বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও বরিশাল-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জহির উদ্দিন স্বপন বলেছেন, ‘যে ক্ষমতাবলে জনগণ স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন, সেই ক্ষমতার বলেই তাঁরা জাতীয় নির্বাচনে ভোট দেবেন। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেহেতু জনগণের ম্যান্ডেটপ্রাপ্ত নয়, তাই জনগণ তাঁদের ভোটাধিকারের ক্ষমতা আগে সরকার নির্বাচনের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করবেন—এটাই রীতি। কিন্তু জনগণের ক্ষমতাকে স্থগিত রেখে যদি অন্য কিছু আদায় করার চেষ্টা করা হয়, তাহলে তাতে ঘাটতি থেকেই যাবে।’

আজ রোববার দুপুরে বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে ‘অবাধ মুক্ত তথ্যপ্রবাহ জনগণের অধিকার আমাদের অঙ্গীকার’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে জহির উদ্দিন স্বপন এই মন্তব্য করেন। এ সময় তিনি দেশের চলমান পরিস্থিতি ও ভবিষ্যৎ পরিস্থিতিতে সাংবাদিকতার বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ, একটি গণতান্ত্রিক, জবাবদিহিমূলক শাসনব্যবস্থায় আধুনিক সাংবাদিকতার ভূমিকাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।

মতবিনিময় চলাকালে জহির উদ্দিন স্বপন সাংবাদিকদের অন্তর্বর্তী সরকারের চলমান সংস্কার কর্মসূচি, নির্বাচন ও সংস্কার নিয়ে   বিএনপি-জামায়াতের রাজনৈতিক মতবিরোধ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের নতুন রাজনৈতিক দল গঠনসহ সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।

জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির সাম্প্রতিক মতানৈক্য প্রসঙ্গে জহির উদ্দিন স্বপন বলেন, ‘জামায়াত ও বিএনপি-আওয়ামী লীগের মধ্যে সম্পর্ক সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্নভাবে পরিবর্তিত হয়েছে। ১৯৯৬ সালে বিএনপিকে ক্ষমতা থেকে সরাতে জামায়াত আওয়ামী লীগের সঙ্গে আন্দোলন করেছিল। আবার ১৬ বছর ধরে আমরা ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আন্দোলনে জামায়াতসহ অন্যান্য ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক শক্তির সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। এই মুহূর্তে দেশে ফ্যাসিবাদমুক্ত পরিবেশ তৈরি হয়েছে। আগামীতে জরুরি সংস্কার শেষে দেশে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই নির্বাচনের পরিপ্রেক্ষিত আমরা আমাদের রাজনীতি করব, আর  জামায়াত তাদের রাজনীতি করবে।’

এই প্রসঙ্গে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘ইতিমধ্যে জামায়াতের পক্ষ থেকে দু-এক নেতা বলেছেন, সংস্কারের আগে জাতীয় নির্বাচন নয়। এ ব্যাপারে বিএনপির দু-এক নেতা পাল্টা আমাদের যুক্তি তুলে ধরেছেন। আমরা মনে করি, জনগণের অংশগ্রহণে একটি অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিতের জন্য অনিবার্য যেসব সংস্কার দরকার, তা অবশ্যই করতে হবে। জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত হওয়ার পর যে নির্বাচিত সরকার আসবে তারা বাকি সংস্কার করবে। এভাবে আমরা সংস্কার কার্যক্রমকে দুইভাবে ভাগ করেছি। কিন্তু জামায়াত আপাতত সংস্কারের কথা এমনভাবে বলছে, যেভাবে শেখ হাসিনা উন্নয়নের নামে নির্বাচনকে প্রলম্বিত করেছিল। সংস্কারের নামে জনগণকে ঘুম পাড়িয়ে রাখার প্রবণতা কাজ করতে পারে বলে আমাদের অনুমান। এটা আমাদের কেবল একটি গণতান্ত্রিক বিতর্ক, কোনো শত্রুতা নয়।’

এ বিষয়ে জহির উদ্দিন আরও বলেন, ‘আমরা চাই, জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সংস্কার করা হোক। সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমেই ভবিষ্যৎ সরকার গঠিত হবে, যা জনগণের প্রত্যাশিত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পথে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’

