১০ বছর কর অবকাশ-সুবিধা চান রংপুরের ব্যবসায়ীরা
Published: 27th, February 2025 GMT
রংপুরের উন্নয়নে আগামী অর্থবছরের বাজেটে বিবেচনার জন্য ১০টি দাবি জানিয়েছে রংপুর চেম্বার অব কমার্স। এর মধ্যে অন্যতম হলো রংপুরের ব্যবসায়ীদের ১০ বছর কর অবকাশ-সুবিধা প্রদান; রংপুর বিভাগের শিল্প, কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও অবকাঠামো উন্নয়নে বিশেষ বরাদ্দ দেওয়া এবং চারটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গঠন।
আজ বৃহস্পতিবার রংপুর চেম্বার অব কমার্স আয়োজিত প্রাক্-বাজেট আলোচনায় এসব দাবি জানান ব্যবসায়ী নেতারা। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা আরডিআরএস মিলনায়তনে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান।
রংপুর চেম্বারের অন্য দাবিগুলো হলো তিস্তা মহাপরিকল্পনা গ্রহণ ও বরাদ্দ প্রদান; শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বৈদেশিক কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা; সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি সম্প্রসারণ; রংপুর সিটি করপোরেশনকে প্রয়োজনীয় উন্নয়ন বাজেট দেওয়া; রংপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ গঠন; রংপুর ওয়াসা গঠন; রংপুরে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন এবং রংপুর মেডিকেল কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীতকরণ।
আলোচনায় রংপুর চেম্বারের সভাপতি আকবর আলী বলেন, দেশে বিদ্যমান পরিস্থিতিতে ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করা কঠিন হয়ে পড়েছে। নতুন শিল্প স্থাপনা আরও বেশি চ্যালেঞ্জিং। মুদ্রাস্ফীতি, ব্যাংকে তারল্যসংকট, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের অভাব ও গ্যাস না থাকায় উত্তরবঙ্গে নতুন শিল্প স্থাপন তো দূরের কথা, কুটির শিল্প টিকিয়ে রাখতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
১০ বছর কর অবকাশ–সুবিধা চান রংপুরের ব্যবসায়ীরা.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ
সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়।
গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।
টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন।
এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’
সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।