ঢাকা–রাজশাহী রুটে চলন্ত বাসে ডাকাতি ও নারী যাত্রীদের যৌন নিপীড়নের ঘটনায় হওয়া মামলায় বাসের চালক ও সুপারভাইজারকে আসামি না করায় প্রশ্ন তুলেছেন যাত্রীরা। টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানায় শুক্রবার ভোরে হওয়া মামলার বাদীকে পুলিশ এজাহারের বর্ণনা পড়ে শোনাননি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১০ ধারা (যৌন নিপীড়ন) এবং দণ্ডবিধির ৩৯৫ ও ৩৯৭ ধারায় (ডাকাতি) মামলাটি করা হয়। এতে অজ্ঞাতনামা আট–নয়জনকে আসামি করা হয়েছে। বাসের ভুক্তভোগী যাত্রী ও নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার বাসিন্দা ওমর আলী এই মামলায় বাদী হয়েছেন।

ওমর আলী আজ সকালে প্রথম আলোকে বলেন, আজ ভোর চারটার দিকে পুলিশের গাড়িতে করে তিনি, আরেক যাত্রী সোহাগ হোসেন ও তাঁদের ব্যবসায়িক অংশীদার আবু হানিফকে মির্জাপুর থানায় নিয়ে আসা হয়। তারপর মামলার এজাহারে তাঁর স্বাক্ষর নেওয়া হয়। তবে এজাহার তাঁকে পড়ে শোনানো হয়নি। তিনি জবানবন্দিতে ডাকাতির ঘটনা ও দুই নারীর শ্লীলতাহানির বর্ণনা দিয়েছেন; কিন্তু এজাহারে কী লেখা হয়েছে তিনি জানেন না।

ওমর আলীর কাছ থেকে যখন পুলিশ এজাহারে স্বাক্ষর নিচ্ছিল, তখন ওই বাসের চালক বাবলু আলী (৩০), তাঁর সহকারী মাহবুব আলম (২৮) ও বাসের সুপারভাইজার সুমন ইসলাম (৩৩) থানায় বসে ছিলেন। তাঁরাও মামলা করতে চেয়েছিলেন। যদিও পুলিশ তাঁদের মামলা নেয়নি।

বাদী ওমর আলী তাঁদের থানায় দেখে অবাক হয়েছিলেন উল্লেখ করে বলেন, ‘ওরা (চালক ও তাঁর সহকারী) ঘটনার সঙ্গে জড়িত। ওরা আসামি হবে। আবার ওরাই মামলা করার জন্য এসে বসে আছে। এটা কী হচ্ছে বুঝতে পারছি না।’

এ বিষয়ে মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশারফ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনার তদন্তে বাসের চালক, সহকারী ও সুপারভাইজারের জড়িত থাকার প্রমাণ পেলে তাঁদেরও আসামি করা হবে। চালক-সুপারভাইজারদের মামলার বিষয়ে বলেন, ‘তাঁদের নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। এ কারণে যাঁরা ভুক্তভোগী, তাঁদের বিষয়টি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।’

এজাহারে যা বলা হয়েছে

মামলার এজাহারে ঘটনার বর্ণনায় সময় ও ঘটনার স্থান যেভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, সেটা যাত্রীরা আগে ঠিকমতো বলতে পারেননি। এজাহারে বলা হয়, বাসে ৩০ থেকে ৩৫ জন যাত্রী ছিলেন। রাত প্রায় একটার দিকে বাসটি গাজীপুরের কালিয়াকৈর থানার চন্দ্রা বাইপাসে চা–পানের বিরতির জন্য থামে। এ সময় চন্দ্রা বাইপাস থেকে তিন–চারজন নতুন যাত্রী ওঠেন বাসে। রাত দেড়টার দিকে কালিয়াকৈরের হাইটেক সিটি পার্ক-সংলগ্ন খাড়াজোড়া উড়ালসেতু অতিক্রমের পাঁচ–ছয় মিনিট পরেই হঠাৎ যাত্রীবেশে আট থেকে নয়জন ডাকাত দাঁড়িয়ে যায়। তাঁরা ধারালো চাকু ও চাপাতি দিয়ে প্রাণে মারার ভয় দেখিয়ে সবাইকে চুপ থাকতে বলেন। তাঁদের মধ্যে তিনজন ডাকাত পেছন থেকে সামনে এসে বাসচালকের গলায় চাকু ধরে ‘অনেক চালাইছস আর চালানো লাগবে না’ বলে টেনেহিঁচড়ে গাড়ির পেছনে উল্টো করে ফেলে রাখেন। একজন ডাকাত গাড়িটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেন।

