পদ থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। আমরা জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থীরা সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি যে, আমরা এ সিদ্ধান্তকে দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করি। স্যারকে পুনরায় তার পদে পুনর্বহাল এবং একাডেমিক কাজে ফিরিয়ে না আনা পর্যন্ত আমরা সব ধরনের ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করলাম।
সরজমিনে দেখা যায়, জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থীরা বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে জড়ো হন। পরে দুপুর ১টার দিকে শিক্ষার্থীদের সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল উপাচার্যের সাথে সাক্ষাৎ করে চেয়ারম্যানকে স্বপদে বহালের দাবি জানালে উপাচার্য বিষয়টি নিষ্পত্তির আশ্বাস দেন। আশ্বাস পেয়ে তারা কর্মসূচি স্থগিত করেন।
সাক্ষাৎকালে উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) সায়মা হক বিদিশা, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ খান উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক ড. সাইফুদ্দিন আহমদও শিক্ষার্থী প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
এর আগে, গত বৃহস্পতিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলমকে অব্যাহতি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিজ্ঞপ্তি প্রদান করে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বিভাগের সব ব্যাচের শিক্ষার্থীরা ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মুনশী শামস উদ্দিন আহম্মদ স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগের প্রফেশনাল মাস্টার্স প্রোগ্রামে ভর্তি পরীক্ষা ছাড়াই ছাত্রলীগ নেতাদের ভর্তি করায় বিভাগের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীবৃন্দের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে একটি তথ্যানুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির কার্যক্রম চলাকালে আপনাকে বৃহস্পতিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে বিরত রাখা হলো।
বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের মো. রাহাত রেজওয়ান রুদ্র বলেন, “গত বৃহস্পতিবার একটি অভিযোগের ভিত্তিতে আমাদের চেয়ারম্যান স্যারকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। বলা হচ্ছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একদল শিক্ষার্থীর অভিযোগের কারণে স্যারকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বিভাগের শিক্ষার্থীদের কেউ জানেন না, কারা এ অভিযোগ দিয়েছে। আমরা এ অভিযোগকারীদের দেখতে চাই। অন্যদিকে, অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম স্যারকে স্বপদে বহাল না করা পর্যন্ত আমরা ক্লাস-পরীক্ষায় বসবো না।”
বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী নেওয়াজ শরীফ আরমান বলেন, “অভিযোগ করা হয়েছে, অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম স্যার ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে ছাত্রলীগ নেতা মিঠুন চন্দ্র শীল নামের একজনকে পরীক্ষা ছাড়াই প্রফেশনাল মাস্টার্সে পরীক্ষা ছাড়াই ভর্তি করিয়েছেন। কিন্তু এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ। তার পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল, সে ডকুমেন্টস ও খাতা বিভাগে রয়েছে। আমাদের বিভাগের কোন শিক্ষার্থী এ অভিযোগ দেয়নি। তারমানে কোন একজন শিক্ষক বা আউটসাইডার- যার এতে ব্যাক্তিগত লাভ আছে, সে এসে স্যারের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছে। ফলে স্যারকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।”
তিনি বলেন, “উপাচার্য স্যারের কাছে বিষয়টি ক্লিয়ার যে, বিভাগের সব শিক্ষার্থীরা জাহাঙ্গীর আলম স্যারকে চেয়ারম্যান হিসেবে দেখতে চাই। স্যার জানিয়েছেন সর্বোচ্চ আগামী রবিবারের মধ্যে বিষয়টি সমাধান করা হবে।”
উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খান বলেন, “যেহেতু শিক্ষার্থীদের কোন অভিযোগ নেই, সেহেতু তাকে একাডেমিক কার্যক্রমে ফিরিয়ে আনতে কোন বাঁধা নেই। আমরা চেষ্টা করব বিষয়টি খতিয়ে দেখার। সর্বোচ্চ ১ সপ্তাহের মধ্যে বিষয়টির সুষ্ঠু সমাধান করা হবে।”
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জ হ ঙ গ র আলমক উপ চ র য এক ড ম ক পর ক ষ ব ষয়ট
এছাড়াও পড়ুন:
ইসলামি নীতিশাস্ত্রে সুখের ধারণা
ইসলামের একটি মৌলিক বিশ্বাস হলো, আল্লাহর কোনো চাওয়া-পাওয়া বা প্রয়োজন নেই। তিনি ফেরেশতা ও নবীদের মাধ্যমে যে ওহি দিয়েছেন, তা সম্পূর্ণরূপে মানুষের কল্যাণ ও সমৃদ্ধির জন্য।
আল্লাহ মানুষকে একটি চুক্তি দিয়েছেন: এটি গ্রহণ করলে তাদের উপকার হবে, আর প্রত্যাখ্যান করলে ক্ষতি হবে তাদেরই। ইসলামি শরিয়ার নীতিই এমন, যা ক্ষতি দূর করার এবং দুঃখ-কষ্টের অবসান ঘটানোর নির্দেশ দেয়। (সুরা শারহ, আয়াত: ৫-৬)
তবে কষ্ট দূর করা আর সুখ অর্জন করা সমান কথা নয়। এমনকি সবচেয়ে বিশ্বাসী ব্যক্তিরাও কষ্ট দূর করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করলেও তার মাধ্যমে যে সুখ আসবে, তা নিশ্চিত করে না।
কষ্ট দূর করা আর সুখ অর্জন করা সমান কথা নয়। এমনকি সবচেয়ে বিশ্বাসী ব্যক্তিরাও কষ্ট দূর করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করলেও তার মাধ্যমে যে সুখ আসবে, তা নিশ্চিত করে না।সুখ কেবল আনুষ্ঠানিক আনুগত্য বা আইনি পদ্ধতির মাধ্যমে অর্জিত হয় না। বরং ইসলামি সাহিত্যে ‘সাআদা’ বা সুখ নিয়ে ভিন্ন কথা বলা হয়েছে। অর্থাৎ, জ্ঞান ও আলোকপ্রাপ্তির সঙ্গে সুখের অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক, এই কথাটায় জোর দেওয়া হয়েছে বারবার।
একজন বিশ্বাসী যত বেশি নিজেকে, অন্য মানুষকে, অন্য সংস্কৃতিকে এবং বিশ্বকে জানেন, তত বেশি তিনি নিজের ও অন্যের প্রতি ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য প্রয়োজনীয় ভারসাম্য বুঝতে পারেন।
