‘তিন গোয়েন্দা’ থেকে ‘শার্লক হোমস’, রবীন্দ্রনাথ থেকে শরৎচন্দ্র কিংবা হুমায়ূন আহমেদ—একসময় শিশু-কিশোরেরা বুঁদ হয়ে থাকত বইয়ের পাতায়। আরেকটু ছোট বয়সে হাতে থাকত রূপকথা ও ঠাকুরমার ঝুলির গল্প। বিনোদনের অন্যতম মাধ্যমই ছিল বই। স্কুলের বইয়ের ভেতরে লুকিয়ে গল্পের বই পড়া কী যে রোমাঞ্চকর, যে এটা করেছে, শুধু সে–ই জানে। সময় পাল্টেছে। মুঠোফোন, ট্যাবের স্ক্রিনে চোখ খুঁজে ফেরে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামের রিলস। শিশুরা আগ্রহী কার্টুন আর গেমসে। তবে শহুরে ব্যস্ত জীবনে একখণ্ড অবকাশ হতে পারে রাজধানীর বুক ক্যাফেগুলো। না কিনেও বই পড়ার ব্যবস্থা থাকায় আগ্রহী হচ্ছেন সব বয়সী বইপড়ুয়ারাই। বিশেষ করে শিশুর বিনোদনের অন্যতম চলতি ধারা হয়ে উঠছে এসব আধুনিক বুক ক্যাফের শিশু কর্নারগুলো। অফিসের পরে বা ছুটির দিনে, সন্তানকে নিয়ে অনেকেই আসছেন এসব জায়গায়। বইয়ের প্রতি ভালোবাসার সঙ্গে সমৃদ্ধ হচ্ছে শিশুর মেধা ও মনন। রাজধানীর এ রকম কিছু বুক ক্যাফে নিয়ে নকশার এবারের আয়োজন।

প্রথমা বুক ক্যাফে

শিশুদের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে প্রথমা বুক ক্যাফের শিশু-কিশোর কর্নার। ঢাকার ইউনাইটেড সিটির শেফস টেবিল খাবারদাবার ও গেমসের জন্যই বেশি পরিচিত। প্রথমার সমৃদ্ধ বইয়ের সংগ্রহ দেখে পাঠকেরা আনন্দিত হন। বুক ক্যাফের শিশু কর্নারে বিকেল হলেই ভিড় বাড়ে। অভিভাবকেরা সানন্দে শিশুদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন বইয়ের। পছন্দের বই পেয়ে শিশুরাও খুব খুশি।

পড়ার ফাঁকে কিছু খেতে চাইলে প্রথমা বুক ক্যাফের চত্বরেই সেরে নেওয়া যাবে হালকা নাশতা। ‘উৎসব ক্যাফে’র খাবারের আয়োজনে চা, কফির সঙ্গে স্বাদ নেওয়া যায় মুখরোচক ফুচকার। পাওয়া যায় শিঙাড়া, পুরি, জিলাপিও।

শহুরে ব্যস্ত জীবনে একখণ্ড অবকাশ হতে পারে রাজধানীর বুক ক্যাফেগুলো.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: বইয় র প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

তিনি হিমালয়ে উঠেছেন সাইকেল নিয়ে

বরফের ওপর সাইকেল নিয়ে সন্তর্পণে এগোচ্ছেন। একটু হড়কে গেলেই অবধারিত মৃত্যু, গিরিখাত বেয়ে একেবারে নিচে। কখনো সাইকেল চালিয়ে, কখনো কাঁধে নিয়ে হাঁটতে হচ্ছিল। এভারেস্ট অঞ্চলের কংমা লা পাস অতিক্রম করার সময় একটু ভয় ভয় লাগছিল। কারণ, এখানটায় এসে মৃত্যুর অনেক ঘটনা আছে। ট্রেইলটা বেশ কঠিন। ১০ কেজি ওজনের সাইকেল কাঁধে, আর ছয়–সাত কেজির ব্যাগ নিয়ে ওপরে উঠতে হচ্ছিল।