এজাহারের বর্ণনা অনুযায়ী, রাত পৌনে দুইটার দিকে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানার সোহাগপাড়ার পদচারী–সেতুর প্রায় ১০০ গজ পশ্চিমে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের ওপর পৌঁছালে ডাকাত দলের ছয়–সাতজন বাদীসহ যাত্রীদের ধারালো অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে টাকা, মুঠোফোন ও স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নেন। দুই-তিনজন নারীর শ্লীলতাহানি করেন। বাসটি টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার থানার নাটিয়াপাড়া নাসির গ্লাসের সামনে থেকে ঢাকার দিকে ইউটার্ন নেয়। প্রায় দুই-আড়াই ঘণ্টা কালিয়াকৈর, কোনাবাড়ীসহ গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় ঘোরানোর পর ভোর প্রায় চারটার দিকে ঢাকার আশুলিয়া থানার বারইপাড়া এলাকার নন্দন পার্কের সামনে গাড়িটি টাঙ্গাইলমুখী করে থামিয়ে চালককে ‘১০ কিলোমিটারের মধ্যে কোথাও থামালে জানে মেরে ফেলব’ বলে তাঁরা দ্রুত বাস থেকে নেমে যান।

আরও পড়ুনচলন্ত বাসে ডাকাতি ও শ্লীলতাহানির ঘটনায় তিন দিন পর মামলা৬ ঘণ্টা আগে

এজাহারে ডাকাতিতে জড়িত ব্যক্তিদের বর্ণনা দিয়ে উল্লেখ করা হয়, তাঁদের বয়স আনুমানিক ২৫ থেকে ৩৮ বছরের মধ্যে। প্রত্যেকের পরনে ছিল ফুলপ্যান্ট, জ্যাকেট, গেঞ্জি (ফুল ও হাফহাতা) ও শার্ট। একজন লম্বা, ফরসা এবং একজন মোটা, শ্যামলা ও অন্য ডাকাতদের শারীরিক গঠন মাঝারি ধরনের ছিল। তাঁরা ঢাকা ও আশপাশের জেলার আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলছিলেন। বাদী ডাকাতদের দেখলে চিনতে পারবেন বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়।

এজাহারে যাত্রীদের কাছ থেকে লুটের টাকার পরিমাণ ও দুজন নারীযাত্রীর শ্লীলতাহানির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এজাহারে ভুক্তভোগী বাসের যাত্রীরা টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানা হয়ে কীভাবে নাটোরের বড়াইগ্রাম থানায় আসেন তার বর্ণনা দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ করা হয়, গাড়িটি বড়াইগ্রাম থানা মোড়ে এলে যাত্রীদের মধ্য থেকে সন্দেহবশত বাসের চালক, সহকারী ও সুপারভাইজার জড়িত সন্দেহ করে পুলিশের হেফাজতে দেয়। বড়াইগ্রাম থানা-পুলিশ তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠায়।

এজাহার পড়ে শোনানো হয়নি বাদীকে

এজাহারে উল্লিখিত বিষয়টি নিয়ে প্রথম আলোর পক্ষ থেকে ওমর আলীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। মামলার এজাহার বাদী ওমর আলীকে পড়ে শোনানো হয়নি বলে তিনি জানান। ওমর আলী বলেন, পুলিশ এজাহারে স্বাক্ষর দিতে বলেছে। এ জন্য তিনি স্বাক্ষর দিয়েছেন।

এজাহারে বাসের সুপারভাইজারের কাছ থেকে ডাকাতেরা ৩০ হাজার টাকা ও দুটি মুঠোফোন ছিনিয়ে নেন বলে উল্লেখ করা হলেও বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বাদী। ওমর আলী বলেন, সুপারভাইজারের কাছ থেকে ডাকাতেরা  সব টাকাপয়সা নিয়ে নিলে তাঁরা যমুনা সেতুর টোল কীভাবে দিলেন? বাসে তেল ভরলেন কীভাবে? তাঁরা হোটেলে খেলেন কীভাবে?’

‘টাঙ্গাইলের পুলিশ চ্যালেঞ্জ হিসেবে মামলাটি নিয়েছে’

চলন্ত বাসে ডাকাতি ও শ্লীলতাহানির ঘটনায় আজ বেলা তিনটায় মির্জাপুর থানার ওসির কার্যালয়ে ব্রিফিং করেছেন টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মো.

মিজানুর রহমান। এর আগে র‌্যাব-১৪ টাঙ্গাইলের কোম্পানি কমান্ডার মেজর কাউসার বাধন ও পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান থানায় মামলার বাদী ওমর আলী ও তাঁর সঙ্গে থাকা বাসের যাত্রী মো. সোহাগ হোসেনের সঙ্গে কথা বলেন।

পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান বলেন, ঘটনাটি ঢাকা, গাজীপুর ও টাঙ্গাইল—তিন জেলায় সম্পৃক্ত। ভুক্তভোগীদের বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে টাঙ্গাইলের পুলিশ চ্যালেঞ্জ হিসেবে মামলাটি নিয়েছে। ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তার করা হবে। পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের একাধিক দল বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করে ইতিমধ্যে অনেক এগিয়ে গেছে।

আরও পড়ুনঢাকা-রাজশাহী রুটে চলন্ত বাসে ডাকাতির যে বর্ণনা দিলেন যাত্রীরা২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

ঘটনাটিকে আন্তজেলা ডাকাত চক্রের কাজ উল্লেখ করে পুলিশ সুপার বলেন, টাঙ্গাইলের পুলিশ ঘটনাটি জানার পর তদন্ত করে স্বপ্রণোদিত হয়ে দ্রুত মামলার প্রক্রিয়ায় যায়। ডাকাত চক্রকে ধরতে পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মহাসড়কে দীর্ঘ সময় ধরে ডাকাতির কারণ, যাত্রীদের ধারালো অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে রাখা। যাত্রীরা কেউ চিৎকার-চেঁচামেচি করতে না পারায় টহল পুলিশ বিষয়টি টের পায়নি। এ ঘটনায় জামিনে থাকা বাসচালক, তাঁর সহকারী ও সুপারভাইজার পুলিশের নজরদারিতে আছেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ঘটন র ব ষয়ট র ঘটন ঘটন য় সহক র

এছাড়াও পড়ুন:

৫০ শয্যার থানচি হাসপাতাল চলছে একজন চিকিৎসকে

বান্দরবানের থানচি উপজেলার প্রায় ৩০ হাজার মানুষের একমাত্র ভরসার জায়গা ৫০ শয্যার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসক, নার্স ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির সংকটে এই হাসপাতাল কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। বর্তমানে পুরো হাসপাতাল চালাচ্ছেন মাত্র একজন চিকিৎসক। গত পাঁচবছরে চিকিৎসাধীন ও রেফার্ড করা ২৪ জন রোগী মারা গেছেন।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, ১৯৯৫ সালে ৩১ শয্যার থানচি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স যাত্রা শুরু করে। পরে এটি ৫০ শয্যায় উন্নীত হয়। এই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১২ জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও কর্মরত আছেন মাত্র দুইজন। তাদের মধ্যে একজন ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন। এ কারণে রোগীদের সেবা দিতে পারছেন না। ১৮ জন নার্স পদে রয়েছেন মাত্র চারজন। চারজন মিডওয়াইফ থাকার কথা, নেই একজনও।

আরো পড়ুন:

ফরিদপুরে পাগলা ঘোড়ার কামড়ে আহত ২০

বক্তব্য দেওয়ার সময় অসুস্থ হয়ে পড়লেন কাদের সিদ্দিকী

প্রাথমিক থেকে শুরু করে জরুরি চিকিৎসার জন্য এই হাসপাতালে ছুটে যান পাহাড়ি ও বাঙালিরা। তাদের অভিযোগ, হাসপাতালটি ৫০ শয্যায় উন্নীত হলেও আধুনিক চিকিৎসা সুবিধা যোগ হয়নি। প্রয়োজনীয় সংখ্যক চিকিৎসক না থাকায় গর্ভবতী নারী, শিশু ও বৃদ্ধ রোগীরা সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়ছেন। 

দুর্গম এলাকার রোগীরা অনেক সময় নদীপথ কিংবা পাহাড়ি রাস্তা পাড়ি দিয়ে হাসপাতালে এলেও কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসা সেবা পান না। বরং তাদের বান্দরবান সদর হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। অনেক সময় বান্দরবানে যাওয়ার পথে রোগীরা মারা যান। এ কারণে জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসক, নার্স ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সরবরাহের দাবি জানিয়েছেন তারা।

হাসপাতালের পরিসংখ্যানবীদ পঙ্কজ বড়ুয়া জানান, ২০২০ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত এখানে ভর্তি হয়েছেন ৫ হাজার ১৯৮ জন রোগী। এর মধ্যে ৪৫৬ জনকে রেফার্ড করা হয় বান্দরবান সদর হাসপাতালে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন ১৭ জন রোগী। 

থানচি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্স চালক মংক্যসিং মারমা বলেন, “২০১৯ সালে চাকরিতে যোগদান করার পর থেকে অন্তত সাতজন রেফার্ড করা রোগী মাঝপথে আমার গাড়িতেই মারা গেছেন।”

 