এই দৃষ্টিভঙ্গি বোঝার একটি কার্যকর উপায় হলো মহানবীর (সা.) উক্তি, ‘যে নিজেকে জানতে সক্ষম হয়, সে তার প্রভুকে জানতে পারবে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬,২৩১)
আরও পড়ুনভোগবাদী যুগে ইসলামে সুখের খোঁজ০১ আগস্ট ২০২৫কোরআন তাঁদের বর্ণনা করে এমন মানুষ হিসেবে যাঁরা পূর্ণ তৃপ্তি অনুভব করেন; তাঁরা আল্লাহর ওপর ভরসা করেন, আর আল্লাহ তাঁদের ওপর ভরসা করেন; তাঁরা আল্লাহকে ভালোবাসেন, আর আল্লাহ তাঁদের ভালোবাসেন। (সুরা রাদ, আয়াত: ২৮; সুরা মায়িদা, আয়াত: ১১৯)
এই সুখের অবস্থা তাঁদের অস্তিত্বের প্রতিটি দিকে ছড়িয়ে পড়ে। কোরআন তাঁদের আনন্দময় ও উজ্জ্বল মুখের বর্ণনা দেয়; তাঁরা তাঁদের হাতের তালুতে অভ্যন্তরীণ আলো নিয়ে পৃথিবীতে পদচারণ করেন, যা ঐশ্বরিক প্রজ্ঞার প্রতীক। (সুরা হাদিদ, আয়াত: ১২)
জাহিলিয়া: অসুখের কারণইসলামি ধর্মতত্ত্বে জ্ঞান, আলোকপ্রাপ্তি, ভারসাম্য, শান্তি ও প্রশান্তি হলো সুখের কেন্দ্রীয় ধারণা। কিন্তু সুখের অসম্পূর্ণতা প্রকাশ পায় ‘জাহিলিয়া’ ধারণায়, যা অজ্ঞতা, অসচেতনতা ও অশুভতার অবস্থা। জাহিলিয়া কেবল নবীর মক্কায় প্রত্যাদেশের পূর্ববর্তী সময় নয়, বরং একটি নৈতিক ধারণা, যা অজ্ঞতা, অন্যায়, নিষ্ঠুরতা ও ঘৃণায় আচ্ছন্ন সমাজকে বোঝায়।
নবীজি শিখিয়েছেন, অন্ধ জাতিগত ও উপজাতীয় আনুগত্য জাহিলিয়ার অংশ। এটি আত্মকেন্দ্রিকতা, অহংকার ও অজ্ঞতার অবস্থা, যা আল্লাহর আলো ও ভালোবাসার মাধ্যমে পরিশুদ্ধ হওয়া উচিত। (সুরা হাজ্জ, আয়াত: ৪৬)
জাহিলিয়া কেবল নবীর মক্কায় প্রত্যাদেশের পূর্ববর্তী সময় নয়, বরং একটি নৈতিক ধারণা, যা অজ্ঞতা, অন্যায়, নিষ্ঠুরতা ও ঘৃণায় আচ্ছন্ন সমাজকে বোঝায়।জাহিলিয়া মানব ইতিহাসের প্রতিটি যুগে উপস্থিত। কুসংস্কার, বর্ণবাদ, ঘৃণা ও অত্যাচার এর বৈশিষ্ট্য। ইসলাম জাহিলিয়ার মিথ্যা আনন্দের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের ভূমিকা পালন করে। ‘ইসলাম’ শব্দটি আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ এবং তাঁর মধ্যে শান্তি খুঁজে পাওয়া দুটি অর্থই বহন করে।
আল্লাহর মধ্যে শান্তি খুঁজে পাওয়া মানে আত্মাকে নিশ্চিহ্ন করা নয়, বরং আত্মা, অন্য এবং আল্লাহর মধ্যে ভারসাম্য বোঝার প্রজ্ঞা অর্জন। শরিয়াতে তো আল্লাহর অধিকার (হুকুক আল্লাহ) এবং মানুষের অধিকার (হুকুক আল-ইবাদ) স্বীকৃত। শান্তি খুঁজে পাওয়া মানে এই অধিকারগুলোর ন্যায্য ভারসাম্য বোঝা ও তা রক্ষার চেষ্টা করা।
আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণের এই তত্ত্ব সুখের সন্ধানে ব্যক্তিগত ও সামাজিক উভয় স্তরে গভীর প্রভাব ফেলে। অজ্ঞতা ও ঘৃণার সামাজিক অবস্থার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ এবং অহংকারী আত্মাকে শৃঙ্খলিত করা এই ধর্মতত্ত্বের অংশ। আল্লাহর আলো দিয়ে দেখার জন্য অহংকারকে বুদ্ধিমান ও সক্রিয় বিবেকের মাধ্যমে শৃঙ্খলিত করতে হয়।
