চটপটির দোকান দেখিয়ে ২৩৪ কোটি টাকা ঋণ, নাজমীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
Published: 25th, February 2025 GMT
চটপটির দোকান দেখিয়ে ২৩৪ কোটি টাকা ঋণ নেওয়া নওরোজ এন্টারপ্রাইজের মালিক নাজমী নওরোজের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিবের আদালত দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন।
দুদকের উপপরিচালক আফরোজা হক খান এ আবেদন করেন।
আরো পড়ুন:
চট্টগ্রাম বন সংরক্ষকের দপ্তরে দুদকের অভিযান
অবৈধ সম্পদ: রাসেল ও আলমের বিরুদ্ধে মামলা
অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের সাবেক চেয়ারম্যান সাইফুল আলম মাসুদ (এস আলম গ্রুপ) ও অন্যান্যদের বিরুদ্ধে চটপটির দোকানে ২৩৪ কোটি টাকা ঋণ দেওয়ার অভিযোগ অনুসন্ধান প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ৪ সদস্য বিশিষ্ট একটি অনুসন্ধান টিম গঠন করা হয়েছে।
দুদকের তদন্তে জানা যায়, অভিযোগ সংশ্লিষ্ট নাজমী নওরোজ বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন। তিনি বিদেশে পালিয়ে গেলে অনুসন্ধান কাজ ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তার বিদেশ যাওয়া বন্ধ করা প্রয়োজন।
এর আগে গত ১৫ জানুয়ারি দুদক জানায়, চট্টগ্রামে নওরোজ এন্টারপ্রাইজের একটি চটপটির দোকান ও দুটি রেস্তোরাঁর বিপরীতে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের ২৩৪ কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ প্রদানে অনিয়মের অভিযোগে নওরোজ এন্টারপ্রাইজের মালিক নাজমী নওরোজ ও ব্যাংক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
এই ঋণ জালিয়াতির সাথে এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যাংকটির মালিক সাইফুল আলম মাসুদ এর সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে গোয়েন্দা তথ্য পাওয়া যায়। এসব অভিযোগের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দোষীদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক।
ঢাকা/মামুন/এসবি
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
নড়াইলে সরকারি গাছ বিক্রির অভিযোগে চেয়ারম্যানসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা
নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নে সড়কের পাশে সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে শাহবাদ ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মশিউর রহমান বাদী হয়ে সদর থানায় মামলাটি করেন।
মামলায় ওই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমানসহ ১৩ জন আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকা ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন ও প্রশিকার গঠিত সংগঠন প্রভাতী যুব সংঘের সভাপতি নড়াইল সদর উপজেলার তুজরডাঙ্গা এলাকার মুজিবুর রহমান, সদস্য একই এলাকার জরিনা বেগম, রজব আলী, মো. আজিবর, মো. ইলিয়াছ, ইমান আলী, মো. ওমর, মো. হায়দার, আবু সাঈদ, মো. এনামুল ও মো. শরিফুল।
এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মামলার এজহারে বাদী অভিযোগ করেছেন, গত ২৯ এপ্রিল নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ বাজার থেকে হাজির বটতলা পর্যন্ত সরকারি রাস্তার জায়গা থেকে গাছ কাটা ও চুরি করে বিক্রির সংবাদ পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। উপস্থিত হয়ে দেখেন, কাটা গাছবোঝাই একটি ট্রাক এবং নছিমন জব্দ করেছেন নড়াইল সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার দেবাশীষ অধিকারী। তখন ঘটনাস্থলে শ্রমিকদের জিজ্ঞাসাবাদ ও খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, মামলার আসামিরা কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই খাসজমি থেকে গাছ কেটে বিক্রি করেছেন। এর আগেও একবার তাঁরা ওই জমি থেকে গাছ বিক্রি করেছিলেন। জব্দ করা গাছের লগ, ডালপালা এবং আগে কাটা গাছের অবশিষ্ট ভূমিসংলগ্ন গুঁড়ি পর্যবেক্ষণ করে বোঝা গেছে, ওই স্থান থেকে আনুমানিক পাঁচ লাখ টাকার অধিক গাছ চুরি করে কাটা ও বিক্রি হয়েছে।
প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকার ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন বলেন, ২০০৯ সালে প্রশিকা, ইউনিয়ন পরিষদ ও প্রভাতী যুব সংঘের যৌথ উদ্যোগে একটি চুক্তির মাধ্যমে সড়কের পাশে গাছগুলো রোপণ করেছিল। সে সময় সড়কটি খাস খতিয়ানভুক্ত ছিল না। বর্তমানে তা সরকারের আওতায় পড়ায় গাছ কাটার অনুমতি চেয়ে ইউএনওর কাছে আবেদন করা হয়েছিল, তবে প্রশাসন কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। কিছুদিন আগে ইউপি সদস্য ইব্রাহিম তাঁকে ফোনে জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালা বিক্রি করতে চান চেয়ারম্যান। বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালাগুলো পড়ে থেকে নষ্ট হবে ভেবে তিনি বিক্রিতে সম্মতি দেন। পরে গাছ কীভাবে বা কারা কেটেছে, তা তিনি জানেন না।
মামলা করার আগে অবৈধভাবে গাছ কাটার অভিযোগের ব্যাপার জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান বলেছিলেন, প্রশিকার সঙ্গে চুক্তির একটি পক্ষ ছিল ইউনিয়ন পরিষদ। সেই হিসেবে গাছ কাটার অনুমতি নিতে ইউএনও বরাবর প্রশিকার আবেদন তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে সুপারিশ করেছিলেন। তবে গাছ কেটেছে প্রশিকা আর তাদের সংগঠন। এখানে চেয়ারম্যান-মেম্বরের কিছু নেই।
নড়াইল সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাশীষ অধিকারী বলেন, প্রশিকার চুক্তির সময় সড়কটি ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে ছিল, পরে ২০১৫ সালে এটি খাস খতিয়ানভুক্ত হয়। খাসজমি থেকে গাছ কাটা বেআইনি। এ কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।