শেখ হাসিনার পাশে না থাকলে বড় ভাইয়ের মত ক্রসফায়ারে যেতে হত— আদালতকে এমনটি জানিয়েছেন এক্সিম ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ও নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার।

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম এ আজহারুল ইসলামের আদালতে রিমান্ড শুনানিকালে একথা জানান তিনি।

রাজধানীর ধানমন্ডি থানা ও যাত্রাবাড়ী থানার দুই মামলায় তার ১০ দিন করে রিমান্ড আবেদন করা হয়। এদিন শুনানিকালে তাকে আদালতে হাজির করা হয়। রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করেন ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী।

ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, ‘‘আন্দোলন যখন চলছিল, সকল ব্যাংকার ও ব্যবসায়ীরা একটা মিটিং করেছিল। সেই মিটিংয়ে উনি বক্তব্য রেখেছিলেন। বক্তব্যে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের বিরোধিতা করেছিলেন এবং শেখ হাসিনাকে বলেছিলেন, আপনি চালিয়ে যান, আমরা পাশে আছি। তার এই বক্তব্য সব মিডিয়া ও সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার হয়েছে।’’

রাষ্ট্রপক্ষের এ আইনজীবী বলেন, ‘‘ফ্যাসিস্ট হাসিনা সব জায়গায় তার নিজস্ব লোক নিয়োগ করেছিল। ফুটবলে যেমন নিয়োগ করেছিলেন সালাউদ্দিনকে এবং সাংবাদিকদের নিয়ন্ত্রণ করতে শ্যামল দত্ত ও সুভাস সিংহ রায়ের মত লোককে। ব্যবসায় ও ব্যাংকারদের নিয়ন্ত্রণে যাকে নিয়োগ করেছিলেন, সেই লোক নজরুল ইসলাম মজুমদার।’’

ফারুকী বলেন, ‘‘ব্যাংক থেকে টাকা-পয়সা লুটপাট করে নিয়ে শেখ পরিবারকে সহযোগিতা করার জন্য সবকিছু করেছিলেন তিনি। এই মজুমদার তাদের সাথে বসে আন্দোলনের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন। সেই হিসেবে তিনি এই অপকর্মের সাথে জড়িত। এই আন্দোলনে যারা গুলি চালিয়েছে এবং যাদের নির্দেশে চালানো হয়েছে, তা থেকে তারা কোনোভাবেই দায় এড়াতে পারেন না।’’

আসামিপক্ষের আইনজীবী শুনানিতে বলেন, ‘‘তিনি এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান। বাংলাদেশের অনেক বড় শিল্প উদ্যোক্তা। তার অধীনে ৫ লাখ লোক কাজ করে। তিনি এখন জেলে। কোম্পানি বন্ধ হয়ে গেলে এসব লোক বেকার হয়ে যাবে। তার বিরুদ্ধে মামলায় কোন অভিযোগ নেই। তিনি কোনো রাজনৈতিক দলের সদস্য না। একজন ব্যবসায়ী মানুষ। সরকার আসে, সরকার যায়। তারা ব্যবসায়ী, তাদের সুবিধার জন্য যা করা দরকার, করে। জেলহাজতে থাকাকালীন তার হার্টে রিং পরানো হয়েছে বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে। তাকে একাধিক মামলায় আগে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। কোন কিছু পায়নি। তার শারীরিক যে অবস্থা, রিমান্ডে নেওয়ার মত কোনো সুযোগ নেই। রিমান্ড বাতিল করে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেওয়া হোক।’’

এরপর নজরুল ইসলাম নিজেই কিছু বলতে চান বলে আদালতকে বলেন। এরপর আদালত অনুমতি দেন।

তখন তিনি বলেন, ‘‘আমি হার্টের রোগী। অনেক কষ্ট হচ্ছে। ওই সময় শেখ হাসিনার পাশে না থাকলে আমাকে আমার বড় ভাই কুমিল্লার এমপি সাইফুল ইসলাম যিনি ৫ বছর এমপি ছিল। বড় ভাইকে ক্রসফায়ারে মারা গেছে। আমারও সেই অবস্থা হত। রিমান্ড বাতিল করে আমাকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন। আমি শারীরিকভাবে অসুস্থ। এটা আমার একটা সাবমিশন।’’