আরও পড়ুনসবচেয়ে সুখী মানুষ হওয়ার শিক্ষা নবীদের জীবন থেকে২০ জুলাই ২০২৫আধুনিক যুগের দুঃখপ্রতিটি যুগ জাহিলিয়ার নিজস্ব অংশ বহন করে। কুসংস্কার, ঘৃণা, অত্যাচার ও দুঃখ-কষ্টের অন্ধকার সব যুগেই ছিল। তবে আধুনিক যুগে এই নৈতিক ব্যর্থতাগুলো অসহনীয় ও ক্ষমার অযোগ্য হয়ে উঠেছে। আমাদের শেখার, যোগাযোগ করার ও জানার ক্ষমতা আগের যেকোনো যুগের চেয়ে উন্নত। তবু অজ্ঞতা, বর্ণবাদ ও ঘৃণা এখনো অব্যাহত।
আমরা যুদ্ধ ও ধ্বংসের ক্ষমতা অর্জন করেছি, যা ইতিহাসে অভূতপূর্ব। তবু আমাদের পারস্পরিক নির্ভরতা ও অস্ত্রের বিপদ এই যুদ্ধগুলোকে অবোধ্য করে তুলেছে। আমাদের ব্যথা নিরসন ও আনন্দের সন্ধানের সরঞ্জাম থাকলেও দুঃখের অবসান ও সুখের প্রকৃত অর্জন এখনো দুরূহ।
সমস্যা আমাদের প্রযুক্তিগত সক্ষমতায় নয়, বরং আমাদের ইচ্ছা, উদ্দেশ্য ও মানবিকতার বোঝাপড়ায়। আধুনিক যুগে আমাদের মানবিক অধিকার ও দুঃখের বোঝাপড়া বেড়েছে, কিন্তু আধ্যাত্মিক বোঝাপড়া কমেছে। এই কারণে দার্শনিকেরা এই যুগকে উদ্বেগ, অস্থিরতা ও ভিত্তিহীনতার যুগ বলে বর্ণনা করেছেন।
বিশ্বাসের শক্তিবিশ্বাসীদের জন্য, বিশ্বাস তাঁদের ঐশ্বরিক, চিরন্তন ও সুন্দরের দিকে পৌঁছাতে সক্ষম করে। প্রতি যুগের ইতিহাসেই ধর্ম মানুষের পরিবর্তনের একটি শক্তিশালী প্রেরণা।
এমনকি পশ্চিমা ধর্মনিরপেক্ষ একাডেমিয়াতেও সামাজিক তাত্ত্বিকেরা ধর্মের ইতিবাচক ভূমিকার কথা স্বীকার করেছেন। (খালেদ আবু এল ফাদল , ‘ইসলামিক এথিকস অ্যান্ড হ্যাপিনেস’, পৃ. ৪২, ইউসিএলএ প্রেস, লস অ্যাঞ্জেলেস, ২০১৮)
আধুনিক যুগে প্রযুক্তিগত অগ্রগতি শারীরিক আরাম বাড়িয়েছে, কিন্তু আত্মার অস্থিরতা বেড়েছে। বিশ্বাস এই অস্থিরতার বিরুদ্ধে একটি নোঙর হিসেবে কাজ করে।
সমস্যা আমাদের প্রযুক্তিগত সক্ষমতায় নয়, বরং আমাদের ইচ্ছা, উদ্দেশ্য ও মানবিকতার বোঝাপড়ায়। আধুনিক যুগে আমাদের মানবিক অধিকার ও দুঃখের বোঝাপড়া বেড়েছে, কিন্তু আধ্যাত্মিক বোঝাপড়া কমেছে।ধর্মের অপব্যবহারধর্মকে কখনো কখনো নৈতিক উদাসীনতা, নিষ্ক্রিয়তা বা এমনকি নৈরাশ্যবাদের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়। অনেক মুসলিম ধৈর্য ও অধ্যবসায়ের ওপর জোর দিয়ে নৈতিক উদাসীনতাকে ন্যায্যতা দেয়, যা ধর্মের অপব্যবহার। আরও গুরুতর অপব্যবহার হলো ইসলামকে এমনভাবে ব্যবহার করা, যা ঘৃণা, কুসংস্কার ও দুঃখ-কষ্ট ছড়ায়।
ইসলামকে জাহিলিয়ার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা—যেমন ঘৃণা, নিষ্ঠুরতা বা অহংকার প্রচার করা—একটি নৈতিক ব্যর্থতা। কোরআন ঘোষণা করে, আল্লাহ সকল মানুষের মর্যাদা নির্ধারণ করেছেন। (সুরা বনি ইসরাইল, আয়াত: ৭০)।
মোট কথা, ইসলামি নীতিশাস্ত্র আধুনিক বিশ্বে সুখের সন্ধানে একটি গতিশীল পথ দেখায়। এটি কেবল আনুষ্ঠানিক আনুগত্য নয়, বরং নিজেকে ও অন্যকে জানার মাধ্যমে আল্লাহর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলে।
জাহিলিয়ার অন্ধকারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ এবং ন্যায়, করুণা ও শান্তির সাধনা ইসলামি সুখের মূল। আধুনিক যুগের উদ্বেগ ও অস্থিরতার মধ্যে, ইসলাম বিশ্বাসীদের একটি নোঙর প্রদান করে, যা তাদের ঐশ্বরিক সৌন্দর্য ও সুখের দিকে নিয়ে যায়।
সূত্র: এবিসি ডট নেট
আরও পড়ুনপবিত্র কোরআনের পাঁচটি আশার আলো ছড়ানো আয়াত২১ মে ২০২৫