জামায়াতে ইসলামীর প্রতি উদারতা দেখিয়ে বিএনপি উপহার হিসেবে মুনাফেকি পেয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। আজ বুধবার সন্ধ্যার আগে রাজশাহী বাগমারা উপজেলার তাহেরপুরে উপজেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আবদুল ওয়াহেদ মণ্ডলের ২৩তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

তাহেরপুর পৌর বিএনপির উদ্যোগে স্থানীয় স্কুল মাঠে আয়োজিত স্মরণসভায় রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘বিএনপি সব সময় জামায়াতের প্রতি উদারতা দেখিয়েছে। এই উদারতার সুযোগ নিয়ে জামায়াত রাজনীতি করছে। আওয়ামী লীগ স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে তাদের নিষিদ্ধের ঘোষণা করলেও বিএনপি সমর্থন করেছে। এই উদারতা দেখানোর পর বিএনপি উপহার হিসেবে পেয়েছে মুনাফেকি।’

রিজভী আরও বলেন, ‘স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী আন্দোলনে একসঙ্গে আন্দোলন করেছিল সব দল। তখন খালেদা জিয়ার কথা ছিল, তাঁর (এরশাদ) অধীনে কোনো নির্বাচনে যাবে না। তবে মুনাফেক জামায়াত আওয়ামী লীগকে সঙ্গে নিয়ে নির্বাচনে যায়।’

আওয়ামী লীগ সরকারের সমালোচনা করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগের সময় মতপ্রকাশের কোনো স্বাধীনতা ছিল না। মতের বাইর গেলে গুম, খুন করা হয়েছে। আয়নাঘর তৈরি করে নেতা-কর্মীদের বছরের পর বছর আটকে রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, মামলা দিয়েও হয়রানি করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে তিন শতাধিক মামলা রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

তাহেরপুর পৌর বিএনপির সভাপতি আবু নঈম মোহাম্মদ সামসুর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সাইফুল ইসলাম, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাইদ (চাঁদ), সদস্যসচিব বিশ্বনাথ সরকার, মহানগরের আহ্বায়ক এরশাদ আলী, সদস্যসচিব মামুন অর রশিদ, বাগমারার সদস্যসচিব কামাল হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যসচিব জাহিদুল ইসলাম প্রমুখ।

রাজশাহী মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব মামুন অর রশিদ তাঁর বক্তব্য জামায়াত-শিবিরের সমালোচনা করে ‘বেইমান’ বলে উল্লেখ করেন। বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা রফিকুল ইসলাম জামায়াতের নাম উল্লেখ না করে বলেন, ‘তাদের একটি ছাত্রসংগঠন আছে, যার আত্মপ্রকাশ হয়েছে রগ কাটার মাধ্যমে। এরা এখন ষড়যন্ত্রের বীজ বপন করছে। তাদের বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সদস যসচ ব র সদস য র ব এনপ ব এনপ র ল ইসল ম আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

নিষেধাজ্ঞা শেষে ইলিশ ধরা শুরু, চাঁদপুরের মাছঘাটে কর্মব্যস্ততা

চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনার ৭০ কিলোমিটার নদীর অভয়াশ্রমে দুই মাস পর ইলিশসহ অন্যান্য মাছ ধরা শুরু হয়েছে। সরকারি পর্যায়ের আদেশে জাটকা রক্ষা ও অন্যান্য মাছ বৃদ্ধিতে গত ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ৬০ দিন শিকার বন্ধের পর বুধবার মধ্যরাত থেকেই জেলেরা নদীতে শিকারে নেমেছে। কর্মব্যস্ততা ফিরেছে চাঁদপুরের মাছঘাটে। তবে প্রথম দিনে আশানুরূপ ইলিশ না পাওয়ার কথা জানিয়েছেন জেলেরা।

মাছ আহরণ কম হওয়ায় প্রথম দিনে আড়তে তেমন ব্যস্ততা চোখে পড়েনি। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত ১০ মণ ইলিশও আসেনি মাছের বড় ঘাট বড় স্টেশনে। তাছাড়া বরিশাল, বরগুনা, ভোলা, লক্ষ্মীপুর, সন্দ্বীপসহ দক্ষিণাঞ্চলের ইলিশ আজ দুপুর পর্যন্ত পৌঁছেনি চাঁদপুর মাছ ঘাটে। নদী তীরে দক্ষিণাঞ্চল থেকে ইলিশের কার্গো ও নৌকাও আসেনি। ইলিশের সরবরাহ কম হওয়ায় দাম অনেক বেশি বলে জানিয়েছেন আড়তদাররা।

বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ইলিশের পাইকারি বাজার চাঁদপুর বড়স্টেশন মাছঘাট ঘুরে দেখা গেছে, দীর্ঘদিন পর বেচাকেনা কিছুটা শুরু হওয়ায় কর্মচাঞ্চল্য ফিরেছে ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের মাঝে।

পুরান বাজারের হরিসভা অঞ্চলের জেলে বাবুল, সেলিম, মনির হোসেন বলেন, ভোরে মাছ ধরতে নেমেছি। নদীতে তেমন মাছ নাই। ইলিশ না পেলেও পোয়া, পাঙাশ, চিংড়িসহ বিভিন্ন দেশীয় মাছ পাওয়া যাচ্ছে। মাছ বিক্রির জন্য বড়স্টেশন মাছঘাটে এসেছি। তবে এই মাছে তেলের টাকাও উঠছে না।

ব্যবসায়ীরা জানান, আজকের আড়তে এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে তিন হাজারে। এক কেজির কম ওজনের ২ হাজার ৫০০ টাকায়। সরবরাহ না বাড়লে দাম কমার সম্ভাবনা নেই বলে জানান তারা।

এদিকে শহরের সবচেয়ে বড় বাজার পালবাজার ঘুরে দেখা গেছে, সেখানের খুচরা ব্যবসায়ীরা আড়ত থেকে ইলিশই আনেননি। ‘কারণ’ হিসাবে কিরন নামে একজন ব্যবসায়ী বললেন, ‘তিন হাজার টাকার কেজিতে ইলিশ কে কিনবো বলেন? কয়জনে কিনবো? আমরা বেঁচমো কতো?’ 
 
চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শবে বরাত সরকার বলেন, এখন নদীতে পানি কম। স্রোত ও বৃষ্টিও কম। ফলে এ সময়ে ইলিশ কম পাওয়া যায়।

চাঁদপুরের ইলিশ ক্রেতা মোহন মাছঘাটে এসেছেন ইলিশ কিনতে। দাম শুনেই ফিরে গেলেন। তিনি সমকালকে বললেন, ‘আমাদের চাঁদপুরের মানুষের ইলিশ খাওয়া বড় কঠিন হয়ে পড়ছে। আজকেও যেমন আবার ভরা মৌসুমেও দেখবো দাম আর কমবে না!’

সম্পর্কিত নিবন্ধ