নড়াইলে শেখ রাসেল সেতুর নামফলক ভেঙে নতুন নামকরণ
Published: 13th, February 2025 GMT
নড়াইল শহরের পুরাতন ফেরিঘাট এলাকায় চিত্রা নদীতে শেখ রাসেল সেতুর নামফলকের মূল অংশ ভেঙে সেতুটির নতুন নামকরণ করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সেতুর পূর্ব পাশে থাকা নামফলক ভেঙে তাঁরা সেতুটির নাম দিয়েছেন ‘শহীদ সালাউদ্দিন সেতু’।
বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে সেতুর দুই পাশে বড় করে দুটি ব্যানারও টানানো হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলার সদস্যসচিব শাফায়াত উল্লাহর নেতৃত্বে এ সময় যুগ্ম সদস্যসচিব আমিরুল ইসলাম ও মেহেদী হাসান, মুখ্য সংগঠক কাজী ইয়াজুর রহমানসহ নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা বলেন, দেশের কোনো স্থাপনায় ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের পরিবারসহ কারও নাম রাখা হবে না। সেই অনুযায়ী, তাঁরা জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নড়াইলের শহীদ সালাউদ্দিন সুমনের নামে সেতুটির নাম পরিবর্তন করে ‘শহীদ সালাউদ্দিন সেতু’ নাম দিয়েছেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলার সদস্যসচিব শাফায়াত উল্লাহ বলেন, ‘নড়াইলের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত গুরুত্বপূর্ণ একটি সেতু, যার নাম ছিল শেখ রাসেল সেতু। আজ সেটির নাম পরিবর্তন করে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদ সালাউদ্দিন ভাইয়ের নামে নামকরণ করে দিলাম। এরপর খাতা-কলমে সেতুটির নাম পরিবর্তনের জন্য আমরা আবেদন করব।’ তিনি বলেন, নড়াইলসহ সারা দেশে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দোসরদের নামে কোনো স্থাপনা থাকবে না। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সাধারণ জনগণের প্রত্যাশা পূরণে সব সময় রাজপথে থাকবে।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের অধীনে ২৯ কোটি ১১ লাখ টাকা ব্যয়ে শেখ রাসেলের নামে সেতুটি নির্মাণ করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। ২০১৮ সালের ১১ অক্টোবর সেতুটির উদ্বোধন করেছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
শেখ হাসিনার সঙ্গে আসামি ৮ প্রাক্তন ভিসিসহ ২০১ জন
ঢাকার সরকারি আলিয়া মাদ্রাসার এক ছাত্রকে ‘হত্যাচেষ্টা’র অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তাঁর বোন শেখ রেহানাসহ ২০১ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য, শিক্ষক, সাংবাদিক, অভিনেতা-অভিনেত্রীদেরও আসামি করা হয়েছে।
ঢাকা মহানগর হাকিম মনিরুল ইসলাম বুধবার অভিযোগটি আমলে নিয়ে শাহবাগ থানাকে এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। গত ২০ মার্চ সরকারি আলিয়া মাদ্রাসার ছাত্র সাইফুদ্দিন মোহাম্মদ এমদাদের পক্ষে ছাত্রদলের সাবেক নেতা এম এ হাশেম রাজু আদালতে এ মামলার আবেদন করেন।
মামলায় অপর আসামিদের মধ্যে রয়েছেন– শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সালমান এফ রহমান, আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ প্রমুখ। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্যসহ কয়েকজন শিক্ষক আছেন আসামির তালিকায়। তারা হলেন– ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. আখতারুজ্জামান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. হারুন-অর-রশিদ, ঢাবি শিক্ষক অধ্যাপক মেসবাহ কামাল ও অধ্যাপক আবু জাফর মো. শফিউল আলম ভূঁইয়া, অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য মুহম্মদ জাফর ইকবাল, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য আনোয়ার হোসেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য মীজানুর রহমান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য আবদুল মান্নান, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য এম অহিদুজ্জামান, প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য ড. অনুপম সেন, সাংবাদিক নাঈমুল ইসলাম খান, নঈম নিজাম, শ্যামল দত্ত, মোজাম্মেল বাবু, আলমগীর হোসেন, আবেদ খান প্রমুখ।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে– ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় গত ৪ আগস্ট সকালে মামলার বাদী এম এ হাশেম রাজুর নেতৃত্বে একটি মিছিল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে পরীবাগে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনের মোড়ে এসে পৌঁছায়। তখন ছাত্রলীগ, যুবলীগ, আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী পথরোধ করে ছাত্র-জনতাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলিবর্ষণ, হাতবোমা, পেট্রোল বোমা ও ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়। এ গুলিতে আলিয়া মাদ্রাসার শিক্ষার্থী সাইফুদ্দিন মোহাম্মদ এমদাদের ডান চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
এদিকে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে আব্দুন নূর নামে এক সাংবাদিক নিহতের ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনাসহ ১৬২ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। নিহতের বাবা হাফেজ আবুল বাশার গত মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর হাকিম এম মিজবাউর রহমানের আদালতে এ মামলা করেন।
মামলায় অপর আসামিদের মধ্যে রয়েছেন– সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামাল, আনিসুল হক, হাছান মাহমুদ, সালমান এফ রহমান প্রমুখ।
মামলার বাদী আবুল বাশার বলেন, আব্দুন নূর ময়মনসিংহের গফরগাঁও এলাকায় অভিযান নিউজ নামে পত্রিকার রিপোর্টার ছিল। আন্দোলনের সময় ১ আগস্ট সে ঢাকায় আসে এবং যাত্রাবাড়ীতে ৫ আগস্ট গুলিতে মারা যায়।