নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে ছিনতাইয়ের পর নারীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। গত মঙ্গলবার রাতে পৌরসভার দৈলেরবাগ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে আটজনকে আসামি করে বুধবার রাতে সোনারগাঁ থানায় মামলা করেন ওই নারী। প্রধান অভিযুক্ত মো. সজীবকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ওই নারীকে ডাক্তারি পরীক্ষা করতে নারায়ণগঞ্জ ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এদিকে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রকাশ্যে চাপাতি দিয়ে পুলিশ সদস্যকে কুপিয়ে মাদক কারবারিকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার বালুয়াকান্দির এক নারী বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বাবুর্চির সহকারী হিসেবে কাজ করেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তাঁর দেবরকে নিয়ে মদনপুর এলাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বোনকে দেখতে যান। রাতে তারা সিএনজিচালিত অটোরিকশায় কৃষ্ণপুরা এলাকায় তাঁর খালাতো ভাইয়ের বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশে রওনা হন। রাত সাড়ে ১১টার দিকে চিলারবাগ এলাকায় কয়েকজন তাদের গতিরোধ করে। এক পর্যায়ে তাদের দেশি অস্ত্র ঠেকিয়ে দৈলেরবাগ এলাকার লাল মিয়ার পরিত্যক্ত টিনশেড বাড়িতে নিয়ে যায়। মারধর করে নগদ ১৬ হাজার টাকা ও নারীর স্বর্ণের দুল ছিনিয়ে নেয়। পরে তারা অন্য একটি কক্ষে আটকে রেখে ধর্ষণ করে।
সোনারগাঁ থানার ওসি মোহাম্মদ আব্দুল বারী বলেন, দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় মামলা গ্রহণ এবং একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পুলিশকে কুপিয়ে মাদক কারবারিকে ছিনতাই
কারওয়ান বাজারে মঙ্গলবার পুলিশকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে এক মাদক কারবারিকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। সেখানে দেখা যায়, ধারালো চাপাতি উঁচিয়ে ফুলহাতা গেঞ্জি ও প্যান্ট পরিহিত এক যুবক বারবার ভুক্তভোগী পুলিশ সদস্যের দিকে তেড়ে যাচ্ছে। ওই সময় হাতকড়া পরানো মাদক কারবারি মাথা দিয়ে পুলিশ সদস্যকে সজোরে ধাক্কা দিয়ে ছুটে যাওয়ার চেষ্টা করে। একই সময় চাপাতি হাতে থাকা যুবক পুলিশ সদস্যের বাঁ হাতের বাহুতে কোপ দেয়। ঘটনার সময় আশপাশে উৎসুক জনতার ভিড়ও দেখা যায়। কাউকে ওই পুলিশ সদস্যকে বাঁচাতে এগিয়ে আসতে দেখা যায়নি। এক পর্যায়ে ওই পুলিশ সদস্যকে মাদক কারবারির হাত থেকে হাতকড়া খুলে দিতে দেখা যায়।
ডেভিল হান্টে গ্রেপ্তার ৭৪৩
সারাদেশে চলমান আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পরিচালিত অপারেশন ‘ডেভিল হান্টে’ আরও ৭৪৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া এই অভিযানে এ পর্যন্ত ১১ হাজার ৩১৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পুলিশ সদরদপ্তর থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, অপারেশন ডেভিল হান্ট অভিযানের আওতায় গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৭৪৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আর অন্য মামলা ও ওয়ারেন্টমূলে গ্রেপ্তার হয়েছে আরও ৯১৪ জন। ২৪ ঘণ্টায় মোট গ্রেপ্তার হয়েছে ১ হাজার ৬৫৭ জন। গ্রেপ্তারকালে শুটারগান, কার্তুজ, চাকুসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।
ঢাকায় ছিনতাইসহ নানা অপরাধে গ্রেপ্তার ২৫৬
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযানে চালিয়ে ২৫৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। তাদের বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। গতকাল ডিএমপির মিডিয়া শাখা থেকে পাঠানো পৃথক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, ২৪ ঘণ্টায় মহানগরীর বিভিন্ন স্থানে সাঁড়াশি অভিযানে ১৩ ডাকাত, ৩২ পেশাদার ছিনতাইকারী, ছয় চাঁদাবাজ, ১৯ চোর, ২৮ চিহ্নিত মাদক কারবারি এবং ৪১ পরোয়ানাভুক্ত আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে চাকু, ছুরি, প্রাইভেটকার, স্কুটি, মোটরসাইকেল, অটোরিকশা, ওয়াকিটকি, মোবাইল ও নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়। গত ২৪ ঘণ্টায় ডিএমপির বিভিন্ন থানায় মামলা হয়েছে ৬৫টি।
আওয়ামী লীগ নেতাকে ছিনিয়ে নিল স্থানীয়রা
ইন্দুরকানী (পিরোজপুর) প্রতিনিধি জানান, পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে নাশকতা মামলার আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় একজন উপপরিদর্শকসহ পাঁচ পুলিশ সদস্যকে পুলিশ লাইন্সে ক্লোজ করা হয়েছে। পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা পুলিশ সদস্যরা হলেন– ইন্দুরকানী থানার উপপরিদর্শক পলাশ সাহা, সহ-উপপরিদর্শক আলমগীর হোসেন, রুহুল আমিন, কনস্টেবল মো.
