কক্সবাজারের টেকনাফের শাহ পরীর দ্বীপ সংলগ্ন নাফ নদীতে ২০০ কেজি ওজনের একটি বিশাল ভোল মাছ ধরা পড়েছে। রোববার সকালে শাহ পরীর দ্বীপের ঘোলার চর এলাকায় স্থানীয় জেলে কালু ফকিরের মালিকানাধীন টানা জালে মাছটি আটকা পড়ে।

শাহ পরীর দ্বীপ ট্রলার মালিক সমবায় সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ হাসান জানান, সকালে নাফ নদীর মোহনায় জেলেরা টানা জাল ফেলে। ঘণ্টাখানেক পর যখন জাল টানা হয়, তখন দেখা যায়, ছোট মাছের সঙ্গে বিশাল ভোল মাছটিও আটকা পড়েছে। পরে জেলেরা রশি বেঁধে মাছটি টেনে চরের ওপরে তোলে। এরপর শাহ পরীর দ্বীপ জেটিঘাটে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে এটি দেখতে ভিড় করেন অনেকে।

শাহ পরীর দ্বীপ কোনাপাড়ার নৌকার মাঝি নুর মোহাম্মদ বলেন, আমাদের জালে প্রথম এত বড় ভোল মাছ ধরা পড়ল। প্রথমে ৩ লাখ টাকা দাম হাঁকা হলেও, শেষ পর্যন্ত ২ লাখ ৬০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে।

টেকনাফ উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন বলেন, শীত মৌসুমে ৫ থেকে ১৫ কেজি ওজনের বোল মাছ ধরা পড়লেও এত বড় মাছ সাধারণত দেখা যায় না। সাগরে মাছ ধরার সরকারি নিষেধাজ্ঞা মানার কারণে মাছগুলো বড় হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে, যা জেলেদের জন্য লাভজনক হচ্ছে।

এদিকে মাছটি বাজারে বিক্রির জন্য মাইকিং করা হচ্ছে। মাছ ব্যবসায়ী আবদুর শুক্কুর বলেন, প্রায় ২০০ কেজি ওজনের মাছটি আড়াই লাখ টাকায় কেনা হয়েছে। এখন বাজারে কেজি প্রতি প্রায় ১,৫০০ টাকায় বিক্রি করা হবে।

স্থানীয়রা বলছেন, এত ভোল মাছ ধরা পড়া বিরল ঘটনা। জেলেরা বড় মাছ ধরে যেমন খুশি, তেমনি উৎসুক মানুষও এমন দৃশ্য দেখে আনন্দ পান।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ট কন ফ শ হ পর র দ ব প

এছাড়াও পড়ুন:

ঘুমের ওষুধ খাইয়ে স্বামীকে হত্যা, ফাঁদ পেতে ধরা হলো প্রেমিককে

পাবনার চাটমোহর উপজেলার কাটেঙ্গা গ্রামে ক্যানসার আক্রান্ত স্বামীকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্ত্রীর বিরুদ্ধে। 
দশদিন পর ঘটনা জানাজানি হলে  অভিযুক্ত স্ত্রী শারমিন খাতুন ও তার প্রেমিককে আটক করে পুলিশ। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেলে পরিবারের সদস্যরা পুলিশকে ঘটনাটি জানায়। 

এর আগে গত ৩০ নভেম্বর চাটমোহরের দক্ষিণপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। মৃত স্বামী শের আলী (৩৫) দক্ষিণপাড়া গ্রামের ভোলা প্রামানিকের ছেলে। শারমিন খাতুন (২৬) কাটেঙ্গা গ্রামের শাহ আলমের মেয়ে। এবং তার প্রেমিক অনিক (২২) একইগ্রামের মহাজন সরকারের ছেলে। 

স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত ৩০ নভেম্বর শের আলীর মৃত্যু হয়। তিনি ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন। তার মৃত্যুর পর বিষয়টি স্বাভাবিক হিসেবে শুরুতে মেনে নিলেও সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে মৃত্যুকে ঘিরে পরিবারের সদস্য ও স্থানীয়দের মধ্যে নানা প্রশ্ন দেখা দেয়।
জানা যায়, শের আলীর চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও ইউটিউবারদের মাধ্যমে চিকিৎসা সহায়তার অর্থ সংগ্রহ করা হয়েছিল। অভিযোগ রয়েছে, সেই অর্থের একটি বড় অংশ শারমিন অনিককে দিয়েছেন। 

মৃত শের আলীর ফুপাতো ভাই এনামুল হোমেনের দাবি, শারমিন ও অনিকের মধ্যে ফেসবুক মেসেঞ্জারে হওয়া কথোপকথন ঘেঁটে টাকা লেনদেনের একাধিক তথ্য পাওয়া গেছে। সেখান থেকেই প্রথম সন্দেহের সূত্রপাত। 

এরপর ঘটনার সত্যতা যাচাই করতে পরিবারের সদস্যরা কৌশল অবলম্বন করেন। শারমিনের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন থেকে অনিককে টাকা দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে আসতে বলে মেসেজ পাঠানো হয়। অনিক এই ফাঁদে পা দেন।  

শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে অনিকে টাকা নিতে এলে স্থানীয়রা তাকে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদে অসংলগ্ন বক্তব্য ও পরস্পরবিরোধী তথ্য দিলে সন্দেহ আরও ঘনীভূত হয়। পরে অনিক ও শারমিন স্বীকার করেন, প্রায় চার মাস ধরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। 

শারমিন এ সময় জানান, গত ৩০ নভেম্বর একসঙ্গে দশটি ঘুমের ওষুধ শের আলীকে তিনি খাইয়েছিলেন। এতে শের আলীর শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটে এবং কিছু সময়ের মধ্যেই তার মৃত্যু হয়। 

শের আলীর মা শিরীনা খাতুন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘‘আমার অসুস্থ ছেলেকে ওর বউ ঘুমের ওষুধ খাইয়েছে। সে সহ্য করতে না পেরে অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে এসে দেখি আমার ছেলে আর বেঁচে নেই। আমি এর দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।’’

চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাম সরোয়ার হোসেন বলেন, ‘‘মৃত ব্যক্তির পরিবারে পক্ষ থেকে কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি বা মামলা করেনি। যেহেতু ঘটনাস্থল থেকে দুজনকে আটক করা হয়েছে, সেই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ আইনগত প্রক্রিয়া শেষে তাদের পাবনা আদালতে সোপর্দ করেছে।’’ 

ঢাকা/শাহীন//

সম্পর্কিত নিবন্ধ