অনুষ্ঠানে বিএনপির জাতীয় সরকার গঠনের পরিকল্পনা নিয়ে জহির উদ্দিন স্বপন বলেন, ২০২২ সালে লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান একটি সভায় বলেছিলেন, বিএনপি একা ক্ষমতায় যেতে চায় না। সব রাজনৈতিক দল, বরেণ্য বুদ্ধিজীবী এবং প্রাজ্ঞ রাজনীতিবিদদের সমন্বয়ে একটি জাতীয় সরকার গঠনের মাধ্যমে দেশ পরিচালনা করার ঘোষণা তিনি দিয়েছেন। তারেক রহমান সংসদকে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট করার পরিকল্পনার কথা বলেছেন। রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য তিনি ৩১ দফা প্রস্তাবনা দিয়েছেন।

বিএনপি চেয়ারপাসনের উপদেষ্টা ও বরিশাল-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জহির উদ্দিন স্বপন রোববার দুপুরে বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স স ক র কর র জন ত ক ব এনপ র জনগণ র র র জন বর শ ল আম দ র সরক র ক ষমত

এছাড়াও পড়ুন:

লন্ডন বৈঠকে অবিশ্বাস দূর, সরকারের সম্মানজনক প্রস্থানের পথ সুগম হবে: সাইফুল হক

লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠক দেশে আগামী সংসদ নির্বাচনকেন্দ্রিক অচলাবস্থা, সন্দেহ ও অবিশ্বাস দূর করবে বলে আশা করছেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। আজ শনিবার সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির ২১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে এ কথাগুলো বলেন তিনি।

লন্ডনে দুই নেতার বৈঠকের বিস্তারিত সব রাজনৈতিক দল ও জনগণের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করারও আহ্বান জানিয়েছেন সাইফুল হক।

সরকারের এই উদ্যোগ বিলম্বিত বোধদয়ের ফল বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। সাইফুল হক বলেন, আরও আগে সরকারের এই বোধদয় হলে অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত বিতর্ক ও রাজনৈতিক বিরোধ এড়িয়ে নির্বাচনের প্রস্তুতিসহ মৌলিক কাজে আরও বেশি মনোযোগ দেওয়া যেত।

সব অংশীজনকে আস্থায় নিয়ে সরকারকে কাজ করার আহ্বান জানান সাইফুল হক। তিনি বলেন, এই বৈঠকের মধ্য দিয়ে বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনের মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকারের সম্মানজনক প্রস্থানের রাস্তা সুগম হলো।

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সাইফুল হক বলেন, দেশের মানুষের অধিকার ও মুক্তি অর্জনে তাঁর দল জনগণের ভালোবাসা নিয়ে আগামীতে আপসহীন ধারায় সংগ্রাম অব্যাহত রাখবে।

সংক্ষিপ্ত সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য বহ্নিশিখা জামালী, আকবর খান, আবু হাসান টিপু, আনছার আলী দুলাল ও মীর মোফাজ্জল হোসেন মোশতাক। সমাবেশে সংহতি জানান গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র পরিষদের আহবায়ক শেখ আবদুর নূর।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সাইফুল ইসলাম মীর, রেজাউল আলম, ফিরোজ আলী, কেন্দ্রীয় সংগঠক আইয়ুব আলী, বাবর চৌধুরী, ঢাকা মহানগর কমিটির নেতা মো. সালাউদ্দীন, মিজারুল রহমান ডালিম, আরিফুল ইসলামসহ পার্টির ঢাকা মহানগরের নেতারা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইরানের শাসকদের ক্ষমতাচ্যুত করার আহ্বান সাবেক শাহের পুত্রের
  • আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিলেন ইশরাক হোসেন
  • আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিলেন ইশরাক হোসেন
  • আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা ইশরাকের
  • রাষ্ট্র ও রাজনীতিতে জনগণের হিস্যা কোথায়
  • লন্ডন বৈঠকে অবিশ্বাস দূর, সরকারের সম্মানজনক প্রস্থানের পথ সুগম হবে: সাইফুল হক
  • বাজেটের ত্রুটি সংশোধনের আহ্বান
  • ড. ইউনূসকে দেশের কাজে যুক্ত রাখতে চায় বিএনপি
  • জনগণের উদ্দেশে ভাষণ দেবেন ইরানের প্রেসিডেন্ট
  • সহসাই রাজনীতির কালো মেঘ কেটে যাবে: ডা. জাহিদ