শৈসাই মং মারমা তিন বছর আগে বিনা চিকিৎসায় তার মাকে মারা যেতে দেখেছেন। তিনি জানান, তার মা শৈমেপ্রু মারমা (৩৪) অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। ২০২২ সালের ১৪ নভেম্বর হঠাৎ তিনি অচেতন হয়ে পড়েন। রেমাক্রী বাজার থেকে নদীপথে থানচি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান মাকে। কিছুক্ষণের মধ্যেই তাকে জেলা সদর হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। ভাড়া গাড়িতে জেলা হাসপাতালে যাওয়ার সময় চিম্বুক বারো মাইল এলাকায় তার মা মারা যান।

লেংরু ম্রো নামে চার সন্তানের মা হারিয়েছেন স্বামীকে। তিনি জানান, তার স্বামী রেং য়ুং ম্রো (৪৫) কিডনি জটিলতা নিয়ে থানচি হাসপাতালে যান। সঙ্গে সঙ্গে সেখান থেকে তাকে বান্দরবান সদর হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। থানচি থেকে বান্দরবান যাওয়ার মাঝপথে মারা যান তার স্বামী।

স্থানীয় বাসিন্দা মংমে মারমা বলেন, ‍“হাসপাতালে চিকিৎসক, ওষুধ ও যন্ত্রপাতির সংকট দীর্ঘদিন ধরেই চলছে। বিশেষজ্ঞ ডাক্তার বদলি হলেও অনেকেই থানচিতে যোগ দেন না, ডিপুটেশনে থেকে যান সদর হাসপাতালে। ফলে এ অঞ্চলের পাহাড়ি ও বাঙালি প্রায় ৩০ হাজার মানুষ স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।”

রিয়েং ম্রো নামে অপর বাসিন্দা বলেন, “পাহাড়ে বসবাসকারীদের অধিকাংশ গরিব। জেলা সদর হাসপাতালে রোগী নিয়ে যাওয়া ব্যয়বহুল ও কষ্টকর। রেমাক্রি, বড় মোদক, তিন্দু থেকে থানচি সদরে রোগী আনতেই অনেক টাকা খরচ হয়ে যায়। এরপর আবার বান্দরবান সদর হাসপাতালে রেফার্ড করলে সাধারণ মানুষ কীভাবে চিকিৎসা করাবে?” 

থানচি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএফপিও) ডা. মো. ওয়াহিদুজ্জামান মুরাদ বলেন, “বর্তমানে হাসপাতালে আমিসহ দুইজন চিকিৎসক রয়েছেন। একজন ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসাধীন। তিন রোগীদের সেবা দিতে পারছেন না। ফলে পুরো হাসপাতাল পরিচালনার দায়িত্ব আমাকে একাই সামলাতে হচ্ছে।”

তিনি আরো বলেন, “জনবল ও সরঞ্জাম সংকটের কারণে গুরুতর রোগীদের রেফার্ড করা ছাড়া উপায় থাকে না। দীর্ঘ পথের কারণে অনেকেই জীবিত অবস্থায় সদর হাসপাতালে পৌঁছাতে পারেন না।”

বান্দরবান জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ শাহীন হোসাইন চৌধুরী বলেন, “শুধু বান্দরবান নয়, পুরো তিন পার্বত্য জেলাতেই চিকিৎসক সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। নতুন করে ৪৮তম বিসিএসের ডাক্তার পদায়ন না হওয়া পর্যন্ত এই সংকট পুরোপুরি সমাধান করা সম্ভব হচ্ছে না। তারপরও বিভাগীয় প্রধানকে বিষয়টি চিঠির মাধ্যমে জানানো হয়েছে। ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের আট-দশজন চিকিৎসককে বান্দরবানে বদলি করার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।”

ঢাকা/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গাজায় ২৬ হাজার শিশু তীব্র অপুষ্টির শিকার: জাতিসংঘ
  • গ্রাহকের কাছে পেয়ারা খেতে চায় জনতা ব্যাংকের কর্মকর্তা
  • গল্পটা এই ক্লাসরুম থেকেই শুরু: ইরফান সাজ্জাদ
  • রাশিয়ায় এক বাঙালি বিপ্লবীর খোঁজে
  • আপনার এত সাহস হয় কী করে, সাংবাদিককে নায়িকা
  • দুবাইয়ে বিকৃত যৌন ব্যবসা চক্রের প্রধানকে চিহ্নিত করল বিবিসির এক অনুসন্ধান
  • মহানবী (সা.)–এর ইন্তেকালের পরে শাসন নিয়ে যা ঘটেছে
  • কুবিতে নতুন ১৮ বিভাগ ও ৪ ইনস্টিটিউট চালুর সুপারিশ
  • সংগীতশিল্পী দীপ মারা গেছেন
  • ৫০ শয্যার থানচি হাসপাতাল চলছে একজন চিকিৎসকে