ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার চাতলপাড় ডিগ্রি কলেজে প্রথমবারের মতো ৯ সদস্যের শাখা কমিটি ঘোষণা করেছে জেলা ছাত্রদল। নতুন কমিটির সাতজনই নারী শিক্ষার্থী। গতকাল শুক্রবার রাতে জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক শাহিনুর রহমান ও যুগ্ম সদস্যসচিব সমীর চক্রবর্তীর সই করা কমিটি–সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি ফেসবুকে ছড়ালে এ তথ্য জানা যায়।

কলেজ শাখা ছাত্রদলের কমিটিতে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ গুরুত্বপূর্ণ সাতটি পদে নারী শিক্ষার্থীরা স্থান পাওয়ার বিষয়টিকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক ও সদস্যসচিবের সই করা এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়। ছাত্রদলের সদস্যসচিব নিজের ফেসবুকে শেয়ার করলে বিষয়টি নজরে আসে। কমিটিতে চাতলপাড় ডিগ্রি কলেজের ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী কনিকা আক্তারকে সভাপতি ও বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী দেওয়ান নুসরাতকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়েছে। তাঁরা চলতি বছর এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবেন।

কমিটির অন্য পদেও নারীরা প্রাধান্য পেয়েছেন। মানবিক বিভাগের এইচএসসি পরীক্ষার্থী পুষ্পা আক্তারকে জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি, একাদশ শ্রেণির আয়েশা সিদ্দিক ও মানবিক বিভাগের পরীক্ষার্থী মুক্তা আক্তারকে সহসভাপতির পদ দেওয়া হয়েছে। বিজ্ঞান বিভাগের পরীক্ষার্থী নূসরাত জাহান ও একাদশ শ্রেণির মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থী নাজনীন আক্তারকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়েছে। কমিটিতে দুই পুরুষ শিক্ষার্থী স্থান পেয়েছেন। তাঁরা হলেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের পরীক্ষার্থী তানভীর মিয়া ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে মানবিক বিভাগের পরীক্ষার্থী ইকবাল হোসেন। তাঁদের ৩০ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

কমিটিতে নারীরা প্রাধান্য পাওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন শাখা ছাত্রদলের সদ্য সভাপতি কনিকা আক্তার। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘গুরুত্বপূর্ণ পদ ও সংখ্যায় নারীদের প্রাধান্য দেওয়ায় আমরা আনন্দিত ও খুশি। ছাত্রদলের জন্য সর্বোচ্চ কাজ করে যাব।’

জানতে চাইলে জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক শাহিনুর রহমান ও সদস্যসচিব সমীর চক্রবর্তী বলেন, যখন নাসিরনগরে গিয়ে ছাত্রদলের সদস্য ফরম বিতরণ করা হয়, তখন নারীরাই এগিয়ে আসেন। সেখানে ছেলেদের খুব একটা এগিয়ে আসতে দেখা যায়নি। তা ছাড়া বিএনপির প্রধানও নারী। তাই দলের নির্দেশনা অনুযায়ী, নারীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। নতুন নেতৃত্ব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গণতান্ত্রিক চর্চা ও সংগঠনের কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করবে।

নাসিরনগর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বশির উদ্দিন বলেন, নারীরা আর পিছিয়ে নেই। পুরুষের সঙ্গে নারীরাও বিএনপিতে এগিয়ে থাকবেন, এমনটিই দলের নেতার নির্দেশনা।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব ভ গ র পর ক ষ র থ সদস যসচ ব ছ ত রদল র ন স রনগর কম ট ত সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই ডকুমেন্টরিতে ‘ফুটেজ’ না থাকায় জাবি ছাত্রদল নেতার হট্টগোল

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মরণে নির্মিত দেশের প্রথম স্মৃতিস্তম্ভ ‘অদম্য ২৪’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রচারিত ডকুমেন্টরিতে ফুটেজ না থাকায় এক ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে হট্টগোল করা অভিযোগ পাওয়া গেছে।

তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের ৩৯তম ব্যাচের (২০০৯-১০ সেশন) সাবেক শিক্ষার্থী এবং শাখা ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি।

