নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে জাল জালিয়াতির মামলায় প্রতারক মো. সাকিব (৩৫) কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার (২৫ ফেব্রুয়ারী ) দুপুরে তাকে আদালতে পাঠায় পুলিশ।

এসময় গণমাধ্যম কর্মীরা  ছবি তুলতে গেলে প্রতারক সাকিব অকথ্য ভাষা ব্যবহারের পর জেল থেকে বেরিয়ে গণমাধ্যম কর্মীদের দেখে নেওয়ার হুমকি দেন।

এর আগে মঙ্গলবার  রাত সাড়ে ১০ টার দিকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার নিমাইকাশারী এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত মো.

সাকিব সানারপাড় এলাকার আবু সেলিমের ছেলে।

সিদ্ধিরগঞ্জ থানার  উপ-পরিদর্শক মো. মাসুম বিল্লাহ  জানান, জালিয়াতির প্রতারণা মামলায় সাকিব নামে একজনকে নিমাইকাশারী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছি। উক্ত মামলায় তার বিরুদ্ধে আদালত কর্তৃক গ্রেপ্তারি পরোয়ানা হয়েছিল।
 

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: স দ ধ রগঞ জ ন র য়ণগঞ জ স দ ধ রগঞ জ

এছাড়াও পড়ুন:

গাজীপুরে মুখ থুবড়ে পড়েছে ২৪ কোটি টাকার পানি প্রকল্প

গাজীপুরের শ্রীপুর পৌরসভার বাসিন্দাদের সুপেয় পানি সরবরাহের জন্য প্রায় ২৪ কোটি টাকার একটি প্রকল্প গ্রহণ করে সরকার। কিন্তু প্রকল্প শেষ হওয়ার বহু বছর পরও পৌরবাসীর ঘরে পৌঁছায়নি এক ফোঁটা পানিও। নিন্মমানের কাজ, অব্যবস্থাপনা ও তদারকির অভাবে মাটির নিচে নষ্ট হয়ে পড়ে আছে পুরো প্রকল্প।

২০১৯-২০ অর্থবছরে জাতীয় পর্যায়ের পানি সরবরাহ প্রকল্পের অংশ হিসেবে শ্রীপুর পৌরসভায় কাজ শুরু হয়। নির্ধারিত সময়ে ২০২১ সালে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা টেনে নেয় ২০২৩-২৪ অর্থবছর পর্যন্ত। পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে মোট ১৩৮ কিলোমিটার পাইপলাইন বসানো ও ১০টি পাম্প হাউস নির্মাণের পরিকল্পনা ছিল। এর মধ্যে পাইপলাইনের জন্য বরাদ্দ হয় প্রায় ১৫ কোটি টাকা এবং পাম্প হাউসের জন্য ৮ কোটি টাকারও বেশি। মনিরা ট্রেডার্স পাইপলাইন ও জিলানী ট্রেডার্স পাম্প হাউস নির্মাণের কাজ করে। তদারকির দায়িত্বে ছিল জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর।

কাগজে-কলমে কাজ শেষ দেখালেও বাস্তবে অধিকাংশ পাইপলাইন ভেঙে অকার্যকর হয়ে পড়েছে। ১০টির মধ্যে মাত্র ৯টি পাম্প হস্তান্তর করা হলেও সেগুলোও বিকল হয়ে আছে। একটি পাম্প হাউস এখনো নির্মাণাধীন।

পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, “এত কোটি টাকা খরচ হলো, কিন্তু আমাদের ঘরে একদিনও পানি আসেনি। পাইপলাইন মাটির নিচে পচে গেছে, বাসাবাড়ির গ্যাস লাইন কিংবা সড়ক সংস্কারের সময়ও এগুলো কেটে একাকার করা হয়েছে। পুরো বিষয়টি আসলে টাকার লুটপাট ছাড়া কিছু নয়।”

৯ নম্বর ওয়ার্ডের আরেক বাসিন্দা খোরশেদ আলমের ক্ষোভ, “২৪ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে, অথচ একটি ফোঁটা পানিও মানুষ পায়নি। নিম্নমানের পাইপ বসানো হয়েছিল, সেগুলো সব ভেঙে গেছে। প্রকল্প চালু হওয়ার কোনো সম্ভাবনাই নেই।”

প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে বলে দেখানো হলেও, বাস্তবে শ্রীপুর পৌরবাসীর ঘরে এখনো পৌঁছায়নি পানি। কোটি কোটি টাকা খরচ করেও শুধু মাটির নিচে চাপা পড়েছে স্বপ্নের এই পানি সরবরাহ প্রকল্প। নাগরিকরা বলছেন, সরকারের মূল্যবান অর্থ অপচয়ের এমন নজির দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে দীর্ঘদিন।

শ্রীপুর পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী (পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন) আবু হেনা মোস্তফা কামাল বলেন, “আমি দায়িত্বে থাকলেও শুরুতে কোনো দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। তবে সত্যি বলতে, নিম্নমানের পাইপ ব্যবহার হয়েছে। ১৫০০ সংযোগ দেওয়া হয়েছিল, এখন একটিও চালু নেই।”

গাজীপুর জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মশিউর রহমান বলেন, “২০২৩ সালে কাজ পৌরসভার কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। কাজের মান খারাপ হলে তারা কেন গ্রহণ করলো?”

পৌর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাহেদ আখতার বলেন, “কাজ বুঝে নেওয়ার পরও বাস্তবে পানি সরবরাহ চালু করা যায়নি। পাইপ নষ্ট হয়ে গেছে। প্রকল্প চালু হবে কিনা তা নিয়েই সন্দেহ রয়েছে।”

শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর প্রশাসক সজীব আহমেদ বলেন, “প্রকল্প হস্তান্তর হয়েছে আমার দায়িত্ব নেওয়ার আগেই। আমি আসার পর থেকে পুরো প্রকল্প বিকল অবস্থায় রয়েছে। চালু হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম।”

ঢাকা/রফিক/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