পরাজয় এড়াতে কয়েকটি সংগঠন ছাত্র সংসদ নির্বাচন ভণ্ডুলে ওঠেপড়ে লেগেছে বলে অভিযোগ করেছে ইসলামী ছাত্রশিবির।

সব বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবি জানিয়ে সংগঠনটি অভিযোগ করে, যখনই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সংসদ নির্বাচনের জন্য মতবিনিময় সভার আয়োজন করে, তখনই তারা ফ্যাসিবাদী কায়দায় ছাত্রদের বিভিন্ন অংশকে ডিহিউম্যানাইজ করে এবং বিভিন্নভাবে ট্যাগিং করে সভাগুলোকে ভণ্ডুল করার চেষ্টা করে থাকে।

সোমবার রাতে এক বিবৃতিতে এ অভিযোগ করেছেন শিবিরের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দাম। 

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যারা বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠা এবং গুম, খুন, জুলুম-নির্যাতনের গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করে স্বৈরাচারের দোসর হিসেবে কাজ করেছে, তারাই এখন ডাকসু ও অন্যান্য ছাত্র সংসদ নির্বাচন ভণ্ডুল করার এবং ফ্যাসিস্টদের পুনর্বাসন করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।
 
শিবির নেতারা বলেছেন, স্বৈরাচারের প্রধান হাতিয়ার ছিল বিভিন্নভাবে দেশের মানুষ, রাজনৈতিক দল ও ছাত্র সংগঠনগুলোকে বিভক্ত করে রাখা। ছাত্র-জনতা সব বিভেদের দেয়াল ভেঙে ফেলতে পেরেছিল। কিন্তু স্বৈরাচার পুনর্বাসনের প্রক্রিয়া হিসেবে আবার বিভেদের রাজনীতি চর্চা শুরু করেছে কিছু সংগঠন। তারা হুবহু ফ্যাসিস্টের ভাষায় বক্তৃতা-বিবৃতি দিয়ে চলেছে। 

এতে আরও বলা হয়, ইসলামী ভাবধারায় উজ্জীবিত ছাত্র-জনতাকে আগের মতো ডিহিউম্যানাইজ করে ফ্যাসিস্ট শক্তির পক্ষে কাজ করছে। চল্লিশ বছর আগের তথাকথিত ‘পরিবেশ পরিষদ’, যার কোনো আইনত বা নৈতিক ভিত্তি নেই, তার একটি ফ্যাসিস্ট সিদ্ধান্তকে উদ্ধৃত করে ছাত্রশিবিরকে শিক্ষাঙ্গন থেকে দূরে রাখা ফ্যাসিবাদের পুনর্বাসনের একটি পদক্ষেপ।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার

অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় ওই চারজনের কারণ দর্শানো নোটিশের জবাবের শুনানি শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বহিষ্কৃত সদস্যরা হলেন আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবির হোসেন, রফিকুল ইসলাম রফিক ও তরফদার আবদুল মুকিত। তাঁদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আদালতের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।

এ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম এ গফুর বলেন, ‘অভিযোগ প্রমাণিত হওয়াতে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ সমিতির নিয়মনীতির ঊর্ধ্বে নন। বৃহস্পতিবার ওই চার সদস্যকে বহিষ্কারের বিষয়টি নোটিশ দিয়ে জানানো হবে।’

সমিতি সূত্রে জানা গেছে, যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সৈয়দ কবির হোসেনের (জনি) কাছে ৩৫ লাখ টাকায় শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকায় জমি বিক্রি করেন ইমরান হাসান। জমি রেজিস্ট্রির আগে সব টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও সৈয়দ কবির হোসেন ১০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। বাকি ২৫ লাখ টাকা না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন। পরে তিনি আরও ১৭ লাখ টাকা দেন। বাকি ৮ লাখ টাকা চাইলে হুমকি দিতে থাকেন কবির হোসেন। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ইমরান হাসান আইনজীবী সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।

সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে কবির হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কবির হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।

এ বিষয়ে আইনজীবী কবির হোসেন বলেন, ‘বহিষ্কারের বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে যে বিষয়ে আমাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, সেই বিষয়ে অভিযুক্ত আমি নই। তারপরও আইনজীবী সমিতি আমার অভিভাবক; তারা যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তার বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।’

অন্যদিকে অভয়নগরের নওয়াপাড়ার জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশন পাওনা টাকা আদায়ে আবদুর রাজ্জাককে মামলার আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছিল। ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত আবদুর রাজ্জাক আটটি চেকের মামলা পরিচালনা করেন। এসব মামলার রায় ও আপিল বাদীর অনুকূলে যাওয়ার পর আটটি চেকের ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নেন আবদুর রাজ্জাক। এ টাকা জয়েন্ট ট্রেডিং কর্তৃপক্ষকে না দিয়ে তিনি ঘোরাতে থাকেন। চলতি বছরের ৪ জুন তিনি ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। চেকটি ব্যাংকে জমা দিলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় নগদায়ন করা যায়নি। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল ওহাব গত ২৮ জুলাই আবদুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে যশোর আইনজীবী সমিতি‌ বরাবর অভিযোগ করেন।

এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আবদুর রাজ্জাককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় যশোর আইনজীবী সমিতি। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় আবদুর রাজ্জাককে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া রফিকুল ইসলাম রফিক তাঁর সহকর্মীর সঙ্গে অসদাচরণ ও মামলা করতে টাকা ও কাগজপত্র নিয়ে মামলা না করায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আইনজীবী তরফদার আবদুল মুকিতের বিরুদ্ধেও নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