মেয়াদোত্তীর্ণ কেক নিয়ে সমন্বয়ক-ব্যবসায়ীদের মধ্যে মারামারি
Published: 1st, March 2025 GMT
জাতীয় নাগরিক কমিটির (এনসিপি) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যাওয়ার পথে সিরাজগঞ্জের তাড়াশে মেয়াদোত্তীর্ণ কেক বিক্রি নিয়ে ব্যবসায়ী ও সমন্বয়কদের মারামারির ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার সকালে ও শনিবার ভোরে উপজেলার খালকুলায় এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় ব্যবসায়ী ও নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার সমন্বয়কদের মধ্যে মারামারিতে অন্তত ৯ জন আহত হয়েছেন।
ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে মারধর করে চার সমন্বয়ককে আটক করে রাখার অভিযোগও উঠেছে। এ সময় একটি দোকান ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ সমন্বয়কদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো.
আহত সমন্বয়করা হলেন– বড়াইগ্রাম উপজেলার আতিকুর রহমান, নুহ হোসেন, হাবিবুর রহমান, নাটোর সদরের আবদুলাহ আল নোমান, হাবিব হোসেন, আমিনুর রহমান ও ছোট হাবিব। তাড়াশে আহত ব্যবসায়ীরা হলেন– মো. সাইদুর রহমান ও ফিরোজ হোসেন।
পুলিশ জানিয়েছে, শুক্রবার বড়াইগ্রাম থেকে সমন্বয়করা সাতটি বাসে প্রায় ২৫০ জন লোক নিয়ে ঢাকায় এনসিপির অনুষ্ঠানে যাচ্ছিলেন। পথে দুটি বাসের কয়েকজন সমন্বয়ক তাড়াশের খালকুলায় নাশতা করতে নামেন। এ সময় সাইদুর রহমান নামে দোকানি মেয়াদোত্তীর্ণ কেক বিক্রি করেন। সমন্বয়করা প্রতিবাদ জানালে তিনি একজনের হাতে রড দিয়ে আঘাত করেন।
এ নিয়ে তারা ধাক্কাধাক্কি ও মারামারিতে জড়িয়ে পড়লে তিনজন আহত হন। স্থানীয় লোকজন তাদের শান্ত করলে সমন্বয়করা ঢাকায় চলে যান। শনিবার ভোরে অনুষ্ঠান শেষে ফেরার পথে কয়েকজন সমন্বয়ক একই স্থানে নাশতা করতে যান। এ সময় কয়েকজন ব্যবসায়ী ও লোকজন তাদের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডা ও মারামারিতে জড়ান।
এতে সেখানকার আশা হোটেলে ম্যানেজার ফিরোজ হোসেন ও সাইদুর রহমান এবং সমন্বয়ক আবদুলাহ আল নোমান, হাবিব হোসেন, আমিনুর রহমান এবং ছোট হাবিব আহত হন। এ সময় ব্যবসায়ীরা চারজনকে হোটেলে প্রায় দুই ঘণ্টা আটকে রাখেন। খবর পেয়ে পুলিশ তাদের উদ্ধার করে।
নাটোর জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ ওবায়দুল্লাহ মিম বলেন, খালকুলার ব্যবসায়ীরা কয়েকজন সমন্বয়ককে মারধর করেছেন। তিনজনের মাথা ফেটে গেছে। আশা হোটেলের ম্যানেজার ফিরোজ হোসেনের ভাষ্য, তুচ্ছ ঘটনায় তাদের মারধর ও দোকান ভাঙচুর করেছে।
তাড়াশ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নাজমুল ইসলাম বলেন, সমন্বয়ক ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে মারপিটের ঘটনা তাড়াশের সমন্বয়কদের মাধ্যমে মীমাংসা হয়েছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সমন বয়ক স র জগঞ জ সমন বয়কদ র সমন বয়ক ব যবস য় র রহম ন এ সময়
এছাড়াও পড়ুন:
রাইজিংবিডিতে সংবাদ প্রকাশ: ডেরা রিসোর্টের লাইসেন্স বাতিল
মানিকগঞ্জের ঘিওরের বালিয়াখোড়ায় অবস্থিত ডেরা রিসোর্ট এন্ড স্পা সেন্টারের নানা অনিয়ম নিয়ে রাইজিংবিডিতে ‘কবরস্থানে হরিণের খামারসহ নানা অনিয়মের আখড়া ডেরা রিসোর্ট’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর প্রতিষ্ঠানটির লাইসেন্স বাতিল করেছে বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। একইসঙ্গে ডেরা রিসোর্টে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সহকারী নিয়ন্ত্রক (সিনিয়র সহকারী সচিব) শেখ রাশেদুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক নির্দেশনা পত্রে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
জানা গেছে, ডেরা রিসোর্ট এন্ড স্পা সেন্টার ২০২২ সালের ১৮ ডিসেম্বর লাইসেন্স প্রাপ্তির আবেদন করেন। নানা অনিয়মের কারণে তাদের লাইসেন্স নামঞ্জুর করা হয়েছে। রিসোর্টের লাইসেন্স না থাকায় প্রশাসনকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
২০২৫ সালের ১৪ জানুয়ারি ‘ফসলি জমি দখল করে ডেরা রিসোর্ট নির্মাণ, বিপাকে কৃষক’; ১৯ মার্চ ‘ছাড়পত্র ছাড়াই চলছে ডেরা রিসোর্ট, তদন্ত কমিটি গঠন’ শিরোনামে দুটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে রাইজিংবিডি। গত ১৩ সেপ্টেম্বর ‘কবরস্থানে হরিণের খামারসহ নানা অনিয়মের আখড়া ডেরা রিসোর্ট’ শিরোনামে প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয় ডেরার লাইসেন্স নামঞ্জুর করে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন।
সুশাসনের জন্য নাগরিক মানিকগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ইন্তাজ উদ্দিন বলেন, “অনলাইন নিউজ পোর্টাল রাইজিংবিডিতে ডেরা রিসোর্ট নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলোতে সাধারণ মানুষের ক্ষোভ ও ভোগান্তি তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদক অনুসন্ধান করে ডেরা রিসোর্টের নানা অনিয়ম তুলে এনেছেন। প্রতিবেদন প্রকাশের পর প্রশাসন লাইসেন্স বাতিল করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে এটি ভালো উদ্যোগ। তবে এসব নির্দেশনা কাগজে কলমের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে বাস্তবায়ন করাটাই বড় কাজ। নির্দেশনা বাস্তবায়ন হলে সুশাসন নিশ্চিত হবে।”
মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. মানোয়ার হোসেন মোল্লা বলেন, “মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার কপি পেয়েছি। সে অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
ডেরা রিসোর্ট এন্ড স্পা সেন্টারের ব্যবস্থাপক ওমর ফারুক বলেন, “লাইসেন্সের বিষয়ে কোন নোটিশ এখনও পাইনি আমরা। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার বিষয়েও জানা নেই। যদি লাইসেন্স বাতিল করে থাকে, তাহলে আমরা আইনিভাবে বিষয়টি সমাধান করব।”
এ বিষয়ে জানতে বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকালে এশিউর গ্রুপের অঙ্গসংগঠন ডেরা রিসোর্ট এন্ড স্পা সেন্টারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেখ সাদীর মোবাইলে ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
ঢাকা/চন্দন/এস