‘ভয়ের সঙ্গে আবার সুন্দর মুহূর্তও আছে। পাসগুলো থেকে নামার সময় ভালো লাগত। অপূর্ব সুন্দর সব দৃশ্য,’ বলছিলেন আরিফুর রহমান উজ্জল (৪১)। কুমিল্লার মানুষ, উজ্জল নামেই পরিচিত। গত ৭ সেপ্টেম্বর থেকে সাইকেল নিয়ে চষে বেড়িয়েছেন এভারেস্ট অঞ্চলসহ হিমালয়ের নানা ট্রেক। এসব ট্রেকে সাধারণত পর্বতারোহীরা পায়ে হেঁটে যান। উজ্জল গেছেন দ্বিচক্রযানে চেপে। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় সর্বশেষ কথা হয় তাঁর সঙ্গে। তিনি প্রায় দুই মাসের অভিযান শেষ করে কাঠমান্ডুতে এসেছেন।

চ্যালেঞ্জিং এই অভিযানে ছিল কাদামাখা পাথুরে পথ, অতি উচ্চতা, অক্সিজেন স্বল্পতা, ভূমিধস, বরফে ঢাকা পথ, গ্লেসিয়ার ও একদম খাড়া টানা একেকবার ৩–৪ কিলোমিটার রাস্তা। অক্সিজেন স্বল্পতার কারণে রাতে না ঘুমিয়ে পরদিন ট্রেক করতে হয়েছে। বরফ ও রৌদের তাপ, জ্বর, হাতে ফ্রস্টবাইট, পায়ে মাসাল ক্র্যাম্প, বৃষ্টি মাথায় নিয়ে, বাতাসের সঙ্গে যুদ্ধ করে তাঁকে একেকটা পাস অতিক্রম করতে হয়েছে। অনেক পর্বতারোহীর কাছে এটি স্রেফ পাগলামি। এই অভিযানে উজ্জলকে কখনো সাইকেল চালাতে হয়েছে, কখনো কাঁধে বইতে হয়েছে, কখনোবা ঠেলে উপরে তুলতে হয়েছে।

মানাসলু সার্কিট ট্রেইল

পর্বতারোহণ এমনিতেই কষ্টসাধ্য কাজ। নিজের শরীরটা ওপরে টেনে তোলাই যেখানে বিরাট চ্যালেঞ্জ, সেখানে উজ্জল সাইকেল নিয়ে এক অভিযানেই ঘুরেছেন এভারেস্টসহ হিমালয়ের তিনটি ট্রেইলে। তিনি ঘুরেছেন নেপালের মানাসলু ও অন্নপূর্ণা সার্কিট ট্রেইল। নেপালের পশ্চিমের এই দুটি ট্রেইলে ঘোরা শেষ করে পাড়ি দিয়েছেন ৭০০ কিলোমিটার পূর্বে এভারেস্টের তিন পাসে। পাস তিনটি হচ্ছে কংমা লা পাস, চো লা পাস এবং রেঞ্জো লা পাস।

৭ সেপ্টেম্বর থেকে অভিযান শুরু করেন এই সাইক্লিস্ট। তার আগে ঢাকা থেকে বিমানে করে গেছেন কাঠমান্ডু। শুরুতেই মানাসলু সার্কিট ট্রেইল। এটা গিরিপথ, রাস্তা। মানাসলু পর্বতকে ঘিরে যে রাস্তা সেটাকে সার্কিট বলে। এই মানাসলুর সর্বোচ্চ বিন্দু, যার উচ্চতা ১৭ হাজার ৩৯০ ফুট। সেখানে নিজের প্রিয় দ্বিচক্রযানটির চাকার ছাপ রেখে এসেছেন। ১৭৪ কিলোমিটার দীর্ঘ সার্কিট ট্রেইলটি শেষ করতে তাঁর ১১ দিন লেগেছে।

রেঞ্জো লা পাস

সম্পর্কিত নিবন্ধ