গণঅভ্যুত্থানের নেতৃত্বে দেওয়া তরুণদের নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ হচ্ছে আজ। এ উপলক্ষে আমন্ত্রণ জানানো হয় আন্দোলনের সময় অংশ নেওয়া রাজনৈতিক দলের নেতাদের। নতুন দলের নেতাদের আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে তারা উপস্থিত হয়েছেন মানিক মিয়া এভিনিউতে।

আজ শুক্রবার বিকাল ৪টায় সংসদ ভবনের সামনে মানিক মিয়া এভিনিউয়ে বানানো মঞ্চে অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে।

অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা। তারমধ্যে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমির আহমেদ আলী কাসেমী, বিকল্পধারার নেতা মেজর (অব.

) আব্দুল মান্নান, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমেদ, লেবার পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, ইসলামী ঐক্য জোটের সহসভাপতি জসিম উদ্দিন, বিএলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম ও বাংলাদেশ খেলাফত মসলিসের মহাসচিব আহমেদ আবদুল কাদের।

নতুন দলের নেতাদের মধ্যে আব্দুল হান্নান মাসুদ, নুসরাত তাবাসসুম, আরিফুল ইসলাম আদিব বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় যমুনায় গিয়ে প্রধান উপদেষ্টার কাছেও আমন্ত্রণপত্র পৌঁছে দিয়েছিলেন।

হান্নান মাসউদ তখন সাংবাদিকদের বলেন, আমরা শহীদ পরিবারকে দাওয়াত করেছি, আহতদেরকে দাওয়াত করেছি, পাশাপাশি উপদেষ্টাদেরকে দাওয়াত করছি এবং ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে আমাদের সঙ্গে ছিল এমন সব রাজনৈতিক দলকে আমরা দাওয়াত করেছি। সুশীল সমাজ, বিদেশি বন্ধু এবং কূটনীতিকদের আমরা দাওয়াত করেছি।

জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন বলেন, নতুন দলের আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম।

সদস্যসচিব আখতার হোসেন। আহ্বায়কের দায়িত্ব নিতে গত মঙ্গলবার অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ থেকে পদত্যাগ করেন নাহিদ ইসলাম। দলের সদস্যসচিব আখতার হোসেন জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। নতুন দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক পদে থাকছেন সামান্তা শারমিন ও আরিফুল ইসলাম আদীব।

জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব পদে থাকছেন তাসনিম জারা ও নাহিদা সারওয়ার (নিভা)।প্রধান সমন্বয়কারী পদে থাকছেন নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। যুগ্ম সমন্বয়ক হচ্ছেন আবদুল হান্নান মাসউদ।হাসনাত আবদুল্লাহকে মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) ও সারজিস আলমকে মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) পদে চূড়ান্ত করা হয়েছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: এনস প র জন ত ক দল ব এনপ জ ম য় ত ইসল ম সদস যসচ ব দল র ন ত ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

শুধু ঘোষণা নয়, বাস্তবে প্রতিফলিত হোক

রাজধানী শহরসহ দেশের বড় শহরগুলোয় শব্দদূষণের অসহনীয় মাত্রার বিষয়টি কারও অজানা নয়। এটি এখন শুধু শব্দদূষণ নয়, শব্দসন্ত্রাস বলেও অভিহিত হচ্ছে। অতীতে ও বর্তমানে সরকারগুলো বিভিন্ন পদক্ষেপ নিলেও কার্যকর হচ্ছে না। অতীতের ধারাবাহিকতায় রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশান, বনানী, বারিধারা ও নিকেতনকে ‘নীরব এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। সিদ্ধান্তটি নিঃসন্দেহে প্রশংসার যোগ্য। এখন এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করাই হচ্ছে বড় চ্যালেঞ্জ।

শহরের শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে নীরব এলাকা ঘোষণা একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এটি অবশ্যই সরকারের সদিচ্ছার প্রকাশ। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এই ঘোষণা বাস্তবে কার্যকর হবে, নাকি এটিও অতীতের মতো কেবল কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ থাকবে? এর আগে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং এর আশপাশের এলাকাকে নীরব এলাকা ঘোষণা করা হয়েছিল, কিন্তু তার ফল তেমন একটা ভালো পাওয়া
যায়নি। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ঘোষণার পর কিছু এলাকায় শব্দ কিছুটা কমলেও সার্বিকভাবে পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি। এই অভিজ্ঞতা থেকে বোঝা যায়, শুধু ঘোষণা যথেষ্ট নয়, বরং এর কঠোর বাস্তবায়ন অপরিহার্য।

শব্দদূষণের ক্ষেত্রে আগের তুলনায় সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে বলতেই হয়। যার কারণে সাউন্ডবক্স বা মাইক বাজানোর বিষয়গুলো তুলনামূলকভাবে কমে এসেছে। তবে গাড়ির হর্ন এতটা বিভীষিকাময় পরিস্থিতি তৈরি করছে, যা অকল্পনীয়। এটিই এখন রাজধানীসহ বড় শহরগুলোর শব্দদূষণের সবচেয়ে বড় আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, অতিরিক্ত শব্দ হৃদ্‌রোগ, উচ্চ রক্তচাপ এবং মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। চিকিৎসকেরা বলছেন, এটিতে শ্রবণশক্তি হ্রাস পায়, মেজাজ খিটখিটে হয়, মানুষ অনিদ্রায় ভোগে এবং শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় বিঘ্ন ঘটায়। তাই শুধু অভিজাত এলাকা নয়, পুরো শহরে ধাপে ধাপে কীভাবে নীরব এলাকা ঘোষণা করা যায়, সেই লক্ষ্যে পরিকল্পিতভাবে এগোতে হবে।

তবে এ উদ্যোগ সফল করতে হলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে কঠোর হতে হবে। হর্ন বাজানোর বিরুদ্ধে আইন আছে। তা যদি আইনভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে কঠোরভাবে প্রয়োগ না করা হয়, এ ঘোষণা কখনোই সফল হবে না। কেবল প্রশাসনের ওপর নির্ভর না করে নীরব এলাকা–ঘোষিত এলাকাগুলোর বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, যেমন মসজিদ, মন্দির এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকেও এখানে গণসচেতনতার কাজে যুক্ত করতে হবে।

গাড়ির হর্ন বাজানো সীমিত করতে পরিবহনের বিভিন্ন ধরনের সমিতি–সংগঠনগুলোর যুক্ততাও এখানে গুরুত্বপূর্ণ। গাড়ির চালকদের অভ্যাসগত পরিবর্তনের জন্য শব্দদূষণের ক্ষতিকর দিকটি নিয়মিতভাবে তাঁদের কাছে উপস্থাপন করতে হবে। হাইড্রোলিক হর্নসহ উচ্চমাত্রার যেকোনো হর্ন উৎপাদন, আমদানি ও ব্যবহারের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রয়োগ করতে হবে। এ ব্যাপারে ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই।

সম্পর্কিত নিবন্ধ