পরে আদালত তার রিমান্ডের আদেশ দেন।

ধানমন্ডি থানার মামলার সূত্রে জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট বিকেল ৫টায় রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকায় ছাত্র-জনতার সঙ্গে মিছিলে অংশ নেন শিক্ষার্থী শামীম (১৩)। মিছিলটি কলাবাগান এলাকায় পৌঁছালে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের অতর্কিত আক্রমণে আহত হন শামীম। এরপর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নেওয়া হলে পরদিন ৬ আগস্ট চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। এ ঘটনায় রাজধানীর ধানমন্ডি থানায় গত ৩ অক্টোবর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১২৮ জনের নামে হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের মা জাহানারা বেগম। 

যাত্রাবাড়ীর মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকার চিটাগাং রোডে গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন ইমন হোসেন গাজী নামের এক যুবক। এ ঘটনায় তার ভাই আনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে ২৮ আগস্ট যাত্রাবাড়ী থানায় ৮৫ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন।

ঢাকা/মামুন/এনএইচ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র ল ইসল ম কর ছ ল ন ব যবস য ধ নমন ড নজর ল আগস ট

এছাড়াও পড়ুন:

যাত্রাবাড়ীতে বিদ্যুৎমিস্ত্রিকে পিটিয়ে হত্যা

রাজধানীতে হাত ও পা বেঁধে রড দিয়ে পিটিয়ে আনোয়ার হোসেন (৪৩) নামের এক ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সকালে যাত্রাবাড়ীর কাউন্সিল শরিফ পাড়ায় বাসের অবকাঠামো তৈরির একটি কারখানায় এ ঘটনা ঘটে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) বিদ্যুৎমিস্ত্রি ছিলেন আনোয়ার হোসেন। তাঁর কর্মস্থল ছিল পুরান ঢাকার সদরঘাটে। পারিবারিক সূত্র জানায়, আনোয়ার হোসেন স্ত্রী ও দুই মেয়ে নিয়ে রাজধানীর মাতুয়াইলের মৃধাবাড়ি এলাকায় থাকতেন।

আনোয়ারের ভাই দেলোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল ভোরে আনোয়ার বাসা থেকে নামাজ পড়ার উদ্দেশ্যে বের হন। পরে খবর পান, তাঁর ভাইকে কাউন্সিল উত্তর শরিফ পাড়ায় বাসের অবকাঠামো তৈরির গ্যারেজে নিয়ে হাত–পা বেঁধে রাখা হয়েছে। এরপর সেখানে গিয়ে আনোয়ারের হাত–পা বাঁধা ও রক্তাক্ত মুমূর্ষু অবস্থায় দেখতে পান তাঁর মা।

লোহার রড দিয়ে পেটানো হয়েছে বলে মৃত্যুর আগের তাঁর মাকে জানিয়েছিলেন আনোয়ার। তাঁর ভাই এ কথা জানিয়ে বলেন, এর কিছুক্ষণ পরই ঘটনাস্থলেই আনোয়ারের মৃত্যু হয়। এরপর যাত্রাবাড়ীর থানা-পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠায়।

গতকাল সন্ধ্যায় যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ভোরে সঙ্গী সুমনকে নিয়ে আনোয়ার বাসের কাঠামো তৈরির কারখানায় চুরি করতে যান। এ সময় সেখানে থাকা লোকজন তাঁকে পিটিয়ে হত্যা করে। তাঁর সঙ্গী সুমন পালিয়ে যান।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ফাইনালে দ. আফ্রিকাকে ২৯৯ রানের টার্গেট দিল ভারত
  • শাহরুখকে ‘কুৎসিত’ বলেছিলেন হেমা মালিনী, এরপর...
  • প্রথম দেখায় প্রেম নাকি ঝগড়া? আসছে ইয়াশ–তটিনীর ‘তোমার জন্য মন’
  • জেমিনিতে যুক্ত হলো গুগল স্লাইডস তৈরির সুবিধা, করবেন যেভাবে
  • নড়াইলে ৩ দিন ধরে স্কুলছাত্রী নিখোঁজ
  • রোহিতের পর কোহলির রেকর্ডও কাড়লেন বাবর, পাকিস্তানের সিরিজ জয়
  • নাজমুলই থাকছেন টেস্ট অধিনায়ক
  • বন্দীদের ফুল দিয়ে বরণ, চালু হলো ফেনীর দ্বিতীয় কারাগার
  • সিলেটে বাসদ কার্যালয়ে পুলিশের অভিযান, আটক ২২
  • যাত্রাবাড়ীতে বিদ্যুৎমিস্ত্রিকে পিটিয়ে হত্যা