এবারও নির্বাচন হয়নি খাতুনগঞ্জ ট্রেড অ্যাসোসিয়েশনে
Published: 10th, February 2025 GMT
দেশে ভোগ্যপণ্যের বৃহত্তর বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে ব্যবসায়ীদের সংগঠন খাতুনগঞ্জ ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন। ২০০৭ সালে প্রতিষ্ঠিত এই সংগঠনে প্রথম কমিটি দেওয়া হয় ২০০৯ সালে। সেটিও ছিল মনোনীত কমিটি। প্রতিষ্ঠার শুরু থেকে এ বছর প্রথমবারের মতো নির্বাচনের আশা দেখেছিলেন ব্যবসায়ীরা। তবে শেষমেশ এবারও ভোট ছাড়া প্রার্থীরা নির্বাচিত হলেন।
গতকাল রোববার মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিনে সরে গেছেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা। এবার মোট ৪১টি পদের বিপরীতে মনোনয়নপত্র জমা পড়েছিল ৪৫টি। আজ সোমবার বাকি চারজন মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। ফলে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচিতদের নাম ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন।
বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন নির্বাচন কমিশনার মুহাম্মদ জামাল হোসেন। তিনি বলেন, শেষ দিনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। ফলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রার্থীরা নির্বাচিত হয়েছেন।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, সভাপতি পদে নির্বাচিত হয়েছেন চট্টগ্রামভিত্তিক খাদ্যপণ্যের কোম্পানি মীর গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুস সালাম। এ ছাড়া জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি পদে আহমদ রশীদ আমু, দুই সহসভাপতি পদে অনিল চন্দ্র পাল ও মো.
অন্যদিকে সহ-অর্থ সম্পাদক পদে মীর মোহাম্মদ সাজ্জাদ উল্লাহ, সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ আবু বক্কর, সমাজকল্যাণ, ত্রাণ ও পুনর্বাসন সম্পাদক পদে মো. খোরশেদ আলম, আইনবিষয়ক সম্পাদক পদে মহিউদ্দিন, প্রচার প্রকাশনা ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে ফরিদুল আলম, বন্দর কাস্টমস ও ভ্যাটবিষয়ক সম্পাদক পদে রাইসুল ইসলাম ও দপ্তর সম্পাদক পদে মুহাম্মদ আকবর আলী নির্বাচিত হয়েছেন। ২৫টি নির্বাহী পদেও প্রার্থীরা বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন র ব চ ত হয় ছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু : পুলিশের দাবি, বাড়ির ছাদ থেকে পড়েছেন, হত্যার অভিযোগ পরিবারের
ভোলা সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাইফুল্লাহ আরিফকে (৩০) হত্যা করা হয়েছে বলে তাঁর পরিবার অভিযোগ করেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ভোলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে তাঁর বাবা বশির উদ্দিন (মাস্টার) এই অভিযোগ করেন।
এ সময় বশির উদ্দিন বলেন, পুলিশ দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ার কোনো সুযোগ নেই; সেখানে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক।
এর আগে গত শনিবার পুলিশ সুপার শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, প্রাথমিক তদন্তের তথ্য অনুযায়ী অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে সাইফুল্লাহ আরিফ মারা গেছেন।
সাইফুল্লাহ আরিফ ভোলা পৌরসভার কালীবাড়ি রোডে নবী মসজিদ গলি এলাকার বশির উদ্দিনের ছেলে। গত ৩১ আগস্ট ভোরে নিজ বাড়ির সামনে থেকে সাইফুল্লাহ আরিফের লাশ উদ্ধার করা হয়।
আজ দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে বশির উদ্দিন বলেন, ‘আমার ছেলে দুর্ঘটনায় নয়, তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। এর কিছু প্রমাণ আছে। আরিফের শরীরে একাধিক কাটা ও ভাঙা জখম ছিল, এমনকি হাতের রগ কাটা ছিল। পুলিশের দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যুর সুযোগ নেই, কারণ, ছাদে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশ সুপার আমার ছেলেকে নেশাগ্রস্ত আখ্যা দিলেও তাঁর কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ছাড়া পুলিশ কীভাবে এমন কথা বলতে পারে। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
বশির উদ্দিন আরও বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফ কোনো ধরনের মাদকের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। সে ছাত্রলীগের সহসভাপতি হলেও কখনো ক্ষমতার অপব্যবহার করেনি। হত্যাকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ সত্য গোপন করছে। সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করতে মামলাটি সিআইডি বা পিবিআইয়ের কাছে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বশির উদ্দিন বলেন, তাঁর ছেলের সঙ্গে অনেকের বিরোধ ছিল। তবে জমিজমার বিরোধ ও মাদক ব্যবসার বিরোধ নিয়ে তাঁর ছেলে খুন হয়নি। এগুলোর সঙ্গে সে জড়িত ছিল না।
শনিবার পুলিশ শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফের মৃত্যুর রহস্য উদ্ঘাটনে প্রাথমিক তদন্ত শেষে জানা যায়, তিনি অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে মারা গেছেন। ৩০ আগস্ট দিবাগত রাত অনুমান ১২টা ১৫ মিনিটে রাতের খাবার শেষে সাইফুল্লাহসহ পরিবারের সবাই নিজ নিজ ঘরে ঘুমাতে যান। ভোর ৫টা ১০ মিনিটে ফজরের নামাজের জন্য বের হওয়ার সময় তাঁর বাবা বশির উদ্দীন (৭০) বাড়ির সামনে গেটের পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় ছেলের মরদেহ দেখতে পান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। সুরতহালে দেখা যায়, আরিফের মাথা ও হাতে গুরুতর আঘাত ছিল। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, আরিফ দীর্ঘদিন ধরে নেশায় আসক্ত ছিলেন এবং হতাশাগ্রস্ত অবস্থায় প্রায়ই ছাদে যেতেন। ঘটনার দিন রাতেও তিনি ছাদে ওঠেন এবং অসতর্কতাবশত রেলিংবিহীন অংশ থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর জখমপ্রাপ্ত হয়ে মারা যান।
পরিবারের অভিযোগ সম্পর্কে আজ দুপুরে পুলিশ সুপার শরীফুল হক মুঠোফোনে বলেন, ‘ওই ঘটনায় তদন্ত চলমান। সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক তদন্তের কথা জানানো হয়েছে। তদন্তে তথ্য সংযোগ-বিয়োগের সুযোগ রয়েছে।’