ইউক্রেনের নিরাপত্তায় মার্কিন সমর্থন চান স্টারমার
Published: 28th, February 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্র নিরাপত্তার গ্যারান্টি না দিলে রাশিয়া আবারও ইউক্রেন দখলে নামতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। ইউক্রেনে যে কোনো যুদ্ধবিরতি কার্যকরে যুক্তরাষ্ট্রকে রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করার অনুরোধ জানাতে স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করবেন তিনি। একমাত্র এটিই ইউক্রেনে আবার আক্রমণ করা থেকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে বিরত রাখবে বলে মনে করছেন স্টারমার। খবর বিবিসি ও আলজাজিরার।
এর আগে ট্রাম্প বলেছিলেন, ইউক্রেনের নিরাপত্তা দেওয়া ইউরোপের দায়িত্ব। যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের নিরাপত্তার গ্যারান্টি দেবে না। স্টারমার জানান, শুক্রবার ওভাল অফিসে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ হবে। ওই সাক্ষাতে ‘বিরাট’ এক চুক্তি হবে দু’দেশের মধ্যে।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নতুন করে আলোচনার জন্য তুরস্কের ইস্তাম্বুলে পৌঁছেছে রাশিয়ার একটি প্রতিনিধি দল। এ নিয়ে চলতি মাসে দ্বিতীয়বারের মতো মস্কো ও ওয়াশিংটনের কূটনীতিকরা ব্যক্তিগতভাবে সংলাপে বসছেন। বহু সাংবাদিক ইতোমধ্যে সেখানে জড়ো হয়েছেন। তবে আলোচনাটি হবে বন্ধ দরজার পেছনে।
জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের সভায় রাশিয়ার ভাষণের সময় ওয়াক আউট করেছেন কয়েক ডজন কূটনীতিক। ইউক্রেনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে বুধবারের এ পদক্ষেপ নিয়েছেন তারা। এরই মধ্যে রাশিয়ায় আরও ৩ হাজার সেনা মোতায়েন করেছে উত্তর কোরিয়া। প্রথম মন্ত্রিসভার বৈঠকে ইউক্রেন ইস্যুতে কথা বলতে গিয়ে ট্রাম্প বলেন, ন্যাটো জোটে ইউক্রেনের যুক্ত হওয়ার পরিকল্পনার কারণেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হয়েছিল। তাই, যুদ্ধের অবসানে কিয়েভ ন্যাটোতে যোগদানের কথা ভুলে যেতে পারে।
ইউক্রেনের বেশ কয়েকটি এলাকায় রাতভর ১৬৬টি ড্রোন হামলা করেছে রাশিয়া। এর মধ্যে ৯০টি ড্রোন ভূপাতিত করেছে বলে দাবি ইউক্রেনের। এতে ছয় বেসামরিক নিহত ও ১০ জন আহত হয়েছেন।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন
টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।
এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।
গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।
প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।