আরেকটি একপেশে ম্যাচ। পুরো সিরিজেই অবশ্য এমন হচ্ছে। টেস্ট সিরিজে শ্রীলঙ্কা অস্ট্রেলিয়ার সামনে দাঁড়াতেই পারেনি। আর ওয়ানডে সিরিজে সেই অস্ট্রেলিয়াই মুখথুবড়ে পড়েছে শ্রীলঙ্কার কাছে।

প্রথম ওয়ানডেতে লঙ্কানদের কাছে ৪৯ রানে হারের পর আজ কলম্বোয় অস্ট্রেলিয়া হেরে গেছে ১৭৪ রানে। টসে জিতে ব্যাটিংয়ের নেমে চারিত আসালাঙ্কার দল তুলেছিল ২৮১ রান। জবাবে অস্ট্রেলিয়া গুটিয়ে গেছে মাত্র ১০৭।

ওয়ানডেতে এশিয়ায় যা অস্ট্রেলিয়ার সর্বনিম্ন, আর সব মিলিয়ে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন স্কোর। আর তাতেই দুই ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ শ্রীলঙ্কা জিতেছে ২-০ ব্যবধানে।

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার এই সিরিজ মূলত চ্যাম্পিয়নস ট্রফির প্রস্তুতি। এরই অংশ হিসেবে অস্ট্রেলিয়া আজ দলে পরিবর্তন এনেছিল পাঁচটি। দলে ফেরেন ট্রাভিস হেড ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। দুজনের কেউই অবশ্য রান পাননি। হেড করেছেন ১৮, ম্যাক্সওয়েল ১। সব মিলিয়ে প্রস্তুতিটাও ভালো হয়নি।

তাতে মূল খেলোয়াড়দের অবর্তমানে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে অমীমাংসিত অনেক প্রশ্ন নিয়েই যেতে হচ্ছে অস্ট্রেলিয়াকে।

২৮১ রানের জবাবে ব্যাটিং করতে নেমে শুরু থেকে অস্ট্রেলিয়ার চাপে ছিল। বিশেষ করে ৩৩ রানের মধ্যে ম্যাথু শর্ট, জেইক ফ্রেসার ম্যাগার্ক ও হেড আউট হলে। এরপর জশ ইংলিশ ও স্টিভ স্মিথ ৪৬ রানের জুটি গড়েছিলেন। ইংলিশ ২২ রান করে চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হলে এরপর কেউ দাঁড়াতেই পারেননি।

শেষ ২৮ রান নিতে তারা হারিয়েছে ৭ উইকেট। দলের সর্বোচ্চ ২৯ রান এসেছে অধিনায়ক স্মিথের ব্যাটে। স্পিনার দুনিত ভেল্লালাগে নিয়েছেন ৪ উইকেট। ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন হাসারাঙ্গা ও আসিতা ফার্নান্দো।

গত ম্যাচে সেঞ্চুরি করা আসালাঙ্কা আজও খেলেছেন ৭৮ রানের ইনিংস। তবে শ্রীলঙ্কার ব্যাটিংয়ের মূল বিজ্ঞাপন ছিলেন কুশল মেন্ডিস। গলে সিরিজের শেষ টেস্টের দুই ইনিংসেই ফিফটি করা কুশল আজ পেয়েছেন ক্যারিয়ারের পঞ্চম সেঞ্চুরি।

টসে জিতে ব্যাটিং নেওয়া শ্রীলঙ্কাকে শুরু থেকে তিনিই টেনেছেন। শুরুতে পাতুম নিশাঙ্কাকে হারালেও নিশান মাদুশকাকে নিয়ে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ৯৮ রানের জুটি গড়েন মেন্ডিস। ৫১ রানে মাদুশকা আউট হওয়ার পর কামিন্দু মেন্ডিস আউট হন ৪ রান করে।

