প্যারিসে অনুষ্ঠিত এআই অ্যাকশন সামিটের ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই’ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা-সংক্রান্ত ঘোষণাপত্রে সই করেনি যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) বিকাশ ও নিয়ন্ত্রণের জন্য সমন্বিত পদক্ষেপের পথে এটি একটি বড় ধাক্কা।

ঘোষণাপত্র অনুযায়ী, এআই উন্মুক্ত, অন্তর্ভুক্তিমূলক, স্বচ্ছ, নৈতিক, নিরাপদ, সুরক্ষিত এবং বিশ্বস্ত হওয়ার বিষয়ে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। সবার জন্য আন্তর্জাতিক কাঠামো বিবেচনায় নিয়ে এটা করা হয়েছে। মানুষ ও পৃথিবীর জন্য এআইকে টেকসই করার ব্যাপারে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার প্যারিসের গ্র্যান্ড প্যালাইসে পাস হওয়া এই ঘোষণাপত্রে ৬০টি পক্ষ সই করেছে। এসব পক্ষের মধ্যে রয়েছে ফ্রান্স, চীন, ভারত, জাপান, অস্ট্রেলিয়া এবং কানাডা। পরবর্তী কয়েক ঘণ্টার মধ্যে আরও কিছু পক্ষ এতে সই করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী যুক্তরাজ্য সরকারে এক মুখপাত্র বলেন, ঘোষণাপত্রে এআই’র বৈশ্বিক শাসন এবং জাতীয় নিরাপত্তার ওপর প্রযুক্তির প্রভাবের বিষয়ে যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া হয়নি।

যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স প্রযুক্তির ওপর ইউরোপের ‘অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রণের’ সমালোচনা করেন। এত বেশি কড়াকড়ি শিল্পটির বিকাশ ধ্বংস করতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি। একই সঙ্গে চীনের সঙ্গে সহযোগিতা করার বিষয়ে সতর্ক করেছেন তিনি। 

এআই অ্যাকশন সামিটে বিভিন্ন বিশ্ব নেতা, নীতিনির্ধারক এবং শিল্প বিশেষজ্ঞরা অংশ নিয়েছেন।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ঘুমের ওষুধ খাইয়ে স্বামীকে হত্যা, ফাঁদ পেতে ধরা হলো প্রেমিককে

পাবনার চাটমোহর উপজেলার কাটেঙ্গা গ্রামে ক্যানসার আক্রান্ত স্বামীকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্ত্রীর বিরুদ্ধে। 
দশদিন পর ঘটনা জানাজানি হলে  অভিযুক্ত স্ত্রী শারমিন খাতুন ও তার প্রেমিককে আটক করে পুলিশ। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেলে পরিবারের সদস্যরা পুলিশকে ঘটনাটি জানায়। 

এর আগে গত ৩০ নভেম্বর চাটমোহরের দক্ষিণপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। মৃত স্বামী শের আলী (৩৫) দক্ষিণপাড়া গ্রামের ভোলা প্রামানিকের ছেলে। শারমিন খাতুন (২৬) কাটেঙ্গা গ্রামের শাহ আলমের মেয়ে। এবং তার প্রেমিক অনিক (২২) একইগ্রামের মহাজন সরকারের ছেলে। 

স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত ৩০ নভেম্বর শের আলীর মৃত্যু হয়। তিনি ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন। তার মৃত্যুর পর বিষয়টি স্বাভাবিক হিসেবে শুরুতে মেনে নিলেও সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে মৃত্যুকে ঘিরে পরিবারের সদস্য ও স্থানীয়দের মধ্যে নানা প্রশ্ন দেখা দেয়।
জানা যায়, শের আলীর চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও ইউটিউবারদের মাধ্যমে চিকিৎসা সহায়তার অর্থ সংগ্রহ করা হয়েছিল। অভিযোগ রয়েছে, সেই অর্থের একটি বড় অংশ শারমিন অনিককে দিয়েছেন। 

মৃত শের আলীর ফুপাতো ভাই এনামুল হোমেনের দাবি, শারমিন ও অনিকের মধ্যে ফেসবুক মেসেঞ্জারে হওয়া কথোপকথন ঘেঁটে টাকা লেনদেনের একাধিক তথ্য পাওয়া গেছে। সেখান থেকেই প্রথম সন্দেহের সূত্রপাত। 

এরপর ঘটনার সত্যতা যাচাই করতে পরিবারের সদস্যরা কৌশল অবলম্বন করেন। শারমিনের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন থেকে অনিককে টাকা দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে আসতে বলে মেসেজ পাঠানো হয়। অনিক এই ফাঁদে পা দেন।  

শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে অনিকে টাকা নিতে এলে স্থানীয়রা তাকে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদে অসংলগ্ন বক্তব্য ও পরস্পরবিরোধী তথ্য দিলে সন্দেহ আরও ঘনীভূত হয়। পরে অনিক ও শারমিন স্বীকার করেন, প্রায় চার মাস ধরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। 

শারমিন এ সময় জানান, গত ৩০ নভেম্বর একসঙ্গে দশটি ঘুমের ওষুধ শের আলীকে তিনি খাইয়েছিলেন। এতে শের আলীর শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটে এবং কিছু সময়ের মধ্যেই তার মৃত্যু হয়। 

শের আলীর মা শিরীনা খাতুন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘‘আমার অসুস্থ ছেলেকে ওর বউ ঘুমের ওষুধ খাইয়েছে। সে সহ্য করতে না পেরে অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে এসে দেখি আমার ছেলে আর বেঁচে নেই। আমি এর দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।’’

চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাম সরোয়ার হোসেন বলেন, ‘‘মৃত ব্যক্তির পরিবারে পক্ষ থেকে কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি বা মামলা করেনি। যেহেতু ঘটনাস্থল থেকে দুজনকে আটক করা হয়েছে, সেই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ আইনগত প্রক্রিয়া শেষে তাদের পাবনা আদালতে সোপর্দ করেছে।’’ 

ঢাকা/শাহীন//

সম্পর্কিত নিবন্ধ