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) বিকেল ৬টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন ফজিলাতুন্নেসা হলের সামনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ডকুমেন্টরি প্রদর্শন শেষে এ হট্টগোল করেন তিনি।

আরো পড়ুন:

জুলাই শহীদ পরিবারদের সংবর্ধনা দিল জাবি

জুলাই শহীদদের স্মরণে জাবি ছাত্রদলের বৃক্ষরোপণ

এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অন্তবর্তীকালীন সরকারের শিল্প, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।

ডকুমেন্টরি প্রদর্শন শেষে ওই ছাত্রদল নেতা উত্তেজিত কণ্ঠে বলতে থাকেন, “এই‌ ডকুমেন্টরিতে ইতিহাস বিকৃতি করা হয়েছে। ডকুমেন্টরিতে ছাত্রদলের অবদানকে অস্বীকার করা হয়েছে। আমরাও আন্দোলন মাঠে ছিলাম, জেল-জুলুম, মামলা আমরাও খেয়েছি।”

এ সময় তার সঙ্গে শাখা ছাত্রদলের বর্তমান কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক রোমান রাশিদুল ও হাসান শাহরিয়ার রমিমকেও হট্টগোল করতে দেখা যায়।

অনুষ্ঠানের আয়োজকরা জানান, ডকুমেন্টরি নির্মাণের জন্য তাদের দুইদিন সময় দেওয়া হয়েছিল। এই সময়ের মধ্যে একটি মাত্র ক্যামেরা দিয়ে ২৫ থেকে ৩০ জনের ইন্টারভিউ নেওয়া খুবই কষ্টসাধ্য কাজ ছিল। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে পর্যাপ্ত ইকুইপমেন্ট ও‌ সময় না পাওয়ায় তাদের পূর্ণাঙ্গ ডকুমেন্টরি নির্মাণ কাজ বাধাগ্রস্ত হয়েছে।

তবে এ ঘটনার পেছনে বিশ্ববিদ্যালয়ের গাণিতিক ও পদার্থবিষয়ক অনুষদের এক প্রভাবশালী শিক্ষকের হাত রয়েছে বলে জানিয়েছেন একাধিক শিক্ষক।

তারা জানান, ডকুমেন্টরি নির্মাণের পূর্বে তারা জুলাই আন্দোলনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব ছবি ও ভিডিও ফুটেজ চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট সব পাবলিক ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট করেছিলেন। তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীদের পাঠানো ও সাংবাদিকদের থেকে সংগৃহীত ছবি ও ফুটেজ দিয়ে ডকুমেন্টরি নির্মাণ করা হয়েছে। যে ব্যক্তি দাবি করেছেন তার ছবি বা ফুটেজ দেয়া হয়নি, তার ছবি বা ফুটেজ তাদের কাছে কেউ দেয়নি। এজন্য তারা ডকুমেন্টরিতে অন্তর্ভুক্ত করতে পারেননি?

এ নিয়ে জাবি উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেন, “আজ যে একটা বিশেষ পরিস্থিতি দেখেছি, এটাও জাহাঙ্গীরনগরের বৈশিষ্ট্য, এটাও ২৪ এর অর্জন। খারাপভাবে দেখার প্রয়োজন নেই। প্রত্যেকটি কাজের মধ্যে ভুল থাকতে পারে, এখানে শিক্ষার বিষয় রয়েছে। ঠিক একইসঙ্গে প্রতিবাদের যে ভাষা, সেখানেও শিক্ষিত হবার প্রয়োজন রয়েছে।”

তিনি বলেন, “আমি বিশ্বাস করি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে সমালোচনা ও কুৎসার পার্থক্য শিখবে। একইসঙ্গে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশংসা ও পূজার পার্থক্য শিখবে ও বুঝবে।”

ঢাকা/আহসান/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘বিচার প্রক্রিয়া ও সংস্কারের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে হবে’
  • জুলাই ডকুমেন্টরিতে ‘ফুটেজ’ না থাকায় জাবি ছাত্রদল নেতার হট্টগোল
  • রংপুরে হিন্দুপাড়ায় হামলার প্রতিবাদে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল