নতুন ছাত্রসংগঠনের যাত্রা শুরু, পদ নিয়ে বিক্ষোভ
Published: 26th, February 2025 GMT
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়কদের উদ্যোগে গঠিত নতুন ছাত্রসংগঠনের নাম দেওয়া হয়েছে ‘বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ’।
সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক হয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের স্নাতকের শিক্ষার্থী আবু বাকের মজুমদার। সদস্যসচিব করা হয়েছে আরেক সাবেক সমন্বয়ক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী জাহিদ আহসানকে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিনে সংবাদ সম্মেলন করে গতকাল বুধবার নতুন ছাত্রসংগঠনের কেন্দ্রীয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি স্লোগান, বিক্ষোভ, ধস্তাধস্তি এবং পরে অন্তত দুই দফা মারামারির ঘটনা ঘটেছে। মারামারিতে আহত অন্তত দুজন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। তাঁরা হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মিশু আলী ও আকিব আল হাসান।
বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তাঁরা নতুন ছাত্রসংগঠনের কমিটিতে তাঁদের ‘সঠিক প্রতিনিধিত্ব’ চান। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বলছিলেন, কমিটিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।
বিক্ষোভকারীরা সাবেক সমন্বয়ক রিফাত রশীদকে আরও গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়ার দাবি করছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রিফাত রশীদকে নতুন ছাত্রসংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব করা হয়েছে।
এদিকে নতুন ছাত্রসংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটিতে জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক পদে তৌহিদ মোহাম্মদ সিয়াম, মুখ্য সংগঠক হিসেবে তাহমিদ আল মুদাসসির চৌধুরী ও মুখপাত্র পদে আশরেফা খাতুনের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা কমিটির আহ্বায়ক পদে আবদুল কাদের, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক পদে লিমন মাহমুদ হাসান, সদস্যসচিব পদে মহির আলম, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব পদে আল আমিন সরকার, মুখ্য সংগঠক পদে হাসিব আল ইসলাম ও মুখপাত্র পদে রাফিয়া রেহনুমা হৃদিকে মনোনীত করা হয়।
নতুন ছাত্রসংগঠনের নেতারা গতকাল সংবাদ সম্মেলনে হট্টগোলের মধ্যে সংগঠনের উদ্দেশ্য, নীতি ও ভবিষ্যৎ কার্যক্রম নিয়ে বিস্তারিত জানাতে পারেননি। তবে বিগত কয়েক দিনে তাঁরা গণমাধ্যমকে বলেছেন, নতুন ছাত্রসংগঠনের নীতি হবে ‘স্টুডেন্টস ফার্স্ট’ ও ‘বাংলাদেশ ফার্স্ট’। ছাত্র-নাগরিকের স্বার্থ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাজ করবেন তাঁরা। নতুন ছাত্রসংগঠন কারও লেজুড়বৃত্তি করবে না। কোনো ‘মাদার পার্টির’ এজেন্ডা বাস্তবায়ন করবে না।
আবু বাকের মজুমদার ও জাহিদ আহসান.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সদস যসচ ব স ব ক সমন
এছাড়াও পড়ুন:
অনুমোদনের প্রথম দিন সেন্ট মার্টিন যায়নি কোনো পর্যটকবাহী জাহাজ
দীর্ঘ ৯ মাস পর শনিবার থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলের অনুমতি দিয়েছে সরকার। কিন্তু প্রথম দিন কোনো জাহাজ সেন্ট মার্টিনে না যাওয়ার কারণে পর্যটকেরা দ্বীপে যেতে পারেননি। হাজারো পর্যটক সেন্ট মার্টিনে যেতে না পেরে হতাশ হয়ে ফিরে গেছেন। অন্যদিকে জাহাজমালিকেরা বলছেন, সরকারের বিভিন্ন শর্তের কারণে পর্যটকদের আগ্রহ না থাকায় জাহাজ চলাচল বন্ধ ছিল।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী দ্বীপটি পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। ১ নভেম্বর থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলে সরকারের কোনো বাধা নেই। লিখিতভাবে জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে দিনে গিয়ে দিনেই চলে আসতে হবে; রাতে থাকা যাবে না।
এদিকে রাতে থাকার সুযোগ না থাকায় পর্যটকেরা যেতে আগ্রহী হচ্ছেন না। কারণ, দীর্ঘ সময় ভ্রমণ করে দ্বীপে গিয়ে আবার সেদিনই চলে আসতে হবে। এ কারণে জাহাজমালিকেরাও জাহাজ চালাতে অনীহা প্রকাশ করছেন। তাঁদের দাবি, দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত বাস্তবসম্মত নয়।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. শাহিদুল আলম বলেন, জাহাজমালিকেরা যদি জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখেন, সেটা তাঁদের ব্যাপার। সেন্ট মার্টিনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সরকারের জারি করা ১২টি নির্দেশনা এবার কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করবে জেলা প্রশাসন।
শাহিদুল আলম বলেন, আগে টেকনাফ থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল করলেও নিরাপত্তার কারণে এখন কক্সবাজার শহর থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে সেন্ট মার্টিনে যাতায়াত করবে।
সি ক্রুজ অপারেটরস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (স্কোয়াব) সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া ঘাট থেকে জাহাজ ছেড়ে গেলে সেন্ট মার্টিন পৌঁছাতে সাত থেকে আট ঘণ্টা সময় লাগে। ফলে পর্যটকেরা কিছুই ঘুরে দেখতে পারবেন না। দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসা যেমন কষ্টসাধ্য, তেমনি ব্যবসার জন্যও তা অলাভজনক। এ কারণেই অনেক পর্যটক সেন্ট মার্টিন যেতে অনীহা প্রকাশ করেছেন।
হোসাইন ইসলাম আরও বলেন, রাতযাপন করার সুযোগ না থাকলে সেন্ট মার্টিনের পর্যটন মৌসুম জমে না। পর্যটকেরা রাতের সৈকত দেখতে চান, ঢেউয়ের শব্দ শুনতে চান। সেটাই তো সেন্ট মার্টিনের আসল আকর্ষণ।
পরিবেশ অধিদপ্তরের কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের পরিচালক মো. জমির উদ্দিন বলেন, সেন্ট মার্টিন দ্বীপে ভ্রমণের ক্ষেত্রে সরকারের নির্দেশনা কঠোরভাবে কার্যকর করা হবে। এ লক্ষ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুনসেন্ট মার্টিনে নিষেধাজ্ঞা উঠছে কাল, তবে জাহাজ চলবে কি৩১ অক্টোবর ২০২৫