মালায়ালাম সিনেমার বরেণ্য অভিনেতা মাম্মতি। ১৯৭১ সালে রুপালি পর্দায় তার অভিষেক ঘটে। দীর্ঘ অভিনয় ক্যারিয়ারে প্রায় সাড়ে চারশত সিনেমায় অভিনয় করেছেন। কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন।
৭৩ বছর বয়েসি মাম্মতি এখনো অভিনয়ে সরব। সংখ্যায় বয়স বাড়লেও কাজে এখনো চিরসবুজ। মজার ব্যাপার হলো— পাঁচ বছরে ১৫৭টি সিনেমায় অভিনয় করে আলোচনার জন্ম দেন ‘অহিমসা’ তারকা।
সিয়াসাত ডটকমের তথ্য অনুসারে, ১৯৮২ সালে মাম্মতি মালায়ালাম ভাষার ২৪টি সিনেমায় অভিনয় করেন। ১৯৮৩ সালে ৩৬টি সিনেমায় অভিনয় করেন। এরপর ১৯৮৪, ১৯৮৫, ১৯৮৬ সালে যথাক্রমে ৩৪, ২৮ ও ৩৫টি সিনেমায় অভিনয় করেন। কঠোর শ্রম ও আত্মত্যাগ ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে সবচেয়ে বেশি পরিশ্রমী তারকাদের অন্যতম হিসেবে পরিচিতি এনে দেয় তাকে।
১৯৮৩ সালের ২৩ এপ্রিল মুক্তি পায় মালায়ালাম ভাষার ‘আ রাত্রি’ সিনেমা। যাশী নির্মিত এ সিনেমায় তার বিপরীতে অভিনয় করেন পূর্ণিমা ভাগ্যরাজ। এটি মালায়ালাম ভাষার প্রথম সিনেমা, যা ১ কোটি রুপি আয় করে। একই বছর মুক্তিপ্রাপ্ত ‘কুডেভি’ সিনেমাও বক্স অফিসে দারুণ সাড়া ফেলেছিল।
মালায়ালাম ছাড়াও তামিল, তেলেগু, কন্নড় ও হিন্দি ভাষার সিনেমায়ও অভিনয় করেছেন মাম্মতি। ১৯৯০ সালে ‘মৌনম সাম্মাধাম’ সিনেমার মাধ্যমে তামিল ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে অভিষেক ঘটে মাম্মতির। তবে রজনীকান্তের সঙ্গে অভিনয় করে তামিল নাড়ুতে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন এই অভিনেতা।
মাম্মতি যশ-খ্যাতি যেমন কুড়িয়েছেন, তেমনি অর্থবিত্ত কম নেই তার। সংখ্যায় বয়স এখন ৭৩। জীবনের এ পর্যায়ে কি অভিনয় থেকে অবসর নিতে চান? সম্প্রতি দুবাইয়ের ইউটিউবার খালিদ আল আমেরি এই প্রশ্ন ছুড়ে দেন মাম্মতিকে। জবাবে মাম্মতি বলেন, “না, কখনো না। আমি ক্লান্ত বোধ করছি না। আমি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কাজ করে যেতে চাই।”
মাম্মতি অভিনীত সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা ‘টার্বো’। এতে আরো অভিনয় করেন রাজ বি শেঠি, সুনীল, অঞ্জনা জয়প্রকাশ, কবীর দুহান সিং প্রমুখ। গত বছরের ২৩ মে মুক্তি পায় এটি। বর্তমানে মাম্মতির হাতে চারটি সিনেমার কাজ রয়েছে।
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
শুধু ঘোষণা নয়, বাস্তবে প্রতিফলিত হোক
রাজধানী শহরসহ দেশের বড় শহরগুলোয় শব্দদূষণের অসহনীয় মাত্রার বিষয়টি কারও অজানা নয়। এটি এখন শুধু শব্দদূষণ নয়, শব্দসন্ত্রাস বলেও অভিহিত হচ্ছে। অতীতে ও বর্তমানে সরকারগুলো বিভিন্ন পদক্ষেপ নিলেও কার্যকর হচ্ছে না। অতীতের ধারাবাহিকতায় রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশান, বনানী, বারিধারা ও নিকেতনকে ‘নীরব এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। সিদ্ধান্তটি নিঃসন্দেহে প্রশংসার যোগ্য। এখন এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করাই হচ্ছে বড় চ্যালেঞ্জ।
শহরের শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে নীরব এলাকা ঘোষণা একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এটি অবশ্যই সরকারের সদিচ্ছার প্রকাশ। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এই ঘোষণা বাস্তবে কার্যকর হবে, নাকি এটিও অতীতের মতো কেবল কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ থাকবে? এর আগে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং এর আশপাশের এলাকাকে নীরব এলাকা ঘোষণা করা হয়েছিল, কিন্তু তার ফল তেমন একটা ভালো পাওয়া
যায়নি। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ঘোষণার পর কিছু এলাকায় শব্দ কিছুটা কমলেও সার্বিকভাবে পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি। এই অভিজ্ঞতা থেকে বোঝা যায়, শুধু ঘোষণা যথেষ্ট নয়, বরং এর কঠোর বাস্তবায়ন অপরিহার্য।
শব্দদূষণের ক্ষেত্রে আগের তুলনায় সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে বলতেই হয়। যার কারণে সাউন্ডবক্স বা মাইক বাজানোর বিষয়গুলো তুলনামূলকভাবে কমে এসেছে। তবে গাড়ির হর্ন এতটা বিভীষিকাময় পরিস্থিতি তৈরি করছে, যা অকল্পনীয়। এটিই এখন রাজধানীসহ বড় শহরগুলোর শব্দদূষণের সবচেয়ে বড় আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, অতিরিক্ত শব্দ হৃদ্রোগ, উচ্চ রক্তচাপ এবং মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। চিকিৎসকেরা বলছেন, এটিতে শ্রবণশক্তি হ্রাস পায়, মেজাজ খিটখিটে হয়, মানুষ অনিদ্রায় ভোগে এবং শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় বিঘ্ন ঘটায়। তাই শুধু অভিজাত এলাকা নয়, পুরো শহরে ধাপে ধাপে কীভাবে নীরব এলাকা ঘোষণা করা যায়, সেই লক্ষ্যে পরিকল্পিতভাবে এগোতে হবে।
তবে এ উদ্যোগ সফল করতে হলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে কঠোর হতে হবে। হর্ন বাজানোর বিরুদ্ধে আইন আছে। তা যদি আইনভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে কঠোরভাবে প্রয়োগ না করা হয়, এ ঘোষণা কখনোই সফল হবে না। কেবল প্রশাসনের ওপর নির্ভর না করে নীরব এলাকা–ঘোষিত এলাকাগুলোর বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, যেমন মসজিদ, মন্দির এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকেও এখানে গণসচেতনতার কাজে যুক্ত করতে হবে।
গাড়ির হর্ন বাজানো সীমিত করতে পরিবহনের বিভিন্ন ধরনের সমিতি–সংগঠনগুলোর যুক্ততাও এখানে গুরুত্বপূর্ণ। গাড়ির চালকদের অভ্যাসগত পরিবর্তনের জন্য শব্দদূষণের ক্ষতিকর দিকটি নিয়মিতভাবে তাঁদের কাছে উপস্থাপন করতে হবে। হাইড্রোলিক হর্নসহ উচ্চমাত্রার যেকোনো হর্ন উৎপাদন, আমদানি ও ব্যবহারের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রয়োগ করতে হবে। এ ব্যাপারে ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই।