রেললাইনে পড়ে ছিল আওয়ামী লীগ নেতার মরদেহ, রশিতে বাঁধা ছিল দু’হাত
Published: 18th, February 2025 GMT
পার্বতীপুর-ফুলবাড়ী রেলপথের হলদীবাড়ী এলাকা থেকে ট্রেনে কাটা অবস্থায় ভরত চন্দ্র রায় (৪৮) নামে এক আওয়ামী লীগ নেতার মরদেহ উদ্ধার করেছে রেলওয়ে থানা পুলিশ।
মঙ্গলবার দুপুরে তার মরদেহ উদ্ধার করে রেলওয়ে থানা পুলিশ। এসময় তার দুই হাত প্লাস্টিকের রশি দিয়ে বাঁধা অবস্থায় ছিল।
নিহত ভরত চন্দ্র রায় চন্ডিপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। তার বাড়ি চন্ডিপুর ইউনিয়নের কালিকাবাড়ী কুমার পাড়া গ্রামে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের ধারণা, তাকে হত্যা করে অথবা হাত বেঁধে রেললাইনে ফেলে রাখা হয়েছিল। পরে ঢাকা থেকে পার্বতীপুরগামী কোনো এক ট্রেনে দেহ থেকে তার মাথা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
এ ঘটনায় দিনাজপুর সিআইডির এএসপি ফারুক আহম্মেদ, এএসপি সার্কেল জিন্নাহ আল মামুন, ডিবির ওসি সোহেল রানা, রেলওয়ে থানার ওসি ফকরুল ইসলাম ও মডেল থানার ওসি আব্দুস সালাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
নিহতের ছোট ছেলে রিপন চন্দ্র জানান, তার বাবা ভরত চন্দ্র রায় রেলওয়েতে খালাসি পদে চুক্তিভিত্তিক চাকরি করতেন। তিনি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। সোমবার সকালে অফিসের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হন। প্রতিদিন সন্ধ্যার মধ্যে বাড়ি ফিরলেও সেদিন রাত ৭টার দিক থেকে তার ফোন আমরা বন্ধ পাই। সারারাত বাড়িতে না ফেরায় সকালে খুঁজতে এসে জানতে পারি বাবাকে কে বা কারা রশি দিয়ে হাত বেঁধে হত্যা করে রেললাইনে ফেলে রেখে গেছে।
তিনি আরো জানান, তার বাবার দেড় লাখ টাকা বকেয়া বেতন পাওয়ার কথা ছিল সোমবার। ওই টাকা দিয়ে আজ মঙ্গলবার চাচাতো বোনের বিয়ের জন্য মোটরসাইকেল কিনতে যাওয়ার কথা ছিল।
ভরত চন্দ্রের স্ত্রী ভারতী বানী জানান, আমার স্বামীর কোনো শত্রু আছে বলে আমার জানা নেই। কী কারণে তাকে এভাবে হত্যা করা হয়েছে তা বুঝতে পারছি না। আমার প্রয়াত দেবরের মেয়ে সোনামনির বিয়ে আগামী বৃহস্পতিবার। আজ মঙ্গলবার মোটরসাইকেল কিনতে যাওয়ার কথা। এখন সব চুরমার হয়ে গেল।
রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফকরুল ইসলাম বলেন, রেললাইনে ট্রেনে কাটা পড়া অবস্থায় ভরত চন্দ্রের মরদেহ উদ্ধার কারা হয়েছে। তার দু’হাত প্লাস্টিকের রশি দিয়ে বাঁধা ছিল। মরদেহ উদ্ধার করে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। মামলার প্রস্ততি চলছে। ঘটনার প্রকৃত কারণ উদঘাটনের জন্য পুলিশ কাজ করছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আওয় ম ল গ ন ত র মরদ হ আওয় ম র লওয়
এছাড়াও পড়ুন:
বগুড়ায় বাড়িতে হাতবোমা তৈরির সময় বিস্ফোরণ, আহত একজন গ্রেপ্তার
বগুড়ার গাবতলী উপজেলার একটি বাড়িতে হাতবোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল রোববার দুপুরে উপজেলার মশিপুর ইউনিয়নের ছোট ইতালি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
বিস্ফোরণে আতাউর রহমান (৩৫) নামের একজন গুরুতর আহত হন। তাঁকে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আতাউর কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার রামপ্রসাদের চর গ্রামের বাসিন্দা। পরে তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।।
গতকালের ওই ঘটনার পরপরই ছোট ইতালি গ্রামের বিস্ফোরণস্থল ঘিরে ফেলেন সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যাব ও ডিবি সদস্যরা। উদ্ধার করা হয় বেশ কয়েকটি তাজা হাতবোমা। বোম ডিসপোজাল ইউনিটের সদস্যরা এসে উদ্ধার হওয়া হাতবোমাগুলো নিষ্ক্রিয় করেন। পরে বাড়িটি সিলগালা করা হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, কয়েক দিন আগে আতাউর রহমানসহ কুমিল্লা থেকে আসা চার ব্যক্তি ছোট ইতালি গ্রামের মাদক ব্যবসায়ী মুক্তার হোসেনের বাড়িতে ওঠেন। মুক্তারের স্ত্রী নাছিমা আক্তার (৪৫) মাদকের মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে বর্তমানে কারাগারে আছেন। গতকাল দুপুর ১২টার দিকে মুক্তারের বাড়ির ভেতরে একটি শক্তিশালী বিস্ফোরণ ঘটে। এতে আশপাশের লোকজন আতঙ্কিত হন। পরে বাড়ির ভেতর প্রবেশ করে রক্তাক্ত অবস্থায় আতাউর রহমানকে উদ্ধার করা হয়। পুলিশকে খবর দেওয়ার পর মুক্তার হোসেনের তিন সহযোগী দ্রুত পালিয়ে যান। স্থানীয় লোকজন আহত আতাউরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।
গাবতলী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেরাজুল হক বলেন, ঘটনাস্থল থেকে অবিস্ফোরিত হাতবোমা ও কিছু বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়েছে। বাগবাড়ি তদন্তকেন্দ্রের উপপরিদর্শক আবদুল্লাহ আল সাদিক বাদী হয়ে বিস্ফোরক ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করেছেন। মামলায় একজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। এ ঘটনার সঙ্গে আগামী নির্বাচনে নাশকতার পরিকল্পনার যোগসূত্র আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।