সোমবার ইন্দুরকানী থানা পুলিশ ঢেপসাবুনিয়া এলাকা থেকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশের ওপর হামলা করে আওয়ামী লীগ নেতা হেলাল খানকে ছিনিয়ে নিয়ে যায় স্থানীয়রা। এ ঘটনায় পুলিশের কাজে বাধার অভিযোগে অভিযুক্ত ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।
ইন্দুরকানী থানার ওসি মারুফ হোসেন জানান, হেলাল খান নাশকতা মামলার আসামি। খবর পেয়ে তাকে গ্রেপ্তার করলে স্থানীয়দের সহায়তায় পুলিশের ওপর হামলা করে তিনি পালিয়ে যান।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর প ল শ সদস য এল ক য় র ঘটন ঘটন য়
এছাড়াও পড়ুন:
নারায়ণগঞ্জে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় ৫ বিএনপি নেতা বহিষ্কার
নারায়ণগঞ্জের আড়াই হাজার উপজেলায় বিএনপির কার্যালয়ের ভাড়া চাওয়ায় দোকান মালিক জাহাঙ্গীর ভূঁইয়াকে (৫০) পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় পাঁচ নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
তারা হলেন, উপজেলার মাহমুদপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক তোতা মেম্বার, জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খোকন প্রধান, বিএনপি নেতা রাসেল প্রধান, আলম মিয়া ও সাদ্দাম হোসেন।
বুধবার (৩০ জুলাই) রাতে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মামুন মাহমুদ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বহিষ্কারের বিষয়টি জানানো হয়।
আরো পড়ুন:
উপদেষ্টা আসিফের সমর্থকদের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া
কুষ্টিয়া প্রেস ক্লাবে বিএনপির অভিযোগ বক্স, যা পাওয়া গেল
এর আগে সকালে আড়াই হাজার উপজেলায় জাহাঙ্গীর ভূইয়া খুন হন। নিহতের ছেলে রাসেল জানান, ৫ আগস্টের পর বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মাহমুদুর রহমান সুমনের অনুসারী মাহমুদপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক তোতা মেম্বার সালমদী বাজারে তার বাবার কাছ থেকে বছরে ৩০ হাজার টাকা ভাড়ায় ৩টি দোকান ভাড়া নেন। এর একটি দোকানে বিএনপির কার্যালয় স্থাপন করেন। বাকি দুটি দোকানের ভাড়া পরিশোধ করলেও যে দোকানে বিএনপির কার্যালয় করেছেন, সেটির ভাড়া পরিশোধ করছিলেন না।
তিনি আরো জানান, আজ বুধবার (৩০ জুলাই) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে তার বাবা জাহাঙ্গীর ভূইয়া ভাড়া চাইতে বিএনপি কার্যালয়ে তোতা মেম্বারের কাছে যান। ভাড়া চাইলে তোতা মেম্বার টালবাহানা শুরু করেন। এ সময় উভয়ের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে তার বাবাকে তোতা মেম্বার চড় দেন। এ খবর পেয়ে তোতা মেম্বারের ছেলে খোকন, রাসেল, ভাতিজা সাদ্দাম, আলমসহ কয়েকজন তার বাবাকে বিএনপি কার্যালয়ের ভেতরে এলোপাতাড়ি মারধর করেন। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ঢাকা/অনিক/বকুল