এরপর আসালাঙ্কার সঙ্গে ৯৪ রানের জুটি গড়েন মেন্ডিস। ১১৩ বলে সেঞ্চুরি করা মেন্ডিস ফেরেন ১০২ রানে। বাকি কাজটা সারেন আসালাঙ্কা ও জিনাত লিয়ানেগে। ৩৫ বলে ৬৬ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে লিয়ানেগের অবদান ছিল ২১ বলে ৩২।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:
শ্রীলঙ্কা: ২৮১/৪(মেন্ডিস ১০২, আসালাঙ্কা ৭৮*; অ্যাবট ১/৪১, জাম্পা ১/৪৭)।
অস্ট্রেলিয়া: ১০৭/১০(স্মিথ ২৯, ইংলিশ ২২; ভেল্লালাগে ৪/৩৫, হাসারাঙ্গা ৩/২৩)।
ফল: শ্রীলঙ্কা ১০৭৪ রানে জয়ী।
ম্যাচসেরা: কুশল মেন্ডিস।
সিরিজ–সেরা: চারিত আসালাঙ্কা।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

কোরবানির গরু কেনার আড়াই লাখ টাকা ছিনিয়ে নিতে ব্যবসায়ী জাকিরকে হত্যা করা হয়

রাজধানীর সবুজবাগের প্লাস্টিক ব্যবসায়ী জাকির হোসেনের সঙ্গে থাকা আড়াই লাখ টাকা ছিনিয়ে নিতেই ধারালো অস্ত্রের আঘাতে তাঁকে ছয় টুকরা করে লাশ বস্তায় ঢুকিয়ে কাছের একটি ঝোপের ভেতরে পুঁতে রাখা হয়। এর আগে আজহারুল ইসলাম (গ্রেপ্তার) মুঠোফোনে সবুজবাগের ভাইগদিয়ায় তাঁর ভাড়া বাসায় জাকিরকে (৫৫) ডেকে নেন।

গ্রেপ্তার আজহারুল ইসলাম (৩৯) আজ শুক্রবার আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এ কথা বলেছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। আদালত তাঁর জবানবন্দি নিয়ে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এ ছাড়া এ হত্যাকাণ্ডে গ্রেপ্তার শুক্কুর আলী (৪৪), মো. রাজীব (২৬) ও স্বপনকে (২৫) পাঁচ দিন করে পুলিশি হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন আদালত। গ্রেপ্তার শুক্কুর আলী পেশায় রাজমিস্ত্রি এবং বাকিরা রংমিস্ত্রি।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সবুজবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. সামছুল আমিন আজ প্রথম আলোকে বলেন, গ্রেপ্তার আজহারুল, শুক্কুর আলী, রাজীব ও স্বপন জবানবন্দি দিতে রাজি হওয়ায় দুপুরে তাঁদের ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে পাঠানো হয়। এর মধ্যে আজহারুল আদালত জবানবন্দি দেন। অপর তিনজন জবানবন্দি দিতে রাজি হননি। পরে তাঁদের সাত দিন করে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন জানানো হয়। শুনানি শেষে আদালত তাঁদের পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

মামলার তদন্ত–সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আজহারুল আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে বলেন, জাকির হোসেনের সঙ্গে তাঁদের চারজনের (আজহারুল, শুক্কুর আলী, রাজীব ও স্বপন) বন্ধুত্ব ছিল। তাঁরা একসঙ্গে আড্ডা দিতেন। মাঝেমধ্যে জাকিরের সঙ্গে তাঁর ভাইগদিয়ার ভাড়া বাসায় তাঁরা একসঙ্গে মদ্যপান করতেন। ৪ জুন রাতে জাকির নন্দীপাড়ায় শেখের বাজারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে বাসায় ফিরছিলেন। তখন আজহারুল মুঠোফোনে জাকিরকে তাঁর বাসায় ডেকে নেন। ওই বাসায় আজহার একা থাকতেন। আগেই জাকির তাঁদের জানিয়েছিলেন, তাঁর কাছে কোরবানির গরু কেনার আড়াই লাখ টাকা আছে এবং ডেমরার আমুলিয়া পশুরহাট থেকে কোরবানির জন্য গরু কিনবেন। জাকির তাঁর বাসায় পৌঁছানোর পর ওই টাকার ওপর তাঁদের সবার লোভ জাগে। তাঁরা টাকা ছিনিয়ে নিতে গেলে জাকির বাধা দেন। তখন ইস্পাতের পাইপ দিয়ে জাকিরের মাথায় সজোরে আঘাত করেন আজহারুল। এতে জাকির অচেতন হয়ে যান। এ সময় তাঁর কাছ থেকে এক হাজার টাকার দুটি বান্ডিল ছিনিয়ে নিয়ে সেই টাকা শুক্কুর আলীর কাছে জমা রাখেন।

পুলিশ সূত্র জানায়, আজহারুল আদালতকে জানান, জাকিরকে বাঁচিয়ে রাখা হলে তাঁরা সবাই ফেঁসে যাবেন—এমন আশঙ্কায় জাকিরকে হত্যা করে লাশ গুম করার সিদ্ধান্ত নেন। এরপর ধারালো অস্ত্রের আঘাতে জাকিরের শরীর থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করে ফেলেন। এরপর শুক্কুর, রাজীব ও স্বপন তাঁর শরীর টুকরা টুকরা করেন। পরে লাশের ছয়টি টুকরা রঙের দুটি পাত্রে ভরে একটি অটোরিকশায় করে দক্ষিণ ভাইগদিয়ায় নিয়ে যান। শুক্কুর, রাজীব ও স্বপন অন্য পথ দিয়ে দক্ষিণ ভাইগদিয়ায় আসেন। তখন তাঁরা সবাই মিলে বালতিভর্তি লাশের টুকরাগুলো পাশের ঝোপে নিয়ে যান। এরপর সেখানে খুঁড়ে লাশের টুকরাগুলো পুঁতে রাখেন।

আজহারুল আদালতকে বলেন, জাকিরের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া টাকা ভাগাভাগি করার আগেই তাঁরা পুলিশের হাতে ধরা পড়েন।

পুলিশ কর্মকর্তা সামছুল আমিন বলেন, আজহারুলের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাহেরচরে। বাকি তিনজন ঢাকার সবুজবাগের ভাইগদিয়ার স্থায়ী বাসিন্দা।

প্লাস্টিক ব্যবসায়ী জাকির হোসেন সপরিবার সবুজবাগ থানার ভাইগদিয়া এলাকায় থাকতেন। ৪ জুন জাকির হোসেন নিখোঁজ হন। এরপর স্বজনেরা বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করেও তাঁর সন্ধান পাননি। পরদিন জাকির নিখোঁজ রয়েছেন বলে তাঁর স্ত্রী রেখা বেগম সবুজবাগ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এর মধ্যে জাকিরের খোঁজ না পাওয়ায় তিনি ১০ জুন আজহার আলীসহ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে সবুজবাগ থানায় একটি অপহরণের মামলা করেন।

পুলিশ কর্মকর্তা সামছুল আমিন বলেন, এ মামলার তদন্ত করতে গিয়ে এলাকার ক্লোজড সার্কিট টেলিভিশন (সিসিটিভি) ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় হত্যাকাণ্ডে জড়িত আজহারুলকে শনাক্ত করা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে আজহারের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে হত্যায় জড়িত অভিযোগে গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে অপর তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল রাতে জাকির হোসেনকে ভাইগদিয়ায় দাফন করা হয়।

সবুজবাগ থানার ওসি ইয়াছিন আলী প্রথম আলোকে বলেন, জমিজমা নিয়ে বিরোধের জের ধরে জাকিরকে হত্যা করা হয়েছে বলে তাঁর পরিবার অভিযোগ করলেও তদন্তে এখন পর্যন্ত এর সত্যতা পাওয়া যায়নি। জাকির হত্যায় আরও একজন জড়িত। তাঁকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পুরনো স্বাদের ঝুরা মাংসের
  • ভাত খাওয়ার সময় কেন ভাতটাই পরে খেতে বলেন চিকিৎসকেরা?
  • অ্যান্টার্কটিকায় বিরল স্কুইডের সন্ধান
  • পানিতে ভাসছিল ২২ দিনের শিশুর মৃতদেহ, ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন মা
  • বাঁধন কাঁদলেন, কিন্তু কেন...
  • মামাত বোনকে ধর্ষণ-হত্যা করে নিখোঁজের গল্প সাজায় নয়ন: পুলিশ
  • আমাদের যত ঘুঘু 
  • বাউন্ডারি সীমানায় ক্যাচের নিয়ম পাল্টাচ্ছে এমসিসি
  • কমিটি নেই, সবাই নেতা
  • কোরবানির গরু কেনার আড়াই লাখ টাকা ছিনিয়ে নিতে ব্যবসায়ী জাকিরকে হত্যা